সন্ধ্যা নামতেই অন্ধকার নেমে আসে ভারত-ভুটান সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ শহর জয়গাঁয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সীমান্ত শহরের অধিকাংশ জায়গায় পথবাতি নেই। থানার সামনে নেতাজি সুভাষ রোডে কয়েকটি পথবাতি থাকলেও তার বেশিভাগই জ্বলে না। পাশাপাশি, নির্দিষ্ট ট্যাক্সি স্ট্যান্ড না থাকায় গোটা শহরের রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। সমস্যাগুলি নিয়ে একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দায় সারছেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান। ডুয়ার্সের কালচিনি ব্লকের জয়গাঁর জন্য আলাদা করে উন্নয়ন পর্ষদ গঠন হলেও শহরের কোনও উন্নয়ন হয়নি বলে কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে।
জয়গাঁ শহর হয়ে দেশ বিদেশের প্রচুর পর্যটক ভুটানে ঘুরতে যান। কালচিনি ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, “শুধুমাত্র নামেই জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। কোনও উন্নয়নের কাজ নেই। শহরের অধিংশ রাস্তায় পথবাতি নেই। ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের অভাবে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা কী কাজ করছেন তা মানুষ দেখছে।” |
তবে জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামী সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “জয়গাঁ শহর পঞ্চায়েত এলাকা হওয়ায় বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। তাছাড়া উন্নয়ন পর্ষদ এলাকা থেকে কোনও কর পায় না। সমস্ত কর স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত নেয়। পঞ্চায়েতের কাজে আমরা সহযোগিতা করতে পারি।” তিনি জানান, বছর দুয়েক আগে দায়িত্ব নেওয়ার পরে শহরের থানার সামনে পথবাতি বসিয়েছি। এর মাসিক বিল ১৫-১৯ হাজার টাকা দিতেও সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত জয়গাঁকে পুরসভায় রুপান্তরিত করার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানিয়েছি। শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের জমি দেখা হচ্ছে।
বাসিন্দারা জানান, শহরের বিভিন্ন মহাত্মা গাঁধী রোড, লিঙ্ক রোড ও নেতাজী সুভাষ রোডের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় কোনও পথবাতি নেই। থানার সামনে কিছু পথবাতি থাকলেও তার অধিকাংশ জ্বলে না। পাশাপাশি, নির্দিষ্ট কোনও স্ট্যান্ড না থাকায় রাস্তা দখল করে গাড়ি দাঁড় করানোর প্রবণতা দিনে দিনে বাড়ছে। এতে দেখা দিচ্ছে যানজট। জয়গাঁ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রামা শংকর গুপ্ত বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত প্রতি বছর কয়েক লক্ষ টাকা কর আদায় করে অথচ এই ধণের পরিষেবার বালাই নেই। সন্ধ্যা নামলেও শহর অন্ধকারে ডুবে যায়। এতে আইন শৃঙ্খলার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।” প্রায় ১ লক্ষ বাসিন্দার বসবাস এইঁ শহরটি জয়গাঁ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান নরেন্দ্র কুমার মাঝি বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে এলাকায় ট্যাক্সি স্ট্যান্ড এবং সুলভ শৌচাগারের জন্য জমি মিলছে না। আর রাস্তায় পথ বাতি বসানোর ও বিল দেওয়ার মত টাকা গ্রাম পঞ্চায়েতের নেই।” |