সেমিফাইনালের দু দিন আগেও ঠিক ছিল না ব্রাজিলের প্রথম দলে তাঁর নাম থাকবে কি না। কিন্তু বুধবার যখন অতিরিক্ত সময়ের দিকে ম্যাচ যাচ্ছিল, তখন তাঁর গোলেই বদলে গেল সমস্ত স্ক্রিপ্ট। ৪-২-৩-১ ছকে ডাবল পিভোটে খেললেও, ব্রাজিল প্রচারমাধ্যম তাঁকে বলছে ‘ডিভেন্সিভ গার্ড ও অ্যাটাকিং ফোর্সের মিশেল’। গোটা ব্রাজিল যখন নেইমার-ম্যানিয়ায় মত্ত, তখন জন্ম হল আর এক তারকার। পওলিনহো।
সামনের মরসুমে সম্ভবত টটেনহ্যামে খেলতে দেখা যাবে পওলিনহোকে। এমনকী এও শোনা যাচ্ছে, রিয়াল মাদ্রিদও আগ্রহ দেখিয়েছে পওলিনহোকে নিয়ে। কিন্তু তাও ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যম প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মতো কঠিন ফুটবল যুদ্ধে কি সফল হতে পারবেন এই ব্রাজিলীয় তারকা? কনফেড সেমিফাইনালের পর সেই প্রশ্নের জবাব যেন পাওয়া যাচ্ছে।
ব্রাজিল দলে তাঁর সতীর্থ ডেভিজ লুইজ বলেছেন, “পওলিনহো দুর্দান্ত ফুটবলার। রক্ষণ আর আক্রমণ, দুটোই ভাল ব্যালান্স করতে পারে ও। ইংল্যান্ডে অবশ্যই হিট হবে পওলিনহো।” লুইজ ছাড়াও পওলিনহোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন কোচ স্কোলারিও। “আমাদের দল তরুণ হতে পারে কিন্তু পওলিনহোর মতো ফুটবলারদের জন্য ধারাবাহিক ভাবে জয় পেয়ে চলেছি,” বলেন স্কোলারি। ব্রিটিশ প্রেসও এখন মেনে নিচ্ছে, সম্ভাব্য যে কুড়ি মিলিয়ন পাউন্ড পওলিনহোকে দিচ্ছে টটেনহ্যাম, তা জলে যাবে না।
|
গোল করে পওলিনহো। ছবি: রয়টার্স |
পাশাপাশি ব্রাজিল ফুটবলকে কুর্নিশ করছেন উরুগুয়ের কোচ। সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ার পর অস্কার তাবারেজ বলেছেন, “এ দিনের পরে আর কোনও প্রশ্ন থাকতে পারে না যে ব্রাজিল নিজেদের ফর্ম ফিরে পাচ্ছে। পরের বিশ্বকাপের জন্য একেবারে ঠিক রাস্তায় হাঁটছে ওরা,” বলেন তাবারেজ। তবে তিনি এও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুরুতে দিয়েগো ফোরলান পেনাল্টিটা না ফস্কালে খেলার ফল অন্য রকমও হতে পারত। তাবারেজের বক্তব্য, “ফোরলান গোল করলে শুরুতে ম্যাচের চিত্রটা অন্যরকম দাঁড়াত। পেনাল্টি মিস করার কারণে ব্রাজিলের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায়।” আর যিনি পেনাল্টিটা বাঁচিয়েছেন, সেই জুলিও সিজার কী বলছেন? ব্রাজিল গোলকিপার আবার ধন্যবাদ দিচ্ছেন সমর্থকদের। বলছেন, “সমর্থকদের চিৎকারই আমায় সাহায্য করল পেনাল্টি বাঁচাতে। এত দিন ব্রাজিল জার্সি গায়ে চাপিয়ে বুঝেছি যে কী ভাবে চাপ সামলাতে হয়।”
পওলিনহোর ৮৬ মিনিটের গোল ছাড়াও ম্যাচটা ‘স্মরণীয়’ হয়ে থাকল ব্রাজিল-উরুগুয়ে ফুটবলারদের বাগ্যুদ্ধে। ব্রাজিলের ‘পোস্টার বয়’ নেইমারের বিরুদ্ধে ডাইভ দেওয়ার ও সময় নষ্ট করার অভিযোগ আনলেন দিয়েগো লুগানো। যাঁর উত্তরে বার্সেলোনা তারকা বলেন, “যার মুখ আছে সে তো কথা বলবেই। কে কী বলল তাতে আমার কিছু এসে যায় না। আসল ব্যাপারটা হল ব্রাজিলকে ফাইনালে তোলা। সেই কাজটা ঠিকঠাক করতে পেরেছি,” বলেন নেইমার।
|
পওলিনহো |
• পুরো নাম হোসে পাওলো বেজেরা মাসিয়েল জুনিয়র
• জন্ম সাও পাওলো, ব্রাজিল
• বয়স ২৪,
ক্লাব কোরিন্থিয়ান্স
• অভিষেক আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে
২০১১ সুপারক্লাসিকোয়
• দেশের হয়ে ১৬ ম্যাচে ৫ গোল |
সাফল্য
• কোরিন্থিয়ান্সের হয়ে ২০১২ কোপা লিবারতাদোরেস চ্যাম্পিয়ন।
• চেলসিকে হারিয়ে ২০১২ ওয়ার্ল্ড ক্লাব কাপ চ্যাম্পিয়ন।
• ২০১১ মরসুমে সিলভার বল
(ব্রাজিল লিগের সেরা ফুটবলার) জয়ী। |
|