|
|
|
|
পঞ্চায়েতে ‘পরিবর্তনে’র ডাক মমতার
নিজস্ব সংবাদদাতা • খাকুড়দা |
পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরে ক্ষমতায় সিপিএম। আর সেটাই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় উন্নয়নের কাজে সবচেয়ে বড় বাধা বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাই নারায়ণগড়ের সভায় তিনি ‘পঞ্চায়েতে’ পরিবর্তনের ডাক দেন।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে সভা করছেন। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলে দু’টি সভা করার পরে এ দিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের খাসতালুকে এসে সিপিএমের তীব্র সমালোচনা করেন। |
জনতার দরবারে মমতা
খাকুড়দায় মুখ্যমন্ত্রী |
বক্তব্যের গোড়াতেই নাম না করে বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, “যে ভদ্রলোকবাবু (সূর্যকান্তবাবু), আমি আর নাম বলছি না। মুকুল নামটা বলেছে। আমি জিজ্ঞেস করি, শম্ভু হাঁসদা-সুনীল দাস-পরেশ প্রধান-উপেন খাটুয়া, এঁদের কারা খুন করেছে? কেন খুন করেছে? মনে রাখবেন, আপনারা ভুলে গেলেও আমি কিন্তু ভুলছি না, ভুলব না। এঁদের আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে। মানুষ ক্ষমা করবে না।” মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, “সেজেগুজে সকাল থেকে শুধু বড় বড় কথা। এলাকায় কাজ করেন না। গ্রামের মানুষের কাজ করেন না। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পরিষদ কার? গ্রামসভাগুলো কার? অধিকাংশ পঞ্চায়েত সমিতি কার? রাস্তা খারাপ? আপনারা করেননি কেন? আমার করতে দু’মিনিট সময় লাগবে। আপনারা হারবেন। আমি সব কাজ করে দেব।”
সিপিএম সন্ত্রাসে ইন্ধন জোগাচ্ছে বলেও এ দিন অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “সন্ত্রাসের বাতাস দিয়ে চলেছে। কুলোর বাতাস। ৩৫ বছর পর পরিবর্তন হল। একজনও থাকতে পারতেন না। হারিয়ে যেতেন। মনে রাখবেন, নির্বাচনের পর আমাদের কর্মীরা রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজিয়েছেন। লজ্জা করে না কমরেড? আমরা সরকারি দল বলে রাস্তায় নামি না। অবরোধ করি না। আমি শুধু সহ্য করছি। সব সহ্য করারও একটা সীমারেখা থাকে।” সিপিএম-মাওবাদী যোগের পুরনো অভিযোগও এ দিন তোলেন মমতা। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় বলেন, “আমায় খুন করবে? পরিকল্পনা করছো? আমায় খুন করা সহজ নয়। মাওবাদীদের সঙ্গে কানাকানি করার কী দরকার? নিজেরা খুন করে মাওবাদীদের নামে দোষ দাও। সাহস থাকলে নারায়ণগড়ের এই মাঠে আসুন। বন্দুক নিয়েই আসুন। আমি দাঁড়িয়ে থাকব মাইক নিয়ে!” |
|
নানা ছবি: বুধবার নারায়ণগড়ের খাকুড়দায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় উৎসাহীদের ভিড়। |
বন্যাপ্রবণ এই জেলায় তাঁর সরকারের আমলেই কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নদী সংস্কার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে বলে এ দিন জানান মমতা। এই প্রসঙ্গেও বিগত বাম সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। মমতার কথায়, “আগে নির্বাচন এলেই মাস্টার প্ল্যানের কথা বলত। আমরা কিন্তু কাজ করছি। সারা বছর বসে থাকব, আর ভোটের সময় কথা বলব, আমি তেমন মানুষ নই।” তবে কেলেঘাই প্রকল্প সময়সাপেক্ষ বলে এ দিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মানুষের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, “আমাকে ভুল বুঝবেন না। কষ্টের মধ্যে দাঁড়িয়ে কাজ করছি।” যে সব প্রকল্পে কাজের গতি আশানুরূপ নয়, সেগুলি সিপিএমের ঠিকাদারদের ঘাড়ে ঠেলেছেন মমতা। তিনি বলেন, “সিপিএমের দালাল ঠিকাদাররা কাজ করেন না। ফেলে রাখেন। তাই আমি ই-টেন্ডার করেছি। ই গভর্নন্যান্স।”
টানা দেড় ঘণ্টার বক্তব্যে ঘুরেফিরে উন্নয়ন আর সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ তুলে মমতার আর্জি, “ওদের (বিরোধীদের) একটি ভোট দেওয়া মানে তৃণমূলকে হারিয়ে দেওয়া। উন্নয়ন স্তব্ধ করে দেওয়া। আপনারা পরিবর্তন করুন জেলা জুড়ে।”
|
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
|
|
|
|
|