ভোটের কাজের প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ না দেওয়ার জন্য ছ’শো সরকারি কর্মী-আধিকারিককে শো-কজ করেছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন তাঁদের চিঠি পাঠাচ্ছেন প্রতিটি মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটরা। চিঠির উত্তর না পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মহকুমায় ১৪০ জন, কালনায় প্রায় ৮০ জন, বর্ধমানের দুই মহকুমা ও শিল্পাঞ্চল এলাকা মিলিয়ে প্রায় চারশো জনকে শো-কজের চিঠি ধরানো হয়েছে। শিবিরে যোগ দেওয়ার জন্য ডাক পাওয়া এই সব কর্মীরা শিবিরে না আসার কারণ হিসেবে চিঠিতে পরিবারের কোনও সদস্যের অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন। অনেকে আবার জানিয়েছেন, প্রিসাইডিং অফিসারের বদলে ফার্স্ট পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পাওয়ায় শিবিরে যোগ দেননি তাঁরা।
যেমন, কাটোয়ার কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনের এক প্রবীণ শিক্ষক শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়েছেন। তাঁকে শো-কজ করেছে নির্বাচন কমিশন। কাটোয়া কলেজের এক শিক্ষক আবার তাঁকে প্রথম পোলিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়ায় মহকুমা পোলিং পার্সোনেল (পিপি) সেল প্রশিক্ষণ শিবিরে যাননি। নির্বাচন কমিশনের শো-কজের চিঠির জবাবে এ কথাই জানিয়েছেন তিনি। পিপি সেল বুধবার রাতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার কথাও ভেবেছিল। তবে ওই শিক্ষক পরে ভুল স্বীকার করে চিঠি দিলে বিষয়টি মিটে যায়।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক কর্তা বলেন, “কে প্রথম পোলিং অফিসার বা প্রিসাইডিং অফিসার হবেন, সে ব্যাপারে কোনও নিয়ম নেই। তাই এই ধরনের অজুহাত দিয়ে কেউ ভোটের কাজে না গেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মহকুমা-সহ নানা এলাকায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সেই সময়ে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, রির্টানিং অফিসারের কাছে দরখাস্ত করলে সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হবে। এ ভাবে অনেক প্রথম পোলিং অফিসারকে প্রিসাইডিং অফিসার পদে উন্নীতও করা হয়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা এক জেলা প্রশাসনের আধিকারিক বলেন, ‘‘বেশির ভাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণ শিবিরে অনুপস্থিত থাকছেন। আমরা প্রত্যেককে কাছে চিঠি দিয়ে কারণ দর্শাতে বলেছি।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শো-কজের জবাব না দিলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। অনেকে দ্বিতীয় প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে।
বর্ধমানে ৪৭৯৪টি বুথ রয়েছে। প্রতি বুথে প্রিসাইডিং, ফার্স্ট পোলিং অফিসার-সহ পাঁচ জন করে কর্মী দরকার। সেই হিসেবে মোট কর্মীর সংখ্যা ২৩৯৭০ জন। এর সঙ্গে আরও ২৪০০ জন অতিরিক্ত কর্মী প্রয়োজন। কাজেই ৬০০ কর্মী অনুপস্থিত থাকলেও ভোট প্রক্রিয়ায় কোনও অসুবিধা হবে না বলে দাবি করা হয়েছে বর্ধমান জেলা প্রশাসনের তরফে। |