|
|
|
|
অভিযোগ বিরোধী বিধায়কদের |
ফলক লাগানোয় আমরা-ওরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকায় কোনও প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সামনে ফলক লাগানোর কথা। যেখানে লেখা থাকে, কোন বিধায়কের তহবিলের টাকায় কাজ হয়েছে। অভিযোগ, এ ক্ষেত্রেও ‘আমরা-ওরা’র বিভাজন করা হচ্ছে। তৃণমূল বিধায়কদের নির্বাচনী এলাকায় নিয়ম মতো ফলক লাগানো হলেও বিরোধী বিধায়কদের ক্ষেত্রে তা লাগানো হচ্ছে না। কোথাও দায়সারা ভাবে ছোট একটি বোর্ডে শুধু লেখা হচ্ছে ‘বিইইউপি’, অর্থাৎ বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প।
এই নিয়ে সরব হয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিএম বিধায়কেরা। কেশপুরের বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই বলেন, “জানি না কেন এমন বিভাজন। বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলের অর্থে কাজ হলে প্রকল্পের সামনে ফলক বা বোর্ড লাগানোর কথা। আমার নির্বাচনী এলাকায় তা হচ্ছে না।” তাঁর বক্তব্য, “এই তহবিলের অর্থে কেশপুর কলেজের সামনে যাত্রী প্রতীক্ষালয় হয়েছে। সেখানে এমন ফলক নেই। এমন অজস্র উদাহরণ রয়েছে।” একই নালিশ বিনপুরের সিপিএম বিধায়ক দিবাকর হাঁসদার। তিনি বলেন, “বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলের অর্থে আমার নির্বাচনী এলাকার শিলদায় একটি রাস্তা হয়েছে। সেখানে কোনও ফলক বা বোর্ড চোখে পড়েনি। বিষয়টি যেখানে জানানোর জানিয়েছি। কাজ হয়নি।” অথচ মেদিনীপুর মেডিক্যালে নতুন ভবন থেকে পুরনো ভবন যাওয়ার পথে যে ‘শেড’ তৈরি হয়েছে, সেখানে বড় বোর্ডে লেখা রয়েছে, বিধায়ক মৃগেন মাইতির নাম। |
 |
কেশপুরে প্রতীক্ষালয়ে ফলক নেই |
অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান মৃগেনবাবু। তিনি উল্টে সিপিএম বিধায়কদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন। মৃগেনবাবুর কথায়, “শুধু অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে লাভ নেই। যদি কোনও প্রকল্পের সামনে ফলক না থাকে, তাহলে বিধায়কেরা খোঁজ নিন কেন নেই। কাজটা সম্পূর্ণ হয়েছে কি না। বিধায়কদেরও একটা উদ্যোগ থাকে।” জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “অভিযোগ আসেনি। তবে খোঁজ নিচ্ছি।” এখন বিধায়কদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলে বছরে ৬০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ হয়। বরাদ্দ অর্থের ৩০ শতাংশ খরচ হলে পরের ধাপের টাকা পাওয়া যায়। জানা গিয়েছে, এই তহবিলে গত দুই অর্থবর্ষে ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা পেয়েছে জেলা। তার মধ্যে ২০ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার মোট ৮৮২টি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়। ৭১৪টি প্রকল্প মঞ্জুর হয়। এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩৬৫টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, কাজ স্বাভাবিক গতিতেই এগোচ্ছে। খরচের হিসেব আসতে কিছুটা দেরি হয়। ফলে খাতায়কলমে বাস্তবের খরচের সঙ্গে হিসেবে কিছুটা ফারাক থাকেই। |
 |
মেদিনীপুর মেডিক্যালে শেডের পাশেই বিধায়কের নাম। |
রাজনীতির সূত্রে ‘আমরা-ওরা’র বিভাজন এ রাজ্যে নতুন নয়। ক্ষেত্র বিশেষে বাম আমল থেকেই এই ধারা চলছে। বামেরা ক্ষমতায় থাকার সময় ছাত্র-যুব উৎসব নিয়ে এই বিতর্ক হয়েছে। রাজ্যে পালাবদলের পর অবস্থা পাল্টাবে আশা করেছিলেন অনেকে। তা হয়নি। উল্টে দেখা গিয়েছে, একের পর এক অনুষ্ঠানে বিরোধী জনপ্রতিনিধিরা ব্রাত্য থেকে গিয়েছেন। এ বার বিধায়ক তহবিলের টাকা খরচের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটল। পরিস্থিতি দেখে এক সিপিএম বিধায়কের কটাক্ষ, “সবেতেই দলবাজি চলছে। মানুষ সব দেখছেন। জবাব তাঁরাই দেবেন।”
|
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
|
|
 |
|
|