এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের ২৬টি আসনে কংগ্রেস প্রার্থীদের জয়ী করার আহ্বান জানালেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। রবিবার দুপুরে কালিয়াগঞ্জ ব্লকের হলদিবাড়ি এলাকায় একটি জনসভায় যোগ দিয়ে ওই আহ্বান জানান দীপাদেবী।
তিনি বলেন, “গত দুবছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক স্বার্থে এইমসের ধাঁচে হাসপাতালের তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ করছেন না। বিষয়টি আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে বোঝাতে পেরেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ জমি কেনার জন্য ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছেন। হাসপাতাল তৈরির স্বার্থে জেলা পরিষদ কংগ্রেসের দখলে থাকা অত্যন্ত জরুরি।” এর পরে সভার যোগ দেওয়া বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনারা জেলা পরিষদ নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীদের জয়ী করুন। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, হাসপাতাল তৈরি করে দেখিয়ে দেব।”
এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, “কংগ্রেস পাঁচ বছরে জেলা পরিষদে একাধিক দুর্নীতির পাশাপাশি ঠিকাদারি রাজ চালিয়েছে। দীপা দাশমুন্সিরা তা বুঝতে পেরে হাসপাতাল তৈরিকে হাতিয়ার করে মানুষকে বোকা বানানোর রাজনীতি শুরু করেছে। তৃণমূল জেলা পরিষদের ক্ষমতায় এলে সরকারি জমিতে হাসপাতাল তৈরি করে দেখিয়ে দেবে। মুখ্যমন্ত্রী কৃষিজমি নষ্ট করে হাসপাতাল তৈরির পক্ষে নন।”
কংগ্রেস সাংসদ দীপাদেবীর অভিযোগ, “জেলার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে কংগ্রেস প্রার্থীদের হারাতে তৃণমূল ও সিপিএম ও মহাজোট করেছে।” জেলার বিভিন্ন উন্নয়নে রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ অসুস্থ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ভূমিকার কথা উল্লেখ করে দীপাদেবীর জানান, প্রিয়বাবু সাংসদ থাকাকালীন প্রিয়বাবুর উদ্যোগে কেন্দ্রীয় সরকার জেলা পরিষদকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে প্রায় ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। গত চার বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দে জেলা পরিষদ ৩৬টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ করেছে।
এদিন সভায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতা নির্বেদ রায়, জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত, কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায় মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কাজের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন। নির্বেদবাবুর অভিযোগ, “সারদাকান্ডে মুখ্যমন্ত্রী-সহ তৃণমূলের ৯০ শতাংশ নেতানেত্রী বিভিন্ন সময়ে সারদা কর্তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। কেউ তাঁর ভুল ধরিয়ে দিলেই মাওবাদীর তকমা পাচ্ছেন।” এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি অমলবাবুর দাবি, “নির্বেদবাবু প্রতিটি জনসভা ও সংবাদ চ্যানেলে বার বার একই মিথ্যা কথা বলেন। তাঁর কথার গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।” |