নির্বাচনের মুখে তৃণমূলের এক বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্যা নলকূপ বিলি করছেন অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের ভেউর গ্রামের বাসিন্দারা।
ঘটনাস্থলে যান কালিয়াগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর বাবলু শীল। সেখান থেকে ফেরার পথে তরঙ্গপুর বাজারে গাড়ি আটকে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। অভিযোগের তির জেলা পরিষদে তৃণমূলের প্রার্থী দধিমোহন দেবশর্মার বিরুদ্ধে।
শনিবার রাত ১২টা নাগাদ প্রহৃত হন বাবলুবাবু। তারপরে দধিমোহনবাবু এবং আরও অন্তত ৩০ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে পুলিশকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দধিমোহনবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, “পুলিশের উপর কোনও হামলাই হয়নি। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।” বাবলুবাবু জানান, এক জন হোমগার্ড এবং ৩ জন কনস্টেবলকে নিয়ে তিনি ঘটনাস্থল থেকে জিপে চেপে থানায় ফিরঠিলেন। তখন তরঙ্গপুর বাজার এলাকায় দধিমোহনবাবুর নেতৃত্বে গাড়ি থামিয়ে জানালা দিয়ে তাঁকে ঘুষি, চড় মারা হয়। তিনি বলেন, “আমার পোশাক ধরে টেনে নামাতে চেষ্টা করে। চালকের তৎপরতায় কোনও রকমে থানায় ফিরে আসি। অন্ধকার থাকায় দধিমোহনবাবু ছাড়া কাউকে চিনতে পারিনি।” বাবলুবাবুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে অভিযুক্তদের কাউকেই রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি।
তৃণমূলের ওই বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্যা কেদো দেবশর্মা দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে নলকূপ বিলির মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি থেকে কোনও নলকূপ পুলিশ সেই রাতে উদ্ধারও করতে পারেনি। তরঙ্গপুর এলাকারই বাসিন্দা তথা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ জানান, নলকূপ বিলির অভিযোগ মিথ্যা। যদি তা সত্যি হত, তা হলে কেদোদেবীর বাড়ি থেকে পুলিশ কেন কোনও নলকূপ উদ্ধার করতে পারল না? তাঁর বক্তব্য, “কংগ্রেস, সিপিএমের লোকজন মিলে এসব অভিযোগ তুলছে।”
জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তর অবশ্য পাল্টা দাবি, “তৃণমূলের নেত্রী এবং নেতারা নলকূপ বিলি, পুলিশকে মারধর করে ফেঁসে যাওয়ায় এখন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অপূর্ব পাল জানান, অন্যায় করে ধরা পড়ে গিয়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলাটা তৃণমূল নেতাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। |