বাড়ির পরিচারিকাকে ভয় দেখিয়ে ৪ মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ি মহকুমা পরিবহণ বিভাগের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে। রবিবার শিলিগুড়ি মহিলা থানায় ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন পরিচারিকা। অভিযোগ, হাকিমপাড়ার ওই আধিকারিকের বাড়িতে কাজ করতেন ওই পরিচারিকা। মাস চারেক ধরে ধর্ষণের কারণে ওই পরিচারিকা অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়েন। এর পরেই ওই আধিকারিক জোর করে গর্ভপাত করান। এমনকী মেরে ফেলার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। তা ছাড়া কয়েক মাস ধরে পরিচারিকার উপর যৌন এবং মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগও রয়েছে ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে সন্ধ্যেতেই পুলিশ আধিকারিকের বাড়িতে যায়। হাকিমপাড়ায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখানে থাকেন ওই আধিকারিক। পুলিশের দাবি, ওই বাড়িতে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেছেন, “এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।” অ্যাসিস্ট্যান্ট ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ জানান, তিনি খোঁজ নিয়ে দেখছেন। পরে ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
অভিযোগকারিণী মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছে দার্জিলিং জেলা লিগাল এইড ফোরাম। রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্য জ্যোৎস্না অগ্রবাল পুলিশে ফোন করে মহিলা যাতে ন্যায় বিচার পান তা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলেছেন। মহকুমা পরিবহণ আধিকারিক (এআরটিও) রাজেন সুনদাস বলেছেন, “যে ব্যক্তির নামে অভিযোগ হয়েছে তিনি আমার দফতরে কাজ করেন। তবে কী ঘটেছে সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।”
মহিলা কমিশনের সদস্য জ্যোৎস্না অগ্রবাল বলেন, “অভিযোগ গুরুতর। পরিচারিকা ওই মহিলা যাতে ন্যায় বিচার পান তাই অভিযোগ খতিয়ে দেখে সে বিষয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি।”
লিগাল এইড ফোরামের সদস্যরা এ দিন ন্যায় বিচারের দাবিতে পুলিশের কাছে যান। সংগঠনের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন, “পরিচারিকা ওই আধিকারিকের বাড়িতে গত কয়েক বছর ধরে কাজ করতেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই বাড়িতে অধিকাংশ সময় একাই থাকতেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তাঁকে প্রথমবার ধর্ষণ করেন ওই আধিকারিক। তার পর থেকে প্রায়ই তার উপর যৌন নির্যাতন চালাতেন বলে অভিযোগ।” এত দিন তিনি অভিযোগ করেন নি কেন? সংগঠনের সদস্যদের দাবি, ওই মহিলা তাদের জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি নানা ভাবে তাঁকে ভয় দেখাতেন। পরে সংগঠনের কাছে মহিলা বিস্তারিত জানান। এর পর ওই আধিকারিক সংগঠনের সদস্যদের কাছে গিয়ে বিষয়টি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। সংগঠনের সদস্যরা অবশ্য মহিলার পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেন। |