|
|
|
|
সঙ্কট মেদিনীপুর শহরে |
বেতন পাচ্ছেন না রাঁধুনিরা বন্ধের মুখে মিড ডে মিল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। তা জেলায় এসেওছে। তা-ও রাঁধুনিরা চার মাস বেতন পাচ্ছেন না। ফলে, মেদিনীপুর শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলে মিড-ডে মিল বন্ধ হওয়ার মুখে। বেতন না পেয়ে তিতিবিরক্ত রাঁধুনিরা কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছেন। স্কুলের তহবিল থেকে বেতন দেওয়া সম্ভব নয় বলে নিরুপায় স্কুল কর্তৃপক্ষও।
কিন্তু এমন সমস্যা হল কেন? আগে নগদ টাকা দেওয়া হত হাতে-হাতে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে বেতন দিতে গিয়েই যত সমস্যা। কিছু স্কুল ভুল অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছিল। আবার কিছু স্কুলের যে নামে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেই নামই ভুল দিয়েছে। পুরো নাম লেখেনি। ফলে, অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। মেদিনীপুর পুরসভায় মিড-ডে মিল প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন সদানন্দ দে। তাঁর কথায়, “কিছু ভুলের জন্যই এই সমস্যা। ভুলগুলো সংশোধন করা হচ্ছে। স্কুলগুলোর কাছে ব্যাঙ্কের পাশ বইয়ের ফোটোকপিও চাওয়া হয়েছে। ভুল সংশোধন হয়ে গেলে আর এমন সমস্যা হবে না।”
গরিব ছাত্রছাত্রীদের স্কুলমুখী করতে মিড-ডে মিল প্রকল্প চালু করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু গ্রামে নয়, শহরের স্কুলগুলোতেও এই প্রকল্প চালু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ১০ লক্ষ ছাত্রছাত্রী এই প্রকল্পের সুবিধে পায়। মেদিনীপুর শহরে সব মিলিয়ে ১২৮টি স্কুলে প্রকল্প চালু রয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, অধিকাংশ স্কুলেই স্থানীয় স্বসহায়ক দলের সদস্যরা রান্নার কাজের সঙ্গে যুক্ত। কিছু স্কুল রয়েছে, যেখানে এলাকার গরিব মহিলারা রান্না করেন। রাঁধুনিরা চার মাস ধরে বেতন না-পাওয়ায় শহরের যে স্কুলগুলোয় মিড-ডে মিল বন্ধের মুখে, তার মধ্যে রয়েছে অলিগঞ্জ গার্লস হাইস্কুল। এখানে স্বসহায়ক দলের ৭ জন মহিলা রান্নার কাজের সঙ্গে যুক্ত। মাসের শেষে তাঁরা এক হাজার টাকা করে পান। গত চার মাস ধরে তা পাচ্ছেন না। পরিস্থিতি দেখে স্কুল ফান্ড থেকে তাঁদের এক মাসের বেতন দেওয়া হয়েছিল। তারপর আর তা সম্ভব হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এ ভাবে তো প্রতি মাসে স্কুল ফান্ড থেকে বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। দ্রুত সমস্যার সমাধান হওয়া জরুরি।
রাঁধুনিরাও স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন, দ্রুত সমস্যা না মিটলে তাঁদের পক্ষেও রান্না করা সম্ভব নয়। ফলে, সঙ্কটে পড়েছে স্কুলই। সমস্যা মানছেন অলিগঞ্জ গার্লসের পরিচালন কমিটির সম্পাদক সুব্রত সরকার। তাঁর কথায়, “বেতন নিয়ে একটা সমস্যা রয়েছে। পরিচালন কমিটির বৈঠকে আলোচনা করেছি। পুরসভাকেও জানিয়েছি। পুরসভা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখছে।”
পুরসভা সূত্রে খবর, গত সপ্তাহেই মিড-ডে মিল প্রকল্পের রাঁধুনিদের জন্য জানুয়ারি থেকে এপ্রিলএকসঙ্গে এই চার মাসের বেতন বরাদ্দ হয়েছে। তা স্বসহায়ক দলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ার কথা। এক সময় ঠিক হয়েছিল, রাঁধুনিরা প্রত্যেকে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলবেন। টাকা সরাসরি তাঁদের অ্যাকাউন্টেই জমা পড়বে। সেই সময় স্বসহায়ক দলের সদস্যাদের কাছ থেকে অ্যাকাউন্ট নম্বরও নেওয়া হয়। তারপর তা চালু করতে নানা সমস্যা হয়।
তবে, সব স্কুলে যে এই সমস্যা রয়েছে, তা নয়। পুরসভার দাবি, অধিকাংশ স্কুলেই মিড ডে মিল প্রকল্প ঠিক ভাবে চলছে। যেমন, কলেজিয়েট গার্লস হাইস্কুল। গত বছর জুলাই মাসে শহরের এই স্কুলে মিড ডে মিল চালু হয়েছিল। কলেজিয়েট গার্লসের পরিচালন কমিটির সম্পাদক মধুসূদন গাঁতাইত বলেন, “আমাদের স্কুলে এমন কোনও সমস্যা নেই। পুরসভা যা যা তথ্য চেয়েছে, আমরা সবই দিয়েছি। এখনও পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই চলছে।” |
|
|
|
|
|