|
|
|
|
খরার প্রকোপে বরাক উপত্যকা
উত্তম সাহা • শিলচর |
দাবদাহে পুড়ছে বরাক উপত্যকা। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঘুরছে ৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রাতেও তা ২৮ ডিগ্রির নীচে নামছে না। দিনপনেরো ধরে পরিস্থিতি রয়েছে একইরকম। আবহাওয়া দফতর প্রতিদিন বৃষ্টির আশ্বাস দিলেও, মেঘের দেখা নেই। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রচণ্ড গরমে গত সপ্তাহে উপত্যকায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্র, শনিবার স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন কাছাড় এবং করিমগঞ্জের জেলাশাসক। হাইলাকান্দিতে স্কুল শুরুর সময় এগিয়ে আনা হয়েছে।
গরমের কোপ পড়েছে খেত, চায়ের বাগানেও। তাপে মাটি ফেটে চৌচির। শালি ধানের চারা রোপণের সময় চলে যাচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টি না-হওয়ায় মাঠ তৈরি করা যাচ্ছে না। দু-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টি না-হলে শালি চাষ করা যাবে কি না তা নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। একই কারণে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছে চা উৎপাদক গোষ্ঠীও। ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া’র (টাই)-র বরাক ভ্যালি শাখার সচিব কল্যাণ মিত্র জানান, ‘‘এখনই উৎপাদন ও পাতা তোলার সময়। কিন্তু গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। অল্প কাজ করেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন শ্রমিকরা। লোকসানের আশঙ্কা দিনদিন বাড়ছে।’’
আবহাওয়া অনুকূল থাকায় গত দু’বছর ভালোই উৎপাদন হয়েছিল। দামও উঠেছিল। ২০১১ সালে বরাকে চায়ের মোট উৎপাদন ছিল ৫ কোটি কিলোগ্রাম। গত বছর ৫.৩ কোটি কিলোগ্রাম। কিন্তু এ বার উৎপাদন গত বারের তুলনায় ৩৫% কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’ (আইটিএ)-এর সচিব সুমন্ত গুহঠাকুরতার। বললেন, “নভেম্বর থেকে এপ্রিলের শেষ পর্যন্তও বৃষ্টি ছিল না। মে-তে প্রচণ্ড বৃষ্টি হল। জুন থেকে খরা। পোকা-মাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। লালচে পাতায় চায়ের গুণমানও কমবে। ফলে দামও পাওয়া যাবে না।”
কিন্তু এখন তো বর্ষা যে কোনও সময় শুরু হয়ে যেতে পারে। ‘টাই’ কর্তাদের হিসেব, এপ্রিল পর্যন্ত বৃষ্টি না-হওয়ায় সর্বত্র উৎপাদন কমেছে। মে মাসে মোটামুটি বৃষ্টি হয়। কিন্তু জুনের খরায় পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে, এখন একনাগাড়ে বৃষ্টি হলেও লোকসান কমানো সম্ভব হবে না। ভুগছে শৈলশহর হাফলঙও। ঘরে ঘরে অসুখ। বেশি সমস্যা শিশু ও বৃদ্ধদের। ফাঁকা পড়ে থাকা মহকুমা হাসপাতালে এখন স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আর ক’দিন এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে পানীয় জলের সঙ্কটও মারাত্মক হয়ে উঠবে। |
|
|
|
|
|