দুই সাগরে দড়ি টানাটানি, বৃষ্টি ঝুঁকে বাংলার দিকেই
যেন ঠিক দড়ি টানাটানির খেলা! বঙ্গোপসাগর আর আরব সাগরের মধ্যে। এবং তার মধ্যেই আজ, সোমবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।
আরব সাগরে তৈরি হওয়া একটি নিম্নচাপের জেরে ১৬ জুন নির্দিষ্ট সময়ের এক মাস আগে উত্তর-পশ্চিম ভারতে পৌঁছে গিয়েছিল বর্ষা। তার এক দিন আগেই সে পৌঁছয় উত্তর ভারতে। আগাম বর্ষা এবং অতিবৃষ্টির জেরে ইতিমধ্যেই মহাবিপর্যয় ঘটে গিয়েছে উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলে।
আবহবিদেরা জানান, সাত দিন আগে ওই নিম্নচাপের দাপটে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে বর্ষার তীব্রতা যেমন বেড়েছিল, তেমনই পূর্ব ভারতে দুর্বল হয়ে পড়েছিল বর্ষা। কারণ, সেই সময় বঙ্গোপসাগরে কোনও ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ ছিল না। তবে রবিবার বাংলা-ওড়িশা উপকূলে অন্য একটি নিম্নচাপ হাজির হওয়ার ফলে পূর্ব ভারতে বর্ষা ফের সক্রিয় হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
আবহবিদেরা জানান, ভারতীয় ভূখণ্ডে বর্ষার তীব্রতা নির্ভর করে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপের উপরে। যে-উপকূলে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত থাকে, সে-দিকেই তেড়েফুঁড়ে নামে বর্ষা। আবহবিজ্ঞানীদের মতে, এ বছর যে-ভাবে খুব কাছাকাছি সময়ে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে, তাতে পূর্ব বা পশ্চিম, কোনও এক দিকে বর্ষার তীব্রতা খুব বেশি দিন স্থায়ী হচ্ছে না। আর এটাকেই ‘দড়ি টানাটানির খেলা’ বলতে চাইছেন আবহবিজ্ঞানীরা।
রবিবার বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতি ঠিক কী রকম ছিল?
আবহবিদেরা জানান, কয়েক দিন আগে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছিল বঙ্গোপসাগরে। পরে সেটি শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়। এ দিন উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে তাঁরা জানান, নিম্নচাপটি রয়েছে বাংলা-ওড়িশা উপকূলে। তার প্রভাবেই আজ, সোমবার দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানায়, নিম্নচাপের জেরে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। রবিবার সন্ধ্যায় মহানগরের কোনও কোনও এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। এর পাশাপাশি মৌসুমি অক্ষরেখার একটি মুখ উত্তর-পূর্বে থাকার ফলে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কোচবিহারে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বস্তুত এ দিন তার কিছুটা ইঙ্গিতও মিলেছে।
হাওয়া অফিসের এক বিজ্ঞানী জানান, গত কয়েক দিন ধরে মৌসুমি অক্ষরেখা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বিস্তৃত থাকার ফলে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হচ্ছিল। তবে তা দক্ষিণবঙ্গের বিস্তৃত এলাকায় হচ্ছিল না। কেন? আবহবিদদের মতে, মৌসুমি অক্ষরেখা থাকলেও বর্ষা জোরালো ছিল না। ফলে বন্ধ ছিল পুবালি হাওয়াও। তা হলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতার দক্ষিণ অংশে জোরদার বৃষ্টি হচ্ছিল কেন? এক আবহবিদের কথায়, “বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প কলকাতা ও সংলগ্ন দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে ঢুকছিল। উত্তর ভারত থেকে আসছিল ঠান্ডা হাওয়া। এর ফলে উল্লম্ব মেঘ তৈরি হচ্ছিল। সেই মেঘ অল্প কিছু এলাকার উপরে ভেঙে পড়ায় কোনও কোনও এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল।”
গত বৃহস্পতিবার এমনটাই হয়েছিল মহানগরের একাংশে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, সে-দিন এক ঘণ্টায় প্রায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এ বার নিম্নচাপের জেরে সেই পরিস্থিতির কিছুটা বদল হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.