শনিবার রাতে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মুচিপাড়া থানা এলাকা। অভিযোগ, ওই সংঘর্ষে চলেছে কয়েক রাউন্ড গুলিও।
পুলিশ জানায়, দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। শিয়ালদহ এলাকার তৃণমূল নেতা সজল ঘোষের অভিযোগ, তাঁকে লক্ষ করে যারা গুলি চালিয়েছে, তাদের পিছনে রয়েছে তৃণমূলেরই একটি গোষ্ঠী। অন্য দিকে, সেই গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে সঞ্জু সাউ-এর পাল্টা অভিযোগ, সজল ঘোষের নেতৃত্বেই তাদের উপরে হামলা হয়েছে। এলাকাবাসীর বক্তব্য, সঞ্জু এলাকার তৃণমূল বিধায়ক শিখা মিত্রের শিবিরের বলে পরিচিত। রবিবার সন্ধ্যায় সঞ্জুর সঙ্গীরা শিয়ালদহ এলাকায় তৃণমূলের পতাকা নিয়ে সজল ঘোষের গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল করেন। পরে মুচিপাড়ায় থানায় স্মারকলিপিও দেন তাঁরা।
শিখাদেবীর সঙ্গে সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, যারা গুলি চালিয়েছে, তারা দুষ্কৃতী। তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিক পুলিশ। আমার পক্ষের কেউ যুক্ত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।” |
গণ্ডগোলের পরে এলাকায় তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর মিছিল। রবিবার।—নিজস্ব চিত্র।
|
পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে ৬ রাউন্ডের মতো গুলি চলেছে। তবে কেউ হতাহত হননি বলে পুলিশের দাবি। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটি খালি কাতুর্জের খোলও মিলেছে। তবে এই ঘটনায় রবিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত এগারোটা নাগাদ সজল ঘোষ বাড়ি ফিরছিলেন। মুচিপাড়া এলাকার সুরি লেনে স্থানীয় কিছু যুবকের সঙ্গে বচসা শুরু হয় তাঁর। অভিযোগ, এই সময়ে সজল ক্রিক লেনের বাসিন্দা সঞ্জু ও আয়ুষকে মারধর করেন। তার পরে মুচিপাড়া থানার পাশে হুজরিমল লেনের বাড়িতে ফিরে যান সজল। পুলিশ জানায়, রাত সওয়া এগারোটা নাগাদ তৃণমূলের ওই গোষ্ঠীর ছেলেরা সজলের বাড়িতে প্রতিবাদ জানাতে যান। এর পরেই দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ জানায়, উভয় পক্ষই অভিযোগ করেছে, সংঘর্ষ চলাকালীন প্রায় ৬ রাউন্ড গুলি চলেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতেই সজল থানায় গিয়ে কানা বুবাই, কেলো, আয়ুষ, ড্রাকুলা-সহ আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। রবিবার সজল অভিযোগ করেন, “শনিবার রাতে ওরা আমার বাড়ির সামনে এসে প্রথমে আমার বন্ধুদের মারধর করে। পরে আমাকে লক্ষ করে গুলি চালায় ওই দুষ্কৃতীরা। আমি কোলে মার্কেটের দিকে পালিয়ে যাই।” তাঁর আরও অভিযোগ, দলের একাংশই ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। সজলের অভিযোগ, “শিয়ালদহ এলাকায় দলের একটা গোষ্ঠী তৃণমূলের ঝান্ডা কাঁধে নিয়ে দুর্নীতি করছে। ওই গোষ্ঠীই শনিবার আমার উপরে হামলা চালিয়েছে।”
সজলের অভিযোগের আঙুল যে গোষ্ঠীর দিকে, তাদের তরফে সঞ্জু সাউ রবিবার সকালে মুচিপাড়া থানায় সজল ঘোষের বিরুদ্ধে গুলি করে খুনের চেষ্টার পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগ, সজলই প্রথমে তাঁদের মারধর করেছেন। এর প্রতিবাদ করতেই তাঁরা হুজরিমল লেনে সজলের বাড়ি গিয়েছিলেন। ওই সময়েও সজলই তাঁদের লক্ষ করে গুলি চালিয়েছেন। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে দু’টি পৃথক খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
|