তারাবাজি
পরদায় না হয় একটু কম চুমুই খেলাম

গত সপ্তাহে মুম্বইতে ‘ঘনচক্কর’য়ের প্রোমোশনটাই তো ভেস্তে গেল।
হ্যাঁ, যা বৃষ্টি হচ্ছিল সে দিন। কেউ তো বেরোতেই পারেনি। আমিও বাড়িতেই বসে। কলকাতাতেও তো আজ খুব বৃষ্টি হচ্ছে। হোটেলে ঢোকার সময় তাই ভাবছিলাম, এখানেও না মুম্বইয়ের মতো হয়!

তবে মুম্বইয়ের বৃষ্টিটা ‘শাপে বর’ ছিল বলুন। ফাদার্স ডে আয়ানের সঙ্গে কাটাতে পারলেন।
হ্যাঁ, সে দিক থেকে ভালই হয়েছে। আয়ান ওয়াজ ভেরি এক্সাইটেড। সাধারণত ও ওর সিনিয়র কিন্ডারগার্টেন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমিও আমার শ্যুটিং নিয়ে ব্যস্ত। রবিবার অনেকটা সময় একসঙ্গে কাটানো গেল। আমাকে একটা পেন্টিংও গিফ্ট দিল। নিজের আঁকা। (হেসে) শর্ট অব অ্যাবস্ট্র্যাক্ট পেন্টিং। ছবির উপর লেখা হ্যাপি ফাদার্স ডে।

ছবি আঁকার অনুপ্রেরণা কি ‘তুম মিলে’?
মনে হয় না। এক এক সময়ে ওর এক একটা ‘ফেজ’ চলে। এখন যেমন ছবি আঁকা চলছে। কিছু দিন আগে ছিল নাচ। সবে তো তিনে পড়ল, মনে হয় না, আমার কোনও সিনেমা ও দেখেছে।

পর্দায় চুমু খাওয়ার দৃশ্যে রাশ টানা কি ছেলে বড় হচ্ছে বলে?
এ ভাবে ভাবিনি বললে, মিথ্যে বলা হবে। হা হা হা। না, আমি আসলে ওই একই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে করতে একটা স্যাচুরেশন পয়েন্টে চলে এসেছিলাম। এমন নয় যে, আমি ‘সিরিয়াল কিসার’ তকমা নিয়ে চিন্তিত। লোকে আমাকে কী বলল তাতে আমি খুব একটা পাত্তা দিই না।
কিন্তু আমি নিজেই ওই ছক থেকে বেরোতে চাইছিলাম। লাকিলি ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন মুম্বই’, ‘দ্য ডার্টি পিকচার’, ‘সাংহাই’, ‘ঘনচক্কর’য়ের মতো ছবিগুলো পেয়ে গেলাম। (হেসে) আর, বাড়িতে বৌ আছে, এ বার অন-স্ক্রিন নয় একটু কম চুমুই খেলাম।


সে কি! বৌকে এত ভয়? বাস্তবের ইমরান হাসমির সঙ্গে তো তাহলে ‘ঘনচক্কর’য়ের সঞ্জয়ের বেশ মিল?
কে ভয় পায় না বলুন তো! এটা সব পরিবারের ওপেন সিক্রেট। বাইরে যা-ই করো না কেন, বাড়িতে কিন্তু বৌ-ই বস। ‘ঘনচক্কর’য়েও তাই। বিদ্যা (বালন) একজন ওভার দ্য টপ গৃহবধূর চরিত্রে অভিনয় করেছে। ফ্যাশন নিয়ে সে ভীষণ আগ্রহী, কিন্তু কিছুই বোঝে না ফ্যাশনের। আমি তার শান্তশিষ্ট বর। যে সব সময় বৌয়ের বকুনির অন্য প্রান্তে।
বিদ্যা বালনের সঙ্গে এটা তো আপনার দ্বিতীয় ছবি। ‘দ্য ডার্টি পিকচার’য়ের পর। কেমন লাগল একসঙ্গে অভিনয় করে?
ওহ্, ফ্যান্টাস্টিক। আমার মতে, বিদ্যা এই সময়ের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী। ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ করার সময়ই বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। আসলে বিদ্যার সঙ্গে কাজ করাটা বেশ মজার। সব সময় মুডটা লাইট করে রাখে। আমার মতো ইন্ট্রোভার্টের ক্ষেত্রে তো সেটা খুব ভাল। ‘ঘনচক্কর’য়ের পর কমফর্ট লেভেলটা আরও বেড়ে গিয়েছে।
রাজ (পরিচালক রাজ কুমার গুপ্তা) ‘ঘনচক্কর’য়ের চিত্রনাট্যটা আমায় শুনিয়ে ছিল ‘ডার্টি পিকচার’ রিলিজের কয়েক দিনের মধ্যেই। শুনেই ভাল লেগেছিল গল্পটা। তার ওপর বিদ্যার সঙ্গে আবার কাজ করার সুযোগ। ফেলা যায়!


চিত্রনাট্য পড়ার প্রসঙ্গে একটা কথা বলি, ‘রাজ থ্রি’ রিলিজের সময় আপনি একবার আমাদের অফিসে গিয়েছিলেন। আপনার মনে আছে কি না জানি না...
হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ। মনে আছে। বিপাশা (বসু), মহেশজি (ভট্ট) আর আমি গিয়েছিলাম।

সে দিন বিপাশা বলেছিলেন, অনেকে আপনাকে দিয়ে চিত্রনাট্য পড়াতে চায়। এটা জানার জন্য যে ছবিটা আদৌ চলবে কি না। কারণ ‘ইমরান পাবলিকের নাড়ি নক্ষত্র জানে।’
ওয়াও। বিপাশার কথাটা শুনে খুব ভাল লাগল।

আমার প্রশ্ন হল, যিনি এত ভাল চিত্রনাট্য বোঝেন, তিনি এখনও প্রোডাকশনে আসছেন না কেন?
না, না, আসছি তো। আমার ইচ্ছা প্রোডাকশনে আসার। হয়তো আগামী দু’-তিন বছরের মধ্যে এসেও যাব। তবে, অ্যাক্টিংটাই আমার প্রায়োরিটি। আমি স্টার-সুপারস্টার জানি না।
আমি একজন পেশাদার অভিনেতা। বিপাশা বলেছে বটে, কিন্তু জানি না সত্যিই আমি কতটা ‘পাবলিকের নাড়িনক্ষত্র’ জানি?


আপনি না জানলেও, বক্স অফিস সেটা বুঝিয়ে দেয়...
হতে পারে... হ্যাঁ, আমার সিনেমা হয়তো বক্স অফিসে ভাল চলছে। কিন্তু আমি প্রত্যাশার ভার বহন করতে রাজি নই। স্টার হওয়ার বোঝাও আমি বইব না। দিনের শেষে আমি একজন অভিনেতা। স্রেফ অভিনেতা। আমি চাইব না আমার ছেলে আমাকে স্টার হিসাবে দেখুক। আমি চাই ও আমাকে ওর এক স্টুপিড ফ্রেন্ড হিসাবেই দেখুক। আমার বৌ আমাকে দেখুক এক লাভিং হাজব্যান্ড হিসাবে। দ্যাটস্ অল।

এই যে চারিদিকে ‘১০০ কোটির ক্লাব’য়ের কথা। সেটার তো একটা চাপ থাকেই।
হ্যাঁ, অবশ্যই থাকে। আমি তো সেটাই বলতে চাইছি। চাপ থাকবেই। কিন্তু সেটাকে কেন বয়ে নিয়ে বেড়াব?

কিন্তু সেই তো লাই ডিটেক্টরের সামনে দাঁড়াতে হচ্ছে... সে-ও তো ছবির প্রচারের জন্যই। সুতরাং ছবি কতটা ব্যবসা করল সেটা আপনাকে শ্যুটিং ফ্লোরের বাইরেও ভাবতে হচ্ছে?
হ্যাঁ, সেটা তো করেছি। ব্যবসার কথা তো অস্বীকার করছি না। এগুলো তো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিরই অংশ। জুলিয়া রবার্টস যখন ভারতে আসেন, সেটাও তো ছবির প্রচারেই। আমিও তো একই সোসাইটির। আমি কেন করতে চাইব না।

জুলিয়া রবার্টসের কথা যখন উঠল, তখন জিজ্ঞেস করি, ড্যানিস ট্যানোভিকের ছবিটার কী হল?
শ্যুট পুরোটা হয়ে গিয়েছে। মাঝে কিছু দিন আমাকে ছুটি নিতে হয়েছিল, ছবির প্রচারের জন্য। অস্কারজয়ী এক পরিচালকের সঙ্গে কাজ করা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। ছবির গল্পটা কন্ট্রোভার্সিয়াল। এই মুহূর্তে এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারব না। তবে এটুকু বলতে পারি, এ ছবিটা নিয়েও আলোচনা কম হবে না।

আচ্ছা একটা কথা বলুন, আপনার প্রথম দিকের ছবির বেশির ভাগই তো বিদেশি ছবির রিমেক। আপনি এখন আবার বিদেশি ছবিই করছেন...
দেখুন রিমেক নিয়ে আমার কোনও ছুঁতমার্গ নেই। একজন অভিনেতা হিসেবে আমি সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার জন্যই প্রস্তুত। সেটা হলিউড ছবি হোক বা বলিউড, কিংবা কোনও রিমেক। আই অ্যাম রেডি টু ডু এনি কাইন্ড অব মুভি।

শুনেছি আপনি সেটে বেশ মজা করেন।
সেটে তেমন মজা করি না। সেটে আমি ভীষণ সিরিয়াস থাকি। হ্যাঁ, সেটের বাইরে কখনও সখনও একটু আধটু পিছনে লাগি।

আপনার অভিনীত বেশির ভাগ চরিত্রই তো বেশ ‘নটি’। বাস্তব জীবনে কতটা দুষ্টুমি করেছেন ?
ওহ ম্যান... ইউ আর গোয়িং টু দ্য ডার্কার সাইড এগেন। (একটু ভেবে) আমার পড়াশোনায় যে বিশাল আগ্রহ ছিল, তা বলতে পারব না। কলেজে বেশ মাথাগরম ছেলেই ছিলাম। আমি, রাহুল (ভট্ট), মোহিত (সুরি) মিলে পালি হিলসে ঘুরে বেড়াতাম। দামি গাড়ি, সুন্দরী মেয়েদের ঝারি— সবই চলত। উই ওয়্যার এক্সট্রিমলি নটি কিডস। কিন্তু জানতাম, আমার ইনোসেন্ট মুখ দেখে কেউ আমায় ধরতে পারবে না। মুকেশ ভট্ট পর্যন্ত একবার ঠাকুরমাকে নালিশ করেছিলেন আমাদের দুষ্টুমি নিয়ে। কিন্তু বিয়ের পরে সে সব একেবারে বন্ধ। ওহ্, এখন এ সব শুনলে বৌ আমাকে বাড়ি থেকেই তাড়িয়ে দেবে।

বৌয়ের কাছে ইনোসেন্ট লুক দিয়ে পার পাবেন না?
নো ম্যান। নট আ চান্স।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.