রাজ্যের অন্যতম নামী হাসপাতাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে আটচল্লিশ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পড়ে থাকলেন গুরুতর অসুস্থ এক মহিলা। দুই পায়ের পাতায় গ্যাংগ্রিন হয়ে গিয়েছে তাঁর। দীর্ঘদিন চিকিৎসা না-হওয়ায় সেই ক্ষতে থিকথিক করছে পোকা। মাছি ভনভন করছে শরীরে। পাশ গিয়ে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যাঁরাই যাচ্ছেন তাঁদের কাছে করুণ আবেদন করছেন তিনি, “আমাকে একটু ডাক্তারের কাছে নিয়ে চলুন।’’ |
মেডিক্যালের নর্দমায় পড়ে ডলি গুপ্ত। —নিজস্ব চিত্র |
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেট দিয়ে ঢুকে বাঁ দিকে নর্দমার মধ্যে পড়েছিলেন মহিলা। শীর্ণ-রুগ্ন চেহারা। বয়স ৫০-৫২। নাম জিজ্ঞাসা করতে জানালেন তাঁর নাম ডলি গুপ্ত। বাড়ি অবিনাশ কবিরাজ স্ট্রিটে। তাঁর দাবি, তিন কূলে তাঁর কেউ নেই। পাড়ার লোক হাসপাতালে ফেলে গিয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, দু’দিনের বেশি সময় ধরে এমন মারাত্মক অসুস্থ একজন মেডিক্যাল চত্বরে পড়ে রইলেন, অথচ ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবা পেলেন না কেন?
শনিবার রাতে মেডিক্যালের সুপার দিব্যেন্দু গৌতমের উত্তর, “আমরা ওই মহিলা সম্পর্কে কোনও খবরই পাইনি। এই প্রথম জানলাম। কাল অবশ্যই চতুর্থ শ্রেণির কোনও কর্মী পাঠিয়ে ওঁকে তুলে আনা হবে, চিকিৎসা হবে।” এই ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে হাসপাতালের কর্তব্য ঠিক কি? স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, “সরকারি হাসপাতালে এইরকম অনেক রোগীকেই ফেলে রাখা হয়। এঁদের নিয়ে হাসপাতালের অনেক সমস্যাও হও। কিন্তু তা বলে তো আর ফেলে দেওয়া যায় না। পরিষেবা দিতেই হবে। মেডিক্যালের ক্ষেত্রে এত দেরি কেন হল আমাকে খোঁজ নিতে হবে।” |