|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
রুবি হাসপাতালের সামনে থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলাম শেয়ারে। এক ভদ্রমহিলার ব্যাগের ভিতর বেজে উঠল ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’। ভদ্রমহিলা ফোনালাপ শুরু করলেন: হ্যাঁ রে ছোটকু, খুব খুশি হয়েছি। সেলিব্রেট করেছি তো, চিকেন পোস্ত...।
ফল-মিষ্টি এই সব দিল? টাকা কত দিল রে?
আরে ঠিক আছে। ধাপে ধাপে হবে। এখনই বঙ্গভূষণ? আগে সব বুড়োরা পেয়ে নিক...।
না-না-না! মাথা খারাপ? এখন কোনও কন্ট্রোভার্সিতে যাস না বাবা। এড়িয়ে যা, এড়িয়ে যা। বল কলকাতায় থাকবি না।
ওই তো কামদুনি না কী যেন। রেপ কি নতুন কিছু নাকি? রিজোয়ানুরের সময় কারা ছিল সব মিছিলে সেটা ভেবে দেখ, কত ফিল্মস্টার, সব ইয়ে-ইয়ে লোকজন... এখানে কে যাবে?
হ্যাঁ, ভেবেচিন্তে। কেমন? ভাল থাকিস।
ভদ্রমহিলা ড্রাইভারকে বললেন, খালপুলের কাছে নামব। খালপুল, কেমন?
খালপুল বলতেই হাবু লাহিড়ির কথা মনে পড়ে গেল। হাবু লাহিড়ি ছিলেন নাট্যকার তুলসী লাহিড়ির ছেলে। সেই তুলসী লাহিড়ি, যাঁর বিখ্যাত সব তোলপাড় করা নাটক ছেঁড়া তার, নতুন ইহুদি, দুঃখীর ইমান...। হাবুদা মাঝে মাঝে আকাশবাণীতে এসে আমার সঙ্গে দেখা করতেন। বলতেন, তোদের ক্যান্টিনের ডিজেলে ভাজা ঠান্ডা শিঙাড়া খাওয়াতে পারিস দু’খানা? ঠান্ডা হওয়াটা মাস্ট।
কেন, ঠান্ডা মাস্ট কেন?
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
তবে না ঠিক মতো অম্বলটা হবে। রাত্তিরের খাওয়াটা বেঁচে যায় তা হলে।
হাবুদার রোজগারপাতি ছিল না। কী করে চলত জানি না। বিয়ে-থা করেননি। বাউন্ডুলে মানুষ। উনি বলতেন, বীরেন ভদ্র-বাণীকুমারদের আমলে তুলসী লাহিড়ির নাটক হত, তার রয়্যালটি পেতেন। বলতেন, বীরেন ভদ্রের নস্যির ডিবে থেকে নস্যি নিয়ে বাণীকুমারের চাদরে হাত মুছতেন। ওঁরাও নেই, নাটকও বন্ধ। বলেছিলেন, উনি একটা নাটক লিখেছেন শিশির ভাদুড়ির খেতাব প্রত্যাখ্যান নিয়ে। নাটকটির নাম ‘খেতাব’। একটা বাহাদুর মার্কা খাতা আমাকে দিয়েছিলেন, নাটকটি যদি করাতে পারি, উনি কিছু রয়্যালটি পাবেন। করাতে পারিনি।
শিশির ভাদুড়ির উপর অপরিসীম শ্রদ্ধা ছিল হাবুদার। বলতেন ভাব, লোকটার কথা ভাব এক বার। দেনার দায়ে শ্রীরঙ্গম থেকে উৎখাত হতে হল, খেতে পাচ্ছেন না, সংগীত-নাটক অ্যাকাডেমি ফেলোশিপ দিতে চাইল, বাপের ব্যাটা নিলেন না, পদ্মভূষণ ছুড়ে দিলেন। বললেন, খয়ের খাঁ বানাতে চাও? ওটি হচ্ছে না। আমাকে সম্মান জানাতে চাও তো একটা নাট্যশালা করে দাও। জাতীয় নাট্যশালা। টাকার জন্য চোখের ছানি কাটাতে পারছেন না, রাসবিহারী সরকার মশাই ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে ফাংশন করে টাকা তুলে দিতে চাইলেন, শিশিরবাবু ওটা হতেই দিলেন না। বলেছিলেন, ফাংশন করছ করো, ও টাকা আমি নিতে পারব না।
বদলি হয়ে গেলাম অন্যত্র। হাবুদার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। হঠাৎ একটা পোস্টকার্ড পেলাম, সে-ও বছর বারো আগে। ‘শয্যাশায়ী হয়ে বোনের বাড়িতে আছি। বাগুইআটির খালপুলের পাশে। বাড়ি চিনতে অসুবিধে হবে না, ওই অঞ্চলে একটাই টিনের চালের বাড়ি। তোকে দেখতে ইচ্ছে করছে, আয় এক দিন।’ পোস্টকার্ডে এক ফোঁটা রক্ত কালচে হয়ে আছে। মশার?
আপেল নিয়ে গিয়েছিলাম। হাবুদা বললেন, আপেল নিয়ে এলি কেন? বরং আলু নিয়ে আসতে পারতিস দু’কেজি। পায়ে প্লাস্টার। পায়ের কাছে একটা বেড়াল। বললেন, ঠ্যাং ভেঙে বোনের কাছে আছি। বোন আগে গণনাট্যে ছিল, পরে অফিস ক্লাবে ফিমেল রোল করত। এখন অফিস ক্লাবে তো নাটকই হয় না। হলেও সব অফিসে এখন অনেক ফিমেল। ওর বোঝা হয়ে আছি। তোকে ডেকেছি, আমার ‘খেতাব’ নাটকটা যদি করিয়ে দিতে পারতিস, ক’টা টাকা পেতাম। বেড়ালটা গুটিগুটি হাবুদার হাতের নাগালে এলে, ওর গায়ে হাত বুলিয়ে বললেন জাহানারার মতোই মাতৃহারা! ওরই মতো বেচারি।
নাটক বিভাগে আমার কোনও হাত ছিল না। আমি ভাবলাম সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, প্রদীপচন্দ্র বসুদের ‘আত্মীয় সভা’ বলে একটা প্রতিষ্ঠান আছে, দুঃস্থ শিল্পীদের অর্থসাহায্য করে। হাবুদাও এক সময়ে নাটক করতেন। আমি একটা দরখাস্ত লিখলাম। প্রদীপ বসুর সঙ্গে কথাও বললাম। দরখাস্তটা হাবুদাকে দিয়ে সই করাব বলে ওঁর বাড়ি গেলাম।
হাবুদার তখন ধুম জ্বর। ওঁর বোন কপালে জলপট্টি দিচ্ছে। হাবুদা বিড়বিড় করছেন। বোন বলল, শিশির ভাদুড়ি ভর করেছে। আমি হাবুদার পাশে বসে বলি: দরখাস্তটায় একটা সই করে দিন। আর্থিক অনুদানের জন্য। কলমটা এগিয়ে দিই।
হাবুদা বললেন, খয়ের খাঁ বানাতে চাও? লাথি মারি। পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ? কলাটা হবে আমার। জানো, মোসাহেব কী ভাবে জন্মে?
পশ্চিম জানালা দিয়ে শেষ রোদ্দুর প্লাস্টার-পায়ে প্রণামের মতো লেগে ছিল।
ট্যাক্সির মহিলার আবার ফোন এসেছিল। ছোটকু? গান গাইতে বলেছে? ও বুঝেছি। উন্নয়নের গানের সিডি-র রিলিজে থাকবি? বাঃ! বেস্ট অব লাক।
খালপুলে নেমে গেলেন ছোটকুর ওয়েল-উইশার। কোনও টিনের চালার বাড়ি দেখতে পেলাম না। উন্নয়ন হয়েছে খুব। |
|
শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় |
|
• ঠিক করলেন, ছেলে থেকে মেয়ে হয়ে যাবেন। একদম ও.টি.-তে গিয়ে সার্জন জানালেন,
এটা তাঁর সিলেবাসের বাইরে। বরং উনি একটা বিরাট ল্যাজ লাগিয়ে দিতে পারেন। চলবে? |
|
|
• ভাবলেন, ‘মেঘে ঢাকা তারা’ দেখতে গিয়ে মাতলামি
করে বার বার ‘গুরু তোমায় ফ্রেমে ধরা যায় না’ চেঁচিয়ে
ঋত্বিক-প্রেম দেখাবেন। দু’বার চেঁচাতেই শাশ্বত স্ক্রিন
থেকে এক থাপ্পড় মেরে বললেন, ‘ঠিক বলেছিস!’ |
• কামদুনির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে দুটো কালো
পতাকা বানালেন। যেই নিয়ে পুলিশের নাকের ডগায়
হাঁটতে বেরিয়েছেন, ঝমঝম বৃষ্টি। রং ধুুয়ে সেগুলো ধবধবে
সাদা দোস্তি-পতাকা। পুলিশ খুশি, হ্যান্ডশেক চায়। |
|
|
|
|
• ঝাড়খন্ডে ‘সারনা’ উপজাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলে চার্চে বসানো হল মূর্তি: মা মেরি। পরনে সারনা নারীর মতোই মঙ্গলকাজে পরা লালপেড়ে সাদা শাড়ি, চুল খোঁপা করা, হাতে-কানে গয়না, কোলের শিশু যিশুও জনজাতি-স্টাইলে টুকরো কাপড়ের ঘেরে বাঁধা। রোম থেকে এক কার্ডিনাল ভারতে এসে উদ্বোধন করেছেন, মূর্তির ‘পরিবর্তিত’ নান্দনিকতায় অনেকে চমৎকৃত। কিন্তু সারনা নারীপুরুষ প্রবল ক্ষুব্ধ, পরিষ্কার জানিয়েছেন: মেরি বিদেশি, ভিন ধর্মের আইকনিক মাতৃমূর্তি। হঠাৎ করে তাঁকে সারনা-শাড়িতে জড়িয়ে এমন হাঁকডাক চরম আদিখ্যেতা। আর শুধু প্রকৃতিই যাঁদের কাছে ‘মা সারনা’, একমাত্র বন্দ্য, তাঁরা কেন ‘শাড়িগয়নাবতী খ্রিস্টজননী’কে বন্দনা করবেন? অনেক সারনাই অভাবে পড়ে খ্রিস্টান, চার্চ নির্ঘাত এ বার বাকিদেরও ভুলিয়ে ধর্মান্তরিত করার মতলব এঁটেছে। ওই অদ্ভুত মূর্তি এক্ষুনি সরানো হোক, বা থাকলে থাকুক মা মেরির আদি অকৃত্রিম বেশে। নয়তো ভবিষ্যতে জন্মানো সারনা শিশু ভেবে বসতেই পারে, মা মেরি আসলে ও রকমই। চার্চ-কর্তারা বলছেন, লালপাড় সাদা শাড়ি পরতে পারেন যে কেউই, মেরিও। আর শাড়িপরা মেরি মানে ধর্মের ফাঁদ কেন? মিশনারি স্কুল বা হাসপাতালের সুবিধে নিলেই কি লোকে খ্রিস্টান বনে যায়? না কি ভেনুটা চার্চ বলেই এত আপত্তি, শিল্প প্রদর্শনী হলে বাহবার ঢল নামত!
• স্লোভাকিয়ার ন্যাশনাল ব্যাংক-এর ঘোষণা, আসন্ন গ্রীষ্মে সরকার যে স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করতে চলেছেন, তাতে কোনও খ্রিস্টধর্মীয় চিহ্ন বা প্রতীক, যেমন পবিত্র ক্রুশ বা খ্রিস্টান সন্তদের মাথার পিছনে জ্যোতির্বলয়, রাখা চলবে না। এ বছরই স্লোভাকিয়ায় খ্রিস্টধর্মের পত্তনের ১১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কিছু মুদ্রা চালু হওয়ার কথা। তার আগে এ নির্দেশে খ্রিস্টধর্মানুরাগী অনেকেই ক্ষুব্ধ, হতাশ। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অটল। স্লোভাকিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য, যে সংস্থা এমনিতেই ভাষা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির নানা সমস্যায় জর্জর, সেখানে ধর্মেরও এন্ট্রি হলে দেড়া ঝামেলা। ধর্ম থাকুক স্বস্থানে, পয়সায়-নোটে কেন? অন্তত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোয় ব্যবসাবাণিজ্য সহ অর্থনীতির যাবতীয় অনুষঙ্গ সচেতন ভাবেই হবে ধর্মের ট্যাটু-স্টিকাররহিত, সে চেষ্টাই লক্ষ্য। উদ্যোগ বিলক্ষণ সাধু। পৃথিবীতে ধর্ম মানুষ-মনে যত না স্বস্তি, সন্তোষ দিয়েছে, তার চেয়ে লক্ষ গুণ কেড়েছে রাতের ঘুম, ভাতকাপড়, আদুরে কোল, সম্মান, প্রাণ। যার গায়ে আঁচড়টি কাটলে, নিটোল বিশ্বাস টাল খেলে বিশ্বসুদ্ধু হাঁ-হাঁ, তার প্রকোপ ও প্রাদুর্ভাব থেকে অর্থনীতিকে বাঁচাবার এ প্রয়াসকে লক্ষ স্যালুট। |
|
|
৫০০
এ বছর রেকর্ড-সংখ্যক যত টন আম
আমেরিকায় রফতানি করবে ভারত |
১২
প্রতি দিন গড়ে যত জন মানুষ খুন হন
পাকিস্তানের বন্দর শহর করাচিতে |
১৪৪১
সিরডি সাঁইবাবা মন্দিরে গত পাঁচ বছরে যত
কোটি টাকা আয় হয়েছে বলে জানাল ট্রাস্টি বোর্ড |
৯৮.০৯
এ বারের মাধ্যমিক
পরীক্ষায় সংশোধনাগারে থাকা
পরীক্ষার্থীদের পাশের হার যত শতাংশ |
৩৯০০০০
নিলামে যত পাউন্ড দরে বিক্রি হল
কোচ হিসেবে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড-এর
শেষ ম্যাচে স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসন-এর
চিবোনো চুইংগাম |
৬৪২৪৫০০০০০
ন’বছরের প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদে
মনমোহন সিং-য়ের ৬২ বার বিদেশ-সফরে যত টাকা খরচ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের |
৪২৫.৭২
প্রতি দিন কলকাতা
শহরে যত টন প্লাস্টিক
বর্জ্য জমা হয় |
১০
মেয়র-পারিষদদের বৈঠকে জলযোগের
খরচা কমিয়ে এক বছরে যত লক্ষ
টাকা বাঁচল কলকাতা পুরসভার |
৯
দেশের যত শতাংশ বিজ্ঞাপনদাতা ব্যাডমিন্টনে
বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী। ক্রিকেটে আগ্রহী
৮৫%, ফুটবলে ৪৫%, হকিতে ৮% |
|
|
|
|
অ
সী
ম
চৌ
ধু
রী |
|
|
উৎকোচ গান হয়তো তা নয়... হয়তো বা রামধুনই।
সরকারি গান শুনে জ্বলে তবু বিনিদ্র কামদুনি।
জ্বলে ক্রোধ... ঘৃণা... জ্বলছে দুঃখ পাঁজর-ফাটানো শোকে।
ন্যাকামিও জ্বলে... যাকে ইদানীং মোমবাতি বলে লোকে। |
কৌতূহলের অদম্য ভিড় জমে ওঠে যথাতথা।
কারও মনে নেই প্রাণ বাঁচাবার তুচ্ছ দায়ের কথা!
কী করে ঘটেছে... এখনও কি বেঁচে?
আরও কত কূট প্রশ্ন রয়েছে...
কাটা পা সমেত রেলের লাইনে পড়ে থাকে মানবতা। |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
বেকার সমস্যা ঘুচল বলে! |
|
|
|
এই ছবির সংলাপ লিখেছেন শান্তনু পাল, করিমপুর, নদিয়া
|
|
|
|
|
পাশের ছবির দু’জন কী বলছে? সাদা পাতায়
লিখে পাঠান।
প্রতি ডায়লগ ২০ শব্দের মধ্যে।
ঠিকানা:
নয়া সংলাপ,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
|
|