ব্রাজিল বিশ্বকাপের ‘ড্রেস রিহার্সালে’ এ ভাবে অভ্যর্থনা পাবেন বোধহয় ভাবতে পারেননি স্পেনের ফুটবলাররা। কনফেডারেশন কাপের প্রথম ম্যাচে ইনিয়েস্তা, র্যামস, ফাব্রেগাসরা যখন উরুগুয়েকে হারাতে ব্যস্ত, তাঁদের টিম হোটেল ‘গোল্ডেন টিউলিপ’-এ নিঃশব্দে ‘অপারেশন’ চালাচ্ছিল ডাকাতরা। নগদ-সহ প্লেয়ারদের দামি জিনিসপত্র নিয়ে কেউ বুঝে ওঠার আগেই নিঃশব্দে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
এমন নিখুঁত অপারেশন যে ম্যাচের পর হোটেলে ফিরে এসেও স্প্যানিশ প্লেয়াররাও ধরতে পারেননি তাঁদের জিনিসপত্র, নগদ হাওয়া হয়ে গিয়েছে। পরের দিন ভোরে রেসিফের হোটেল ছাড়ার সময় প্রথম ব্যাপারটা নজরে আসে পিকের। কলম্বিয়ান পপ তারকা শাকিরার প্রেমিক পিকে হোটেলে নিজের ঘরে কিছু ব্যাঙ্কনোট রেখেছিলেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও যখন পেলেন না, তখনই ডাকাতির সন্দেহ মাথায় আসে। কিছুক্ষণ পরে পিকের সতীথর্দের মধ্যে আরও পাঁচ ফুটবলারের জিনিসপত্র, নগদ (কারও কারও হাজার ইউরো পর্যন্ত) না মেলায় সন্দেহটা আরও জোর পায়। নামের বাহার থাকলেও রেসিফের এই হোটেল নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল না স্প্যানিশ টিম। পোকা মাকড়ের উপদ্রব তো ছিলই। হোটেলের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়েও অভিযোগ ছিল। কিন্তু ডাকাতির ব্যাপারটা কারও মাথাতেও আসেনি। |
দিশাহারা
রেসিফে-র টিম হোটেলে বিষণ্ণ পিকে। |
শেষমেশ ডাকা হয় পুলিশকে। লিখিত অভিযোগও করা হয়। ফিফাও ব্যপারটার স্বীকার করে নিয়েছে। ফিফার মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা এটুকু জানি যে, একটা পুলিশ রিপোর্ট লেখানো হয়েছে। গোটা ব্যাপারটা স্থানীয় প্রশাসন দেখছে। তা ছাড়া এই সংশ্লিষ্ট টিমের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ রাখছি।” স্প্যানিশ দলের মুখপাত্র যদিও এই নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
এমনিতেই গোটা ব্রাজিল জুড়ে যে ভাবে সরকার বিরোধী ক্ষোভ বাড়ছে তাতে কনফেডারেশন কাপের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। স্পেন টিমের হোটেলে ডাকাতির ঘটনায় ব্রাজিলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল। পিকে-রাও এই অভ্যর্থনায় একেবারেই খুশি হননি সেটা বোঝাই যাচ্ছে। এই রাগেই পরের ম্যাচে তাহাতিকে দশ গোল দিয়ে কিছুটা হলেও জ্বালা জুড়োননি স্প্যানিশ ফুটবলাররা, তাই বা কে বলতে পারে?
জ্বালা জুড়িয়েছে ফের্নান্দো তোরেসেরও। ১৯৩৩-এ বালগেরিয়ার বিরুদ্ধে ১৩-০ আর ১৯৮৪-এ ১২-১ মালটা-কে হারানোর পর আন্তর্জাতিক ম্যাচে তাহিতিকে ১০-০ হারানোই স্পেনের তৃতীয় বৃহত্তম জয়। আর এই ম্যাচেই প্রায় এক বছর জাতীয় দলের হয়ে গোল না পাওয়া তোরেসের প্রায় ঝাপসা হয়ে যাওয়া লক্ষ্যটাও এক লহমায় আবার স্পষ্ট লাগছে। ‘এল নিনো’ আন্তর্জাতিক ম্যাচে স্পেনের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা (৩৫)। শীর্ষে দাভিদ ভিয়া (৫৬)। দ্বিতীয় রাউল (৪৪)। |