বাজারের দশায় চাপানউতোর শাসক বিরোধীর |
আগুনে ৫টি দোকান ছাই বিধান মার্কেটে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ফের পুড়ল বিধান মার্কেট। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২ টা নাগাদ আগুন লাগে বিধান মার্কেটের কম্বলপট্টি এলাকায়। ভস্মীভূত হয় ৫টি দোকান। আংশিক পুড়ে যায় দু’টি দোকান। দোকানের সঙ্গে ছিল গুদামও। ঘটনার পরে সেখানে যান জনপ্রতিনিধিরা। কেন বিধান মার্কেট সংস্কার হয়নি তা নিয়ে শাসক ও বিরোধী দলের চিরাচরিত চাপানউতোরও শুরু হয়ে যায়। |
|
বৃহস্পতিবার রাতে আগুন লাগে কালিম্পং থানার উল্টো দিকে থাকা বেশ কয়েকটি দোকানে। ছবিটি তুলেছেন রবিন রাই। |
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব সেখানে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন, ২০ বছর মন্ত্রী ও এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান থাকলেও বিধান মার্কেটের আধুনিকীকরণে কাজ করেননি প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। পক্ষান্তরে, ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে অশোকবাবুর প্রশ্ন, দু’বছরে নতুন তৃণমূল সরকার কেন বিধান মার্কেটের সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়নি? এ হেন টানাপোড়েনে বিধান মাকের্টের ভবিষ্যৎ কি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসী। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ আগুন লাগে। প্রাথমিক অনুমান শট সার্কিট থেকেই আগুন লাগে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ কোটি টাকা বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া দোকান গুলির মধ্যে ছিল দু’টি মুদি খানার দোকান। ছিল পোশাকের দোকান। মুদির দোকানে প্রথম আগুন লাগে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুড়ে যাওয়া দোকান গুলির বেশ কয়েকটিরই বিমা নেই। এমন কি ট্রেড লাইসেন্স নেই বলে অভিযোগ। দোকানের সমস্ত কিছু পুড়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন মুদি দোকানের মালকিন গৌরী ঘোষ।
বৃহস্পতিবার রাতে দমকল গেলেও রাস্তা সরু থাকায় পৌঁছতে পারেনি। বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি প্রদীপ দাস বলেন, “বারবার আলোচনা করা হলেও কাজ শুরু হয়নি। আমরা সব রকম সাহায্য করতে রাজি আছি। এবার নিজেরাই ফিতে দিয়ে রাস্তা মেপে তা চওড়া করার কাজ করব। পাশাপাশি যতদিন অবস্থার পরিবর্তন না হবে তত দিন স্টেডিয়ামের কাছে একটি দমকলের ইঞ্জিন রাখার আবেদন জানাব।” রাতের আগুনের ঘটনার পরেই সেখানে ছুটে যান ১১ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির কংগ্রেস সদস্যরা। শুক্রবার বেলা বাড়তে আসতে থাকেন অন্য জনপ্রতিনিধিরা। ১০টা ২৫ নাগাদ সেখানে পৌঁছন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। মেয়রকে সামনে পেয়েই ঘটনার কথা বলতে থাকেন গৌরী দেবী। তিনি বলেন, “আপনি কিছু করুন দিদি।” সব রকম আশ্বাস দেন গঙ্গোত্রী দেবী। তিনি বলেন, “নিজেকে অভিভাবকহীন মনে করবেন না। আমি আছি।” রাস্তা নিয়ে ক্ষোভের সুরেই বললেন, “কাউন্সিলর কাজ করেননি।” মেয়রের ছাড়াও ছিলেন ডেপুটি মেয়র সবিতা অগ্রবাল, মেয়র পারিষদ রুমা নাথ। |
|
শুক্রবার সকালে বিধান মার্কেটের ছবিটি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক |
পুরসভা থেকে সাহায্য করা হবে বলে জানান মেয়র। পাশাপাশি আজ শনিবার ফের মার্কেট পরিদর্শনে যাবেন বলে জানান তিনি। সেই সময়েই সেখানে যান প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। কথা বলেন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। ব্যবসায়ীদের সাহায্যের জন্য প্রশাসনের কাছে যেতে পরামর্শ দেন তিনি। মেয়রের সঙ্গেও সাহায্য দেওয়ার ব্যাপারে তিনি কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, “বর্তমান শহরের মন্ত্রীর বাজার নিয়ে কোন চিন্তাই করছেন না। এখানকার ব্যবসায়ীদের মালিকানা সত্ত্ব দেওয়া উচিত। একটি নির্দিষ্ট প্ল্যান করে মার্কেট তৈরি করা উচিত।” বেলা ১১ টা ১০ নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আজ, শনিবার ক্ষতিগ্রস্থদের নিজের দফতরে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। মাকের্টের এই অবস্থার জন্য বাম সরকারকে দুষে গৌতমবাবু বলেন, “২০ বছর মন্ত্রী থেকেও কাজ করেননি প্রাক্তন মন্ত্রী। আমরা নতুন করে তৈরির চিন্তা করছি। তবে তা জোর করে নয়, যদি ব্যবসায়ীরা জমি দেন, তাহলেই।” |
|