তিন জেলার তিনটি ঘাট বেহাল, দুর্ভোগ যাত্রীদের
ক পাশে রূপনারায়ণ। অন্য পাশ দিয়ে বইছে গঙ্গা। কাছাকাছি তিন জেলার তিনটি ঘাট দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুরপুর, হাওড়ার গাদিয়াড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরের গেঁওখালি। এই বর্ষায় ওই তিন ঘাট দিয়ে যাতায়াত করতে নাজেহাল হচ্ছেন যাত্রীরা। কারণ তিনটি ঘাটই বেহাল। যাত্রীদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ঘাট মেরামতির কথা জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, “গাদিয়াড়া ঘাটটির বিষয়ে জেলা পরিষদ থেকে অন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অন্য যে দু’টি নদীবাঁধের পাশের ঘাটে ধস নেমেছে, তা দ্রুত সারানোর ব্যবস্থা করা হবে।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৩ সালে ওই তিনটি ঘাট দিয়ে লঞ্চে যাত্রী পারাপার শুরু হয়। ঘাটগুলি রয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদের অধীনে। লঞ্চ চলাচল দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ দফতর। রূপনারায়ণ নদী লাগোয়া গাদিয়াড়া পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায় অনেকেই সেখানে বেড়াতে যান। আসেন বিদেশিরাও। অনেকেই নুরপুর থেকে লঞ্চেও যান। গাদিয়াড়া ঘাট দিয়ে হাওড়ার শ্যামপুরের বহু মানুষ রূপনারায়ণ নদী পেরিয়ে নুরপুর থেকে বাসে ধর্মতলা বা ডায়মন্ড হারবার যান। তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা, তেমনই রয়েছেন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং সরকারি কর্মীরা। অপর দিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের বহু মানুষ আবার গেঁওখালি ঘাট হয়ে নুরপুরে এসে কলকাতা বা ডায়মন্ড হারবারে কর্মস্থলে যান।
বেহাল তিন

পূর্ব মেদিনীপুরের গেঁওখালি।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুরপুর।

হাওড়ার গাদিয়াড়া।
কিন্তু কী কী সমস্যা রয়েছে ওই তিনটি ঘাটে?
নুরপুরে ঘাট বলতে কার্যত কিছু নেই। নদীবাঁধের ঘাটে লঞ্চ দাঁড়ায়। কিন্তু সেই ঘাটের অবস্থা বেহাল। নেই যাত্রী শেড, পানীয় জলের ব্যবস্থা এবং শৌচাগার। ঘাটের টিকিট কাউন্টারের চালও উড়ে গিয়েছে কয়েক মাস আগে। ফলে, যাত্রীদের টিকিট কাটতে হচ্ছে পাশের চা দোকানের অস্থায়ী কাউন্টার থেকে। ঘাটের পাশে মাটি ধসে গিয়ে অবস্থা আরও বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। গেঁওখালির ঘাটটি দিন কয়েক আগে রূপনারায়ণের জোয়ারের তোড়ে ভেঙে পড়ে। ফলে, সেখানেও বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের। গাদিয়াড়া ঘাটের স্ল্যাবগুলিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে তা ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে আশঙ্কা যাত্রীদের।
নুরপুর-গাদিয়াড়ার মধ্যে যাতায়াতকারী যাত্রীদের অভিযোগ, সকাল সাড়ে ছ’টা থেকে আটটা পর্যন্ত লঞ্চ চলে। সন্ধ্যার পর নুরপুরে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় লঞ্চ থেকে ওঠানামা করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। বর্ষায় ঘাট ব্যবহার করা আরও দুরূহ হয়ে উঠছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ দফতরের ওই ঘাট তিনটির মধ্যে লঞ্চ চলাচল দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত উত্তম রায়চৌধুরী বলেন, “ঘাট সংস্কার করার মতো টাকা আমাদের তহবিলে নেই। গাদিয়াড়া ঘাটটিতে ভাসমান জেটি করার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন। নুরপুর এবং গেঁওখালি ঘাট দু’টি সংস্কারের বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।”
নুরপুর ঘাটটি সংস্কারের ব্যাপারে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, “সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, ওরা দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।” পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনও গেঁওখালি ঘাটটির বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছে। হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, গাদিয়াড়া ঘাটে ভাসমান জেটি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.