প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। অথচ সেতুর অবস্থা সঙ্গীন। ১৯৭৪ সালে সেচ দফতরের তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছিল আন্দুলের মধ্য ঝোড়হাটের অন্তর্গত সরস্বতী নদীর উপরে এই সেতুটি। কিন্তু তারপর থেকে একবারও তা মেরামত বা সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ।
সেতুর রাস্তার জায়গায় জায়গায় উঠে গিয়েছে পাথর, বেরিয়ে পড়েছে লোহা। ধারের গার্ডওয়ালগুলিতেও সিমেন্ট ভেঙে লোহা বেরিয়ে পড়েছে। বাতিস্তম্ভে ঠিকমতো আলো জ্বলে না। ফুটপাথের এক জায়গায় স্ল্যাব ভেঙেছে। সেতুটি আন্দুলের ১১ নং লেভেল ক্রসিংয়ের খুবই কাছে হওয়ায় দিনে-রাতে যানবাহনের চাপ খুবই বেশি থাকে। এটির উপরে নির্ভরশীল মাশিলা, ঝোড়হাট, মধ্য ঝোড়হাট, রামচন্দ্রপুর, সাঁকরাইলের বাসিন্দারা। কাছেই অভয়াচরণ হাইস্কুল এবং সাঁকরাইল গার্লস স্কুল। জায়গাটি থেকে সাঁকরাইল থানাও খুব বেশি দূরে নয়। সেতুর সামনে দোকান তো আছেই, দু’বেলা হাটও বসে। |
ওই সেতুর পাশেই দোকান রয়েছে মোহন দাসের। তিনি বলেন, “সেতুতে ঠিক মতো আলো না থাকায় সমস্যা হয়। তা ছাড়া সংস্কারের অভাবে সেতু বেহাল। যাতায়াত করা বিপজ্জনক। বারবার পঞ্চায়েত প্রধানকে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না।” সেতুটি বাণীপুর-২ পঞ্চায়েতের অধীনে। ওই পঞ্চায়েতের প্রধান ত্রিপুরারি ঘোষ বলেন, “বেশ কয়েক বছর আগে শুনেছিলাম, সেতুটি সারানোর টাকা অনুমোদন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তারপরেও কোনও কাজই শুরু হয়নি। অন্য দিকে, ঝোড়হাট পঞ্চায়েতে সরস্বতী নদীর উপরে সেতুটি মেরামত হয়ে গেলেও এই সেতুটি আর মেরামত হয়নি। সেচ দফতরকেও জানানো হয়েছে।”
সাঁকরাইলের বিধায়ক শীতল সর্দার বলেন, “বিষয়টি সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। আশা করা যায়, ওরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।” ওই সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং হাওড়া নাজিরগঞ্জ ডিভিশনের সেচ দফতরের আধিকারিক রানা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সেতুটি তৈরির ব্যাপারে দফতর থেকে পরিকল্পিত খরচের হিসাব করা হয়েছিল। প্রযুক্তিগত অনুমোদনও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপর পাঁচ বার ই-টেন্ডার করা হলেও কোনও ঠিকাদার তাতে যোগ দেননি। বর্তমানে আবার নতুন করে পরিকল্পিত ব্যয়ের হিসাব তৈরি করা হয়েছে। শীঘ্রই নতুন করে ই-টেন্ডারের কাজ শুরু হবে।”
কিন্তু কেন কাজ নিতে চাইছেন না ঠিকাদারেরা? স্থানীয় এক ঠিকাদার হরিদাস বারুই বলেন, “সরকারি কাজে অনেক সময়ই টাকা পেতে দেরি হয়। একলপ্তে পুরো টাকা অনেক সময় পাওয়া যায় না। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের চাপ তো আছেই। কাজ শুরু করলে এত লোকজনকে টাকা দিতে হয় যে লাভ আর কিছু থাকে না।”
এই সমস্যা মিটিয়ে কবে শুরু হবে কাজ, সেই অপেক্ষাতেই বাসিন্দারা। |