এগারো বছরের এক বালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে ডোমজুড়ের শলপ কালীতলায়। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই ব্যক্তি পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্য দিকে, হাওড়ারই দাশনগরে এক কিশোরীকে অপহরণের চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাতেও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ডোমজুড়ের ঘটনায় পুলিশ সুভাষ রায় নামে এক যুবককে খুঁজছে। অভিযোগ, সে তার প্রতিবেশী ওই বালিকার বাড়ি গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। কাউকে বললে মেয়েটিকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। যদিও মেয়েটির মা বাড়ি ফিরে এলে মেয়েটি তাঁকে সব বলে দেয়। তিনি ডোমজুড় থানায় সুভাষের নামে বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটির মা ও বাবা দিন মজুরের কাজ করেন। মেয়েটির মা তাঁর মেয়েকে নিয়ে একাই থাকেন। মেয়েটির বাবা অন্য জায়গায় থাকেন। বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিদিনের মতোই মেয়েটি মা কাজে গিয়েছিলেন। অভিযোগ বিকেল চারটে নাগাদ ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে সুভাষ।
মেয়েটির মা বলেন, “ঘটনাটি জানার পরই আমি সঙ্গে সঙ্গে সুভাষের বাড়ি গিয়ে দেখি সুভাষ খাচ্ছে। আমি ওই ঘরের বাইরে থেকে শিকল তুলে দিয়ে প্রতিবেশী ও পুলিশকে খবর দিতে যাই। কিন্তু ফিরে এসে দেখি সুভাষ পালিয়েছে। সুভাষের স্ত্রীও ঘরে নেই।” মেয়েটির এক প্রতিবেশীর অভিযোগ, “সুভাষ মেয়েটিকে মাঝেমধ্যেই বিরক্ত করত। আমরা অনেকবার বারণ করেছি।”
এ দিকে বৃহস্পতিবার রাতেই শারীরিক পরীক্ষার জন্য মেয়েটিকে প্রথমে ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতালে ও পরে হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, হাওড়া জেলা হাসপাতালে মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে। তাকে ওই হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছে। হাওড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুখেন্দু হীরা বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্ত যুবক পলাতক। তাঁর খোঁজ করছে পুলিশ।”
অন্য এক ঘটনায় এক কিশোরীকে দিনের আলোয় অপহরণের চেষ্টা করল এক দল দুষ্কৃতী। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হলেও ধরা পড়েনি কেউ। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, তাঁরা রীতিমতো আতঙ্কিত। তাঁদের বক্তব্য, দুষ্কৃতীরা ধরা না পড়লে মেয়েটিকে পড়াশোনা বন্ধ করতে হবে। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার দাশনগরের বালটিকুরি কালীতলা এলাকায়। নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, এ দিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই কিশোরী বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাছেই একটি দোকানে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে দুটি মোটরবাইকে পাঁচ যুবক ওই ছাত্রীকে অনুসরণ করে। সকলেই মুখ ঢাকা হেলমেট পরে ছিল। গলির মধ্যে কিশোরীটিকে ঘিরে ধরে দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, টানাটানিতে নখের আঁচড় পড়েছে মেয়েটির হাতে। সে ভয়ে চিৎকার করতেই চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দাশনগর থানার পুলিশ। মেয়েটির বাড়ির লোকের অভিযোগ, এর আগে গত ১৩ জুন সকালেও একই দুষ্কৃতীদল ওই কিশোরীকে রাস্তায় ছুরি দেখিয়ে তাকে অপহরণের চেষ্টা করে। মেয়েটি সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় দুষ্কৃতীরা পালিয়েছিল। এলাকার লোকজন উদ্ধার করে মেয়েটিকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যায়।
এ দিন ঘটনার পরে হাওড়া জেলা হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই কিশোরী বলে, “অনেকদিন ধরে কিছু লোক আমার পিছু নিচ্ছে। আমি পড়াশোনা করতে পারছি না।” কিশোরীর বাবা বলেন, “আমার ধারণা আমার প্রতিবেশীদের মধ্যে কেউ এই ব্যাপারে জড়িত। আমার মেয়েকে খারাপ পথে নামানোর চেষ্টা করছে।” হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সদর নিশাত পারভেজ বলেন, “মেয়েটিকে অপহরণের চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। একটি দুষ্কৃতী দল এই কাজ করছে বলে অনুমান। চক্রটিকে ধরার চেষ্টা করছি।” |