|
|
|
|
মিছিলের ‘বিধিভঙ্গ’ আটকাল পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
মেট্রো চ্যানেলে সভা-জমায়েত আগেই বন্ধ করেছে সরকার। তবু সেখানেই জমায়েত করতে চাওয়ায় শেষ লগ্নে কিছুটা তাল কেটে গেল প্রতিবাদ মিছিলের। হল পুলিশের সঙ্গে একপ্রস্ত কথা কাটাকাটিও।
কামদুনি কাণ্ড-সহ রাজ্য জুড়ে নারী নিগ্রহ ও ধর্ষণের প্রতিবাদে শুক্রবারের মিছিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই ছিল পুলিশের কড়া নিরাপত্তা। মিছিলে হাঁটা নাগরিকেরাও ছিলেন অনেক সংযত। তবুও শেষ লগ্নে তাল কাটল কেন?
পুলিশ জানিয়েছে, মিছিল শেষে ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে জমায়েত হতে চেয়েছিলেন মিছিলকারীরা। কিন্তু ওই জায়গায় জমায়েত করার আইন না থাকায় পুলিশ তাঁদের আটকায়। রাস্তায় বসিয়ে দেওয়া হয় ব্যারিকেড। আইন না ভেঙে পুলিশকর্তারা মিছিলকারীদের রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের সামনে জমায়েত হতে বলেন। এর পরেই মিছিলকারীদের একাংশ সরকার ও পুলিশ-বিরোধী স্লোগান শুরু করেন। কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন কয়েক জন মিছিলকারী। তবে গোলমালটা বাক্য বিনিময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। মিছিলকারীরা রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে জড়ো হতে শুরু করায় গোলমালও থেমে যায়। |
|
মেট্রো চ্যানেলে পুলিশের ব্যারিকেড। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র |
পুলিশ সূত্রের খবর, মিছিলে যাতে নিরাপত্তার অভাব না হয়, সে ব্যাপারে গোড়া থেকেই সতর্ক ছিলেন লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা। উত্তর ও মধ্য ডিভিশনের একাধিক অফিসার-কর্মীকে মিছিলের দায়িত্বে মোতায়েন করা হয়। কলকাতা পুলিশের বিশেষ অতিরিক্ত কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম বলেন, “সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০ পুলিশকর্মী-অফিসারকে মিছিলের দায়িত্বে বহাল করা হয়েছিল।” লালবাজারের কর্তাদের সতর্কতার ছবিটা এ দিন দুপুর থেকেই অবশ্য নজরে পড়েছে।
দুপুর দেড়টা। কলেজ স্কোয়ারে তখন ধীরে ধীরে ভিড় বাড়ছে। বাড়ছে পুলিশের সংখ্যাও। কলেজ স্ট্রিটের দু’প্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ডিসি (নর্থ) গৌরব শর্মা এবং সশস্ত্র পুলিশের সপ্তম ব্যাটেলিয়নের ডিসি সুজয় গঙ্গোপাধ্যায়। এর পরে পুলিশের ভিড় আরও বাড়তে থাকে। ওই এলাকায় কর্তব্যরত এক পুলিশ অফিসার বলেন, “উত্তর ডিভিশনের বিভিন্ন থানা থেকে একের পর এক পুলিশের দল আসছে। এর মধ্যেই প্রায় দু’শো জন মোতায়েন রয়েছেন।”
বিকেল তিনটের পরে মিছিল শুরু হলে কলেজ স্ট্রিট, রফি আহমেদ কিদোয়াই, এস এন ব্যানার্জি রোডের দু’ধার পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ হয়ে যায়। ধর্মতলায় ডিসি (সেন্ট্রাল)-এর নেতৃত্বে ছিল পুলিশের আরও একটি বড় দল। জমায়েতে মোতায়েন করা হয়েছিল সাদা পোশাকের পুলিশও।
বিকেল সাড়ে চারটে। মিছিলের সামনের অংশ সবে ধর্মতলা পৌঁছেছে। তখনই মেট্রো চ্যানেলে যেতে বাধা দিল পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গেই ধর্মতলার মোড়ে দাঁড়িয়ে পড়ল মিছিলের ম্যাটাডর, সঙ্গে মিছিলকারীরাও। এর পরে বাকবিতণ্ডার শেষে মিছিলকারীদের একাংশ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ ও ওয়াই রোডে জমায়েত হলেও বেশির ভাগ অংশই ডোরিনা ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। এর ফলে ধর্মতলা এলাকায় আধ ঘণ্টারও বেশি সময় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে। পাঁচটার পর থেকে মিছিলকারীরা ফিরে যেতে থাকেন। তখন ভিড় হটিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু হয়।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন মিছিলের জেরে কলেজ স্ট্রিট, সূর্য সেন স্ট্রিট, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, রফি আহমেদ কিদোয়াই রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড, লেনিন সরণি, জওহরলাল নেহরু রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছিল। এক ট্রাফিক-কর্তা জানান, কলেজ স্ট্রিট থেকে মিছিল বেরিয়ে যাওয়ার পরেই ওই এলাকার রাস্তায় যান চলাচল শুরু হয়। তবে মধ্য কলকাতার সব রাস্তায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। |
|
|
|
|
|