আদালতের নির্দেশ হাতে নিয়ে বৃদ্ধা মাকে এক বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে আনলেন তাঁর ছেলে। বুধবার বিকেলে একবালপুরের ওই হাসপাতাল থেকে ওই মহিলা ছাড়া পান।
আলিপুর থানা সূত্রের খবর, একবালপুরের অরফ্যানগঞ্জ রোডের বাসিন্দা, বিধবা কলাবতী দেবীর (৬০) বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুলে ফোঁড়া হয়েছিল। সেটির অস্ত্রোপচারের জন্য তাঁর ছোট ছেলে কানাইয়া প্রসাদ প্রথমে মাকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করান। তাঁদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ। ওই নার্সিংহোমে সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় বৃদ্ধাকে ভর্তি করা হয় একবালপুরের ওই হাসপাতালে। কানাইয়া জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে বলেছিলেন, মায়ের পায়ে পচন ধরেছে। অস্ত্রোপচার করে তা ঠিক করতে হবে। খরচ ৫০ হাজার টাকা। ওই যুবকের দাবি, তিনি ৪০ হাজার টাকা হাসপাতালে জমাও দেন। কানাইয়ার অভিযোগ, ৭ জুন অস্ত্রোপচারের পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকার বিল মেটাতে বলেন। তাঁকে বলা হয়, টাকা না মেটালে তাঁর মাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে না। কানাইয়ার দাবি, তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, যে কোনওমতে আরও ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করতে পারবেন। তাতে কর্তৃপক্ষ রাজি হননি। |
কানাইয়া বিষয়টি রাজ্য যুব কংগ্রেসের সভাপতি রাকেশ সিংহকে জানান। রাকেশ এ দিন জানান, মহিলার পরিস্থিতির কথা জানানো হয় দক্ষিণ কলকাতা আইএনটিইউসি-র সভাপতি আমির পারভেজকে। ওই ব্যক্তি আলিপুর আদালতে মামলা করে জানান, একবালপুরের ওই হাসপাতাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানছে না। এ দিন আলিপুর আদালতে ওই মামলার শুনানি ছিল। আদালতে আমির এ দিন জানান, সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে রয়েছে, মেট্রোপলিটান শহরে বেসরকারি হাসপাতালে ১০ শতাংশ বিপিএল তালিকাভুক্ত রোগী কম খরচে চিকিৎসা করাতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কপিও আদালতে জমা দেওয়া হয়।
আদালত আলিপুর থানার পুলিশকে গোটা ঘটনার তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে ওই বৃদ্ধাকে অবিলম্বে হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করার ব্যবস্থা করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে রাকেশ সিংহ কানাইয়াকে নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মধ্যস্থতায় বসেন। সে সময়ে বাইরে তাঁর দলের শ’খানেক সমর্থক ওই মহিলাকে ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে কটূক্তিও করতে থাকেন তাঁরা।
কানাইয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান, তিনি ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করতে পেরেছেন। তার বেশি টাকা তিনি দিতে পারবেন না। ৫০ হাজার টাকা তিনি জমাও দেন এ দিন। বিকেলে আদালতের নির্দেশ নিয়ে আলিপুর থানার পুলিশ হাসপাতালে যায় এবং বৃদ্ধাকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
হাসপাতালের তরফে মারিও মার্টিন লুইস বলেন, “ওই রোগীকে নিয়ে একটু সমস্যা হয়েছিল। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আর কোনও সমস্যা নেই।”
রাকেশ সিংহ বলেন, “হাসপাতাল ভাঙচুর না করেও আদালতের মাধ্যমে গরিব, বিপিএল তালিকাভূক্ত কোনও রোগীর চিকিৎসা যে সম্ভব, এই ঘটনা তা প্রমাণ করল।”
|
আতঙ্কে রোগী
নিজস্ব সংবাদদাতা • ধুবুরি |
ধুবুরি সদর হাসপাতালের শল্য বিভাগের ছাদের চাঙর খসে পড়ায় হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। হতাহতের খবর নেই। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুধবার সদর হাসপাতালের ৪ তলার শল্য বিভাগের ২১ নম্বর বেডের উপরে ছাদের কিছু অংশ খসে পড়ে। রোগী শৌচাগারে যাওয়ায় বেঁচে যান। সুপার আবদুল মতিন শেখ জানান, ২০১১ সালে ৮ কোটি টাকা খরচ করে ভবন তৈরি হয়। কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হয়েছে। |