রক্তের সঙ্কট মেটাতে রক্তদান হাসপাতালেই
প্তাহখানেক ধরেই সঙ্কট ছিল। কিন্তু গত দু’দিনে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কটি কার্যত রক্তশূন্য হয়ে যায়। রক্তের সঙ্কট মেটাতে তাই জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার-সহ চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা রক্তদান করলেন। বুধবার হাসপাতালের বারান্দায় এমন বেনজির দৃশ্য দেখে উৎসাহী আরও কয়েকজন রক্ত দিতে এগিয়ে এলেন। সকাল এগারোটা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত ৪২ জন রক্ত দেন।
ব্লাড ব্যাঙ্কগুলির সহায়তায় বিভিন্ন ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে থাকে। কিন্তু ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় ক্লাবগুলি নির্বাচনী প্রচার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কারণ, বেশিরভাগ ক্লাবগুলির পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতারা। এই পরিস্থিতিতে গত তিন সপ্তাহ ধরে রক্তদান শিবির হয়নি। ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক আলো হাঁসদা বলেন, “গ্রীষ্মে এমনিতেই কিছুটা রক্ত সঙ্কট হয়। এ বার নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায়, সে ভাবে রক্তদান শিবির হচ্ছে না। গত ১ জুন মেদিনীপুরে একটি রক্তদান শিবির থেকে ঝাড়গ্রাম ব্লাড ব্যাঙ্ক ২৩ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করতে পেরেছিল। তারপর আর কোনও শিবির হয়নি। ফলে মজুত রক্ত শেষ হয়ে যায়। গত দু’দিন রক্তের চরম অভাব দেখা দেয়।”
রক্ত দিচ্ছেন চিকিৎসক-কর্মীরা।—নিজস্ব চিত্র।
এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্ত সঙ্কট মেটাতে কয়েকদিন আগে জরুরি বৈঠক ডাকেন ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপবাবু। সিদ্ধান্ত হয়, হাসপাতালের বারান্দায় শিবির করে চিকিৎসক ও নার্সরা রক্তদান করবেন। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ হাসপাতালে রক্তদান শিবিরটি শুরু হয়। শুরুতে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপ কাঁড়ার, অস্থি বিশেষজ্ঞ বাণীব্রত চন্দ্র, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিমাংশু রায়, শল্য চিকিৎসক গৈরিক মাজি, চিকিৎসক প্রসূন ঘোষ, সুদীপ রায়, অপূর্ব দাসেরা রক্তদান করেন। হাসপাতালের নার্স টুম্পা চট্টোপাধ্যায়, মধুমালা কুণ্ডু, হেনা সামন্তদের পাশাপাশি ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মী শুভদীপ মণ্ডল ও জয়দীপ শর্মাদের রক্তদান করতে দেখে এগিয়ে আসেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর পরিজনেরা। এমনই এক জন নয়াগ্রামের সুবোধ মাণ্ডি বলেন, “চিকিৎসক-নার্সদের রক্তদান করতে দেখে নিজেই এগিয়ে এসে রক্ত দিলাম।” হাসপাতালে অডিট করতে আসা দীপক ভৌমিক, আশিস মণ্ডল ও গৌতম মণ্ডলেরাও রক্ত দেন। আশিসবাবু বলেন, “চিকিৎসক-নার্সরা রক্ত দিচ্ছেন দেখে আমরাও বসে থাকতে পারলাম না।”
দিনের শেষে উজ্জ্বল হয় আলোদেবীর মুখ। তাঁর কথায়, “যে পরিমাণ রক্ত সংগ্রহ হয়েছে, তাতে আগামী কয়েকটা দিন চলে যাবে। তার পর আগামী ২২ জুন থেকে পর পর কতগুলি রক্তদান শিবির হচ্ছে। ওই সব শিবিরের উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করার জন্য আমরা ডাক পেয়েছি। আগামী ২২ জুন খড়্গপুরে সিআরপি’র উদ্যোগে রক্তদান শিবির হচ্ছে। ২৭ জুন খড়্গপুরে একটি সংস্থার উদ্যোগে শিবির হবে। ৩০ জুন ‘হুল দিবস’ উপলক্ষে ঝাড়গ্রামের সুভাষপল্লি এলাকায় একটি রক্তদান শিবির হবে। সম্ভাব্য শিবিরের তালিকাটি দীর্ঘ।”
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপ কাঁড়ার বলেন, “অন্যদেরও রক্তদানে উৎসাহিত করা গিয়েছে, এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.