পুরসভায় সম্পত্তিকর বাবদ কারও বাকি ১০ কোটি টাকা, কারও ২ কোটি, কারও ১ কোটিরও বেশি। বার বার নোটিস দিয়েও টাকা মিলছে না। অবশেষে ওই সব বিল্ডিংয়ের দরজায় নোটিস ঝুলিয়ে দিল পুর প্রশাসন। কার কত টাকা বাকি তা-ও লিখে দেওয়া হয়েছে ওই নোটিসে। তাতেও কাজ না হলে পুর আইন অনুসারে সংশ্লিষ্ট বিল্ডিংয়ের অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে।
বুধবার পুরসভার সম্পত্তিকর দফতরের এক অফিসার জানান, এ দিন উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার ৬টি বিল্ডিংয়ে নোটিস ঝোলানো হয়েছে। হেমন্ত বসু সরণির একটি ভবনের মালিকের ১০ কোটি টাকা সম্পত্তিকর বকেয়া। দক্ষিণ কলকাতার সরোজিনী নাইডু সরণির একটি হোটেলের বাকি প্রায় এক কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। পুর সূত্রের খবর, ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বরত অফিসার হোটেলের প্রবেশপথে ৯টি নোটিস ঝুলিয়ে দেন। |
বকেয়া সম্পত্তিকরের নোটিস দক্ষিণ কলকাতার এক হোটেলে। বুধবার।—নিজস্ব চিত্র |
উত্তর কলকাতার তারাচাঁদ দত্ত স্ট্রিটের একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পুরসভার পাওনা এক কোটিরও বেশি। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ওই টাকা বকেয়া। পুরসভা থেকে বার বার ওই সব বিল্ডিংয়ের মালিককে টাকা মেটানোর কথা বলা হয়েছে।
অভিযোগ, তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েও টাকা মেটাননি। মঙ্গলবার এ নিয়ে পুরসভার বৈঠক হয়। সেখানেই ওই সব বাড়িগুলিতে নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এক পুর অফিসারের মন্তব্য, “বিল্ডিং কর্তৃপক্ষের সুনাম নষ্ট করতেই ওই নোটিস ঝোলানো হয়।” তিনি জানান, নোটিস লাগানোর পরেই একটি সংস্থার কর্তারা পুরসভায় ছুটে আসেন। এ ক্ষেত্রে বকেয়ার ৬০ শতাংশ মেটালে তবেই ওই নোটিস সরানো হয়। ওই সংস্থা এ দিন তা দিতে পারেনি। তবে বৃহস্পতিবারের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
নোটিস দেওয়ার পরেও টাকা না মেটালে কী হতে পারে? পুরসভার এক কর্তা বলেন, “পুর আইন বলে সংশ্লিষ্ট বিল্ডিং মালিকের বিরুদ্ধে ডিসট্রেস ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। অর্থাৎ সেই বিল্ডিংয়ের অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়ে থাকে। বাজেয়াপ্ত সামগ্রী তুলে আনতে পুরসভার জঞ্জাল দফতরের লরি নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে থাকে পুলিশও।” তিনি জানান, ২০১১ সালের জুলাইয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি বাজারের বিরুদ্ধে ওই ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছিল। ২৫ কোটিরও বেশি টাকা বকেয়া ছিল বিল্ডিং কর্তৃপক্ষের। পুলিশকে নিয়ে পুরকর্মীরা অস্থাবর সামগ্রী তুলে আনেন। টাকা না মেটালে এ ক্ষেত্রেও তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন পুর অফিসারেরা। |