ফারহান আখতার অভিনীত ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ ছবিটি নাকি পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বুধবার অন্তত এমন গুজবই শোনা যাচ্ছিল দেশের আনাচেকানাচে। রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা পরিচালিত ছবিটির একটি সংলাপকে ঘিরে নাকি পাকিস্তান সেন্সর বোর্ডের আপত্তি!
যদিও পাক সেন্সর বোর্ডের একটি সূত্র বলছে, পাকিস্তানে দেখাতে চেয়ে এখনও অবধি আবেদনই করেনি ভাগ মিলখা ভাগ। ফলে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নই উঠছে না।
গুজবটা অবশ্য খোদ মিলখা সিংহের কানেও পৌঁছেছে। এবং শুনে তিনি মোটেই খুশি নন। মুম্বই থেকে আনন্দবাজারকে বললেন, গোটা ছবিটি না দেখে এই রকম কোনও সিদ্ধান্তে আসার মানেই হয় না। কন্যা সোনিয়া সঙ্গে ছিলেন। তিনি জানান, ছবির ট্রেলরে একটা সংলাপ শুনে বিতর্ক তৈরি করা অনর্থক। সংলাপে আছে, মিলখা বলছেন, ‘মুঝসে নহি হোগা। ম্যয় পাকিস্তান নহি জাউঙ্গা!’ কিন্তু তার প্রেক্ষিতটা মনে রাখা দরকার, বলছেন সোনিয়া। |
দেশভাগের সময় নিজের চোখের সামনে দেখেছিলেন বাবা-মায়ের উপর অত্যাচার। খুন হতে দেখেছিলেন আত্মীয় পরিজনকে। স্মৃতিটা গভীর ভাবে দাগ কেটেছিল মিলখার মনে। মিলখা বলেন, “নিজের বাবার কথা মাথায় রেখেই চলে আসি ভারতে।” তার পর থেকে আর পাকিস্তানে যেতে চাইতেন না। দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে অনেক বার পাকিস্তানি অ্যাথলিটদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন পাকিস্তানি স্প্রিন্টার আবদুল খালিক।
কিন্তু ১৯৬০ সালে যখন জওহরলাল নেহরু মিলখাকে লাহৌরে খেলতে যেতে বলেন, মিলখা প্রথমে সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। দাঙ্গা-দেশভাগের স্মৃতি তখনও তাড়া করছিল তাঁকে। সে কারণেই বলেছিলেন, ‘মুঝসে নহি হোগা। ম্যয় পাকিস্তান নহি যাউঙ্গা!’
কিন্তু শেষ পর্যন্ত নেহরুকে ‘না’ করতে পারেননি মিলখা। রাজি হয়ে যান লাহৌরে যেতে। ওয়াগা থেকে হুডখোলা জিপে যেতে যেতে ভিড় করে আসছিল পুরনো কথা। “অ্যান্ড হি র্যান। দৌড়ের শেষে জেনারেল আয়ুব খান বাবাকে বলেন: ‘তুম দৌড়ে নহি হো, তুম উড়ে হো।’ সেই থেকেই বাবা ‘ফ্লাইং শিখ’ উপাধি পেয়েছিলেন। এ সব না জেনে কেন মিছিমিছি বিতর্ক? আমরা সবাই চাই ছবিটি পাকিস্তানে মুক্তি পাক,” বলছেন সোনিয়া।
কিন্তু পাকিস্তান কী বলছে? সিন্ধ সেন্সর বোর্ডের সদস্য হাসান জায়েদি করাচি থেকে আনন্দবাজারকে জানালেন, গত তিন মাস হল পাকিস্তানে সেন্সর বোর্ড একটা ধোঁয়াশায় রয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি প্রদেশের নিজস্ব সেন্সর বোর্ড থাকার কথা। কিন্তু একমাত্র সিন্ধ সেন্সর বোর্ডটাই সঠিক ভাবে কাজ করছে। কিছু কিছু ছবি ইসলামাবাদের পুরনো সেন্সর বোর্ডেও পাঠানো হচ্ছে। হাসান বলেন, “আমি যত দূর জানি ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ ছবিটি সিন্ধ সেন্সর বোর্ডের কেউ এখনও দেখেননি। তবু আপনি কুড়ি মিনিট পর আর এক বার ফোন করলে আমি অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে কথা বলে আরও তথ্য দিতে পারব।”
পরের বার ফোন করার পরে হাসানের বক্তব্য, পাকিস্তানে ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ ছবিটির কোনও সেন্সরশিপ হয়নি এখনও। তাঁর দাবি, “এ দেশে ভারতীয় ছবির ক্ষেত্রে দু’ধাপে সেন্সরশিপ হয়। প্রথমে এক জন পাকিস্তানি ডিস্ট্রিবিউটর (যিনি ভারতীয় ছবি আমদানি করতে চান) আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রকের কাছে আবেদন করেন। মন্ত্রক ছাড়পত্র (এনওসি) দিলে তবেই ছবিটি সেন্সর বোর্ডে যায়। আমার সূত্রের খবর যে, এখনও ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ আমদানি করার জন্য কেউ দরখাস্তই করেনি।” পাকিস্তানে ভারতীয় ছবি মুক্তি পাওয়া নিয়ে কি কোনও সমস্যা হতে পারে? উত্তরে হাসান জানান, “তেমন মনে হয় না। আমাদের দেশে ছবি প্রদর্শন করার দু’দিন আগে সেন্সর করা হয়। ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ যদি ভারতে ১২ জুলাই মুক্তি পায়, তা হলে পাকিস্তানে এত তাড়াতাড়ি সেন্সর বোর্ডে সেটা দেখানোর প্রশ্ন উঠছে কোথায়?”
ছবির চিত্রনাট্য ও সংলাপ লেখক প্রসূন জোশী বর্তমানে একটি বিজ্ঞাপনী ছবির উৎসবে যোগ দিতে কান-এ রয়েছেন। সেখান থেকেই জানালেন, “এই ছবিতে পাকিস্তান বিরোধী কোনও কিছুই দেখানো হয়নি। বরং পুরো ব্যাপারটাই খুব পজিটিভ।
ছবিটা মুক্তি পেলে সব জল্পনার অবসান হবে।”
|
দোলচে, গাবানার জেল
সংবাদসংস্থা • রোম |
ম্যাডোনা থেকে ঐশ্বর্যা রাই, সোনম কপূর থেকে কাইলি মিনোগ..। পৃথিবীর তাবড় সেলিব্রিটি যাঁদের তৈরি পোশাক পরে আসর মাতিয়েছেন, ইতালির সেই বিখ্যাত দুই ডিজাইনার দমিনিকো দোলচে এবং স্তেফানো গাবানা কর ফাঁকির দায়ে জেলে যাচ্ছেন। আদালতের রায় দুনিয়াখ্যাত ব্র্যান্ড ‘দোলচে অ্যান্ড গাবানা’র এই জুটির বিরুদ্ধে গিয়েছে। বুধবার তাঁদের এক বছর আট মাসের কারাদণ্ড হয়েছে। দোলচে-রা কেউই অবশ্য আদালতে ছিলেন না, কোনও প্রতিক্রিয়াও জানাননি। তাঁরা আপিল করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
|