|
|
|
|
আসল মিলখার কড়া নির্দেশ পর্দার মিলখাকে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পর পর দু’দিন দুই মিলখা সিংহ ঘুরে গেলেন কলকাতায়!
শুক্রবার এসেছিলেন রুপোলি পর্দার মিলখা ফারহান আখতার —যিনি ‘উড়ন্ত শিখ’কে নিয়ে তৈরি ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ সিনেমার নাম-ভূমিকায় রয়েছেন।
এক দিন পর শনিবার এলেন স্বয়ং মিলখা সিংহই—ক্রীড়া সাংবাদিকদের দেওয়া লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার নিতে ।
অনুষ্ঠানে তারকার মেলায় হাজির ছিলেন বাংলার সর্বকালের সেরা স্পোর্টস আইকন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ছিলেন ভারতীয় ফুটবলের মুখ ভাইচুং ভুটিয়া। কিন্তু অনুষ্ঠানে ষাটের রোম অলিম্পিকের মহানায়ক পৌঁছতেই যেন পুরো আবহাওয়া বদলে গেল। মঞ্চে উঠে সৌরভ ফিরে গিয়েছিলেন তাঁর ছোট বেলায়। ভাইচুং আটকে গেলেন ফুটবলেই।
কিন্তু মিলখার কাছে যত প্রশ্ন হল, তার মধ্যে সবথেকে বেশি আগ্রহ ছিল তাঁকে নিয়ে তৈরি সিনেমাকে ঘিরেই। দীর্ঘ চেহারার সুঠাম মিলখাও ছবি নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। ক্যামেরার পেছনের এমন সব রহস্য ফাঁস করলেন যা চমকপ্রদ। বললেন, “ফারহান আমার কাছে টিপস নিয়েছে। আমি কোন স্টাইলে দৌড়তাম বা কী কী করতাম দৌড়নোর আগে-পরে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ জেনে গিয়েছে। ও খুব ভাল অ্যাথলিট। ফলে আমার টিপসগুলো খুব সহজে ধরে নিয়েছে।” |
তিন নক্ষত্র
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মিলখা সিংহ ও ভাইচুং ভুটিয়া।
টাউন হলে ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের অনুষ্ঠানে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
|
তা সত্ত্বেও স্পষ্ট কথা বলে বার বার বিতর্কে জড়ানো মিলখা যথেষ্ট টেনশনে আছেন। “দিল্লির নেহরু স্টেডিয়ামে গিয়ে ছবি কেমন হচ্ছে তা দেখে এসেছি। পরিচালককে বলে দিয়েছি আমার জীবনের সঙ্গে যদি ছবি না মেলে তা হলে কিন্তু আমি সেটা চালাতে দেব না।”
৭৭ বছর বয়সেও আগের মতোই চনমনে। মঞ্চে বসে তাঁর জন্য গাওয়া গান শুনলেন মন দিয়ে। দিলেন হাততালিও। সৌরভ-ভাইচুংয়ের সঙ্গে মিশে গেলেন অনায়াসেই। আর মঞ্চে উঠে বললেন, “আমার জীবদ্দশায় দেখে যেতে চাই যে, আমার না পাওয়ার যন্ত্রণা অন্য কোনও অ্যাথলিট মুছে দিয়েছে পদক জিতে।”
তাঁর ছেলে মাত্র এক টাকায় তাঁর জীবনী সিনেমার জন্য বিক্রি করেছেন। কিন্তু শর্ত দেওয়া আছে, ছবি থেকে প্রাপ্ত অর্থের কুড়ি শতাংশ মিলখার নামে তৈরি ফাউন্ডেশনে দান করতে হবে। এ দিন তিনি তোপ দাগলেন অনেকের বিরুদ্ধে। “আমি বহু পরিশ্রমের পর সাফল্য পেয়েছি। এখনকার ছেলেমেয়েরা এক দু’বছরের চেষ্টাতেই পদক পেতে চায়। সরকার, আইওএ কিছু করছে না।”
ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের বর্ষসেরা পুরস্কার অনুষ্ঠানে মিলখার হাতে তুলে দেওয়া হল মানপত্র। রসগোল্লা-সহ নানা উপহার তুলে দেন স্পনসরদের তরফে ঋত্বিক দাস। মিলখাকে সম্মান জানাতে মঞ্চে তাঁকে বসিয়ে গান পরিবেশন করেন রাঘব চট্টোপাধ্যায়।
বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হল সৌরভ এবং ভাইচুংকে। তাঁদের হাতেও তুলে দেওয়া হল মানপত্র ও অন্যান্য পুরস্কার। সৌরভ স্মৃতিচারণ করছিলেন, “১৪ বছর বয়সে বাবার হাত ধরে প্রথম এই ক্লাবে পুরস্কার নিতে এসেছিলাম। তখন সেই পুরস্কার আমাকে দারুণ উদ্বুদ্ধ করেছিল। এরপর থেকে এই মঞ্চে অনেক বার পুরস্কৃত হয়ছি। তা বিভিন্ন সময়ে আমাকে বিভিন্ন ভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে।’’ সৌরভ ক্রিকেট নিয়ে তেমন কিছু না বললেও ভাইচুং ভুটিয়া কিন্তু বললেন, “ইস্টবেঙ্গল যদি আই লিগ না পায়, তা হলে তাদের এএফসি কাপের দিকে মন দেওয়া উচিত।”
প্রবীণ ক্রীড়া সাংবাদিক শ্যামসুন্দর ঘোষের সাংবাদিক জীবনের পঞ্চাশ বছর হল এ বার। তাঁকেও সম্মানিত করা হয় এ দিন। তুলে দেওয়া হল মানপত্র ও অন্যান্য পুরস্কারের সঙ্গে কুড়ি হাজার টাকার চেক।
ব্লু চিপ-সিএসজেসি বর্ষসেরা পুরস্কার নিতে এসেছিলেন ফুটবলার র্যান্টি মার্টিন্স, রহিম নবি, লালরিন্দিকা, শু্যটার মাম্পি দাস, টেবল টেনিসের কীর্তিকা সিংহ রায়, হকির গুরুপ্রতাপ সিংহ, টেনিসের অমৃতা মুখোপাধ্যায়, সাঁতারের সানু দেবনাথ, ভলিবলের রুকসানা খাতুনরা। তবে চোট সারাতে মুম্বই চলে যাওয়ায় বর্ষসেরা ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্ল আসতে পারেননি। |
|
|
|
|
|