|
|
|
|
এক বছর আগেও কিন্তু ছিল উপহাসের সম্বোধন |
সিএসকে-র ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতেই এখন বাজারে ‘স্যর জাডেজা’
রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় • চেন্নাই |
‘...স্যর জাডেজা একবার ডিফেন্স করার জন্য একটা বাচ্চা ছেলেকে প্রবল বকাঝকা করেছিলেন। ছেলেটাকে সবাই এখন চেনে ক্রিস গেইল বলে!’
‘...স্যর জাডেজা কোনও এক সময় বলের পালিশ ফেরানোয় মন দিয়েছিলেন। বলটার নাম চাই? কোহিনুর!’
‘...আন্তর্জাতিক অ্যাটমিক ক্লক চলে স্যর জাডেজার টাইমিংয়ের হিসেবে!’
ফেসবুক-টুইটার বিশ্বের যাঁরা বাসিন্দা, উপরোক্ত রসিকতাগুলো তাঁদের এতটুকু অপরিচিত নয়। বরং অতি পরিচিত। ফেসবুকে তাঁকে নিয়ে আস্ত একটা পেজ আছে। আছে সীমাহীন রসিকতা। টুইটারে তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা করেন স্বয়ং মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। গুগল সার্চ দিলে স্যর আইজ্যাক নিউটন বা স্যর ডন ব্র্যাডম্যান নন, তাঁর নামটাই অপশন হিসেবে উপস্থিত হয় সর্বাগ্রে।
কিন্তু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট বা গুগলকোথাও দেখাবে না রবীন্দ্র জাডেজাকে ‘স্যর’ উপাধিতে ভূষিত করার পিছনে লুকিয়ে আছে ব্যবসায়িক মগজাস্ত্র। দেখাবে না, ‘স্যর জাডেজা’-কে বাজারে ছেড়ে চেন্নাই সুপার কিংসের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’-র সেনসেক্সকে কী ভাবে মগডালে তুলে দেওয়া হচ্ছে!
সোজা বাংলায়, এক সময় যা ছিল উপহাসের উক্তি, আজ তা চতুর বিজনেস স্ট্র্যাটেজি। এবং ‘স্যর জাডেজা’-কে নিয়ে যাবতীয় রসিকতার জন্মও সম্প্রতি ফেসবুকে নয়। সেটা এক বছর আগে। চেন্নাইয়ে। খোদ সিএসকে-র শহরে। আর জন্মের প্রেক্ষাপটে মোটেও নিরামিষ হাসি-ঠাট্টা নেই। উল্টে আছে শ্লেষ, বিদ্রুপ আর বিরক্তির ককটেল!
ঘটনাটা কী? |
|
শনিবার সুপার কিংসের শহরে ঢুঁ মেরে যা জানা গেল, তা অদ্ভুত শোনাতে পারে। জাডেজাকে নিয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কির সূত্রপাত নাকি আজ নয়, এক বছর আগের আইপিএল নিলামকে ঘিরে। ২০১২-র যে নিলামে জাডেজাকে সাত কোটি টাকায় কেনে চেন্নাই সুপার কিংস। সিএসকে সমর্থকদের একটা বড় অংশ ছাড়াও আরও অনেকেরই যে সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক মনে হয়েছিল। বলাবলি চালু হয়ে যায়, এত দাম দিয়ে কিনে লাভ হবে কতটা? তামিলনাড়ু ক্রিকেট কর্তারাও কেউ কেউ জাডেজাকে নিয়ে খুব সন্তুষ্ট ছিলেন না। আইপিএল ফাইভে জাডেজার ব্যর্থতার পর সমালোচনা আরও তীব্র আকার নেয়। এ বছর তাঁকে এক বার ছেড়ে দেওয়ার কথাও উঠেছিল। এবং চেন্নাই সমর্থকরাও রাতারাতি জাডেজাকে ‘স্যর জাডেজা’ বলে ডাকতে শুরু করে দেন! যা আদতে বিদ্রুপের সম্বোধন। চেন্নাই টিমেরও একটা অংশের নাকি পছন্দ ছিল না জাডেজাকে। সরাসরি কেউ কিছু বলতে পারেননি। কারণ স্বয়ং সিএসকে ক্যাপ্টেনের তিনি বরাবরের ‘গুডবুকে’।
বছর ঘুরেছে। আইপিএল ফাইভ শেষ হয়ে এখন পেপসি আইপিএলের মাঝপথ। এবং সময়ের সঙ্গে পাল্টেছে জাডেজার পারফরম্যান্স গ্রাফ। ইডেনে কেকেআর-সহ দু’টো কঠিন ম্যাচ একা বার করেছেন। এবং রাতারাতি টিমের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ বাড়াতে সিএসকে ম্যানেজমেন্ট অনেকটাই ‘স্যর জাডেজা’-র শরণাপন্ন।
কী রকম?
জানা গেল, গত পাঁচ বারের চেয়ে এ বার অনেক বেশি করে বিপণনের দিকে মন দিয়েছে সিএসকে। সমর্থকদের জন্য প্রচুর প্রতিযোগিতা হচ্ছে। ‘কিংস ক্লাব’ খোলা হয়েছে। ঢেলে সাজানো হয়েছে টিমের ‘হোমপেজ’। ধোনি-হাসিদের নিত্যনতুন ছবি তো বটেই, ‘স্যর জাডেজা’-কে নিয়ে নতুন ‘জোকসের’ আপডেট যেখানে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে মাঝেমধ্যে। যাতে কৌতুক যোগ হয়ে টিমের আকর্ষণ আরও বাড়ে। চেন্নাইয়ের ম্যাচ পড়লেই তাই জায়ান্ট স্ক্রিনে ‘স্যর জাডেজা’-র কীর্তিকে মুহুর্মুহু টুপি খুলে সেলাম, ছয় মারলে সব নিয়ে ভাসছে ‘ফ্রম স্যর উইথ লাভ’! সাংবাদিক সম্মেলনেও জাডেজার ‘স্যর’ উপাধি নিয়ে প্রশ্ন এখন বাঁধাধরা।
সিএসকে-র দর্শনটা খুব পরিষ্কার, ধোনি ছাড়াও চেন্নাইয়ের আর্কষণের নতুন মুখ তৈরি করা। আর হাতের কাছে যখন ‘স্যর জাডেজা’ আছেন, তখন আর ভাবা কেন?
|
প্লে-অফ দিল্লিতে |
আইপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ার ও এলিমিনেটর ম্যাচ চিপক থেকে সরে গেল কোটলায়, ২১ ও ২২ মে। শ্রীলঙ্কানরা চেন্নাইয়ে খেলতে পারবেন না বলে ম্যাচ সরানো। গ্রুপ পর্বে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস একে থাকায় তাদের হোম গ্রাউন্ড কোটলায় ম্যাচ হচ্ছে। ২৪ মে অন্য প্লে-অফ এবং ২৬ মে-র ফাইনাল ইডেনে। |
|
|
|
|
|