মামা-ভাগ্নে প্রতিপক্ষ ভোট-ময়দানে
মামার পায়ে বল মানে ভাগ্নে বসে দর্শকাসনে। তা সে জেলা বা রাজ্যের যে কোনও ফুটবল মাঠই হোক না কেন, ভাগ্নে উপস্থিত। মাঠে ভাগ্নে না থাকলে, মামার পায়েও বল সরে না।
মাঠে মামা-ভাগ্নে একসঙ্গে হলেও, ভোটের ময়দানে দু’জনের অবস্থান দু’দিকে। এ বারের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে মামা সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন, ভাগ্নে তৃণমূলের। লড়ছেন একই আসনে। শামুকতলা পঞ্চায়েতের পটটোলা কেন্দ্রের দুই প্রার্থী রবার্ট টুডু এবং জোনাস লাকড়া এক সুরে দাবি করেছেন, রাজনীতির লড়াই ওঁদের সম্পর্কের বৃত্তের বাইরে থাকবে। একই গ্রামে বাড়ি মামা রবার্ট আর ভাগ্নে জোনাসের। দু’জনেই কৃষিজীবী। গ্রাম পঞ্চায়েতের পাটগোলা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী রয়েছে। তবে এলাকাবাসীর নজর কেড়েছেন মামা-ভাগ্নেই।
রবার্ট টুডু ও জোনাস লাকড়া।
কেন মামা-ভাগ্নের লড়াই নজর কাড়া? বয়সে খুব একটা ব্যবধান নেই দু’জনের। মামার বয়স ৪৬, আর ভাগ্নের ছত্রিশ পেরিয়েছে। বন্ধুর মতোই মেশেন দু’জনে। নতুন হিন্দি ছবি এলে শহরের বলে একসঙ্গে সিনেমা দেখতেও যায়। বাজার থেকে সাইকেল চালিয়ে ফিরছেন মামা আর ব্যাগ ভর্তি শাক সবজি ধরে সাইকেলের পেছনে বসে রয়েছেন ভাগ্নে, এ দৃশ্য গ্রামের নিত্যদিনের। মামার দল ফুটবল চ্যাম্পিয়ান হলে, পিকনিকে একসঙ্গে নাচতে দেখা গিয়েছে মামা-ভাগ্নেকে।
তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের লড়াইয়ে এক জনকে জিততে বলে অন্যজনকে হারতে হবে। এই স্বাভাবিক ঘটনা বিলক্ষণ জানেন সিপিএম প্রার্থী রবার্ট টুডু। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির দাওয়ায় বসে রবার্ট বললেন, “ভাগনে আমার বন্ধুই বটে। ছোট থেকেই ও আমার পেছন ছাড়ে না। আমি মাঠে খেলতে গেলে ও সঙ্গে থাকবে। এমন কি প্র্যাকটিসেও সঙ্গে যায়। এখনও। আমরা বেশিরভাগ দিন একসঙ্গেই খাওয়া দাওয়া করি। পরেও করব। এখন ভোটের জন্য দুজনেই ব্যস্ত।” মামার কথায়, “দুজনে আলাদা দল করি বলে কি সর্ম্পকটাও বদলে যাবে নাকি তবে এটা ঠিক দু’জনে যে নিজেদের বিরুদ্ধে লড়ব ভাবিনি।”
ভাগ্নে জোনাসের কথাও একই। বললেন, “মামা খুব ভাল ফুটবল খেলতেন। আসাম ভূটান সহ রাজ্যের অনেক বড় টুর্নামেন্টে খেলেছে। আর যেখানেই খেলা হয়েছে মামার সঙ্গে আমি গিয়েছি। রাজনীতিকে কিন্তু আমাদের এই সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে দেব না।” প্রচার চলছে কী ভাবে? মামার কথায়, “ভাগ্নের নামে কোনও খারাপ কথা বলার প্রশ্নই নেই। আমরা আদর্শের কথা বলব। সাম্যবাদ, গরিব মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলব। তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দল এবং কংগ্রেস-তৃণমূল জোট না হওয়ায় এ বার আমি জয়ী হব।” অন্য দিকে ভাগ্নের কথায়, “মামাকে নিয়ে কী বলব। মামার সবই ভাল। প্রচারে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আর্দশকে তুলে ধরছি। মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েত গোটা এলাকায় প্রচুর উন্নয়নের কাজ করেছে। শুধুমাত্র সেই জন্য বিপুল ভোটে আমার জয় হবে।”
অন্য দিকে এলাকার কংগ্রেস প্রার্থী গাব্রিয়েল হাঁসদার কথাতেও আছেন মামা-ভাগ্নে। তিনি বলেন, “সকলেই এখন মামা আর ভাগ্নের লড়াই নিয়ে আলোচনা করছে। তাই ভোট কাটাকাটি হলে জিতব তো আমিই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.