সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত ওয়াশিংটন। নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে, মার্কিন বিদেশ দফতর সন্ত্রাস নিয়ে সাম্প্রতিক রিপোর্টে শেখ হাসিনা সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। ঘটনাটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে ধারণা ভারতের। সাউথ ব্লকের মতে, আমেরিকার এই ‘ব্যতিক্রমী’ রিপোর্ট পাকিস্তানের প্রতি বার্তা।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ঘরোয়া এবং আন্তঃরাষ্ট্র সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করেছে। হাসিনা সরকারের সন্ত্রাস-বিরোধী ভূমিকার ফলেই সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের জঙ্গিরা বাংলাদেশে স্বর্গরাজ্য গড়তে পারেনি।’ বলা হয়েছে সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ প্রশাসন এবং সেনাকে সাহায্য করা হবে।
আন্তঃরাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রসঙ্গে ভারতের কথাও উল্লেখ হয়েছে রিপোর্টে। বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের বিদেশ এবং জাতীয় নীতি অনেকটাই অঞ্চলের বড় শক্তিগুলির উপর নির্ভরশীল। এই বৃহৎ শক্তিগুলির মধ্যে ভারত উল্লেখযোগ্য। গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের কবলে পড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সন্ত্রাসবাদ দমনে গোটা অঞ্চলের মধ্যে সমন্বয় গড়তে সদিচ্ছা দেখিয়েছে।’ ২০০৯-এ গঠিত সন্ত্রাসবাদ দমন আইনের বাস্তবায়ন, ২০১২-তে ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সিকিউরিটি ট্রেনিং গঠন, রাষ্ট্রপূঞ্জের সন্ত্রাস-বিরোধী কৌশলের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের জঙ্গি-বিরোধী সক্রিয়তাকে পরিচালনা করার মতো বাংলাদেশি পদক্ষেপগুলির প্রশংসা করা হয়েছে মার্কিন রিপোর্টে।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, ওই মার্কিন রিপোর্টে ‘বাস্তব পরিস্থিতিই’ প্রতিফলিত হয়েছে। হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর যে ব্যবস্থা নিয়েছেন, তার সুফল পেয়েছে ভারত। একাধিক বার সে কথা মুক্তকণ্ঠে জানিয়েছেন ভারত সরকারের কর্তারা। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির পিছনে হাসিনা সরকারের এই ভূমিকার কথাও স্বীকার করা হয়েছে শীর্ষ বৈঠকগুলিতে। জঙ্গিরা যাতে বাংলাদেশকে ভারত-বিরোধী কাজের জন্য ব্যবহার না করতে পারে, সে জন্য সচেষ্ট হাসিনা সরকার। বহু আলফা জঙ্গিকে ঢাকা থেকে ভারতে প্রত্যর্পণের ব্যাপারে সাহায্য করছে ঢাকা। ভারত-বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে।
আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত রণেন সেনের বক্তব্য, এই রিপোর্ট নিঃসন্দেহে খুশি করবে না ইসলামাবাদকে। হাসিনা শক্ত হাতে রাশ ধরায় ঢাকার মাটি থেকে ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানোর কাজ কার্যত বন্ধ।
রণেনবাবুর কথায় “তবে আমেরিকার প্রকাশ্যে বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘটনা নিঃসন্দেহে ভারতের জন্য সুখবর। এর ফলে আখেরে ভারতের হাতও শক্ত হবে।” |