ত্র্যহস্পর্শ

• মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের আইসিসিইউ।
গত শনিবার বোলপুরে ‘চাঁদের পাহাড়’য়ের লোকেশন দেখতে যাওয়ার সময় হঠাৎই বুকে ব্যথা। নিজে ডাক্তার। তাই দেরি করেননি অ্যান্টাসিড খেতে। কিন্তু রাতে বাড়ি ফেরার পরেও বুকের ব্যথা না কমায়, ভর্তি হন হাসপাতালে। “বুঝতে পারছিলাম এটা হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা,” আইসিসিইউ থেকেই ফোনে ঠান্ডা মাথায় বলছিলেন কমলেশ্বর। তার পর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে স্টেন্ট বসানো হয়েছে। এই মুহূর্তে তাঁকে নিয়ে টালিগঞ্জ তোলপাড়, ‘মেঘে ঢাকা তারা’ মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই পুরো ইন্ডাস্ট্রি তাঁকে কুর্নিশ জানাচ্ছে. কমলেশ্বরকে যে ‘নিউ কিড ইন দ্য ব্লক’ বলছেন এখন সবাই।


• সবে ডাবিং শেষ করেছেন ‘অপুর পাঁচালী’র। এখন ব্যস্ত তাঁর পরের ছবি ‘C/O স্যার’য়ের প্রচার নিয়ে। এবং এত কাজের মধ্যে এখনও তাঁর ফোনের ইনবক্স ভেসে যাচ্ছে ‘শব্দ’ দেখে স্তম্ভিত হয়ে যাওয়া দর্শকের। ন’সপ্তাহ পরেও চারিদিকে যে গমগমে ‘শব্দ’ হচ্ছে। এর মধ্যে মুম্বই থেকেও অফার আসা শুরু হয়েছে তাঁর কাছে। এক কথায় তিনি এখন ‘হট প্রপার্টি’।

• আর আছেন টয়োটা ইটিয়স নিয়ে ঘোরা এক মধ্য তিরিশের পরিচালক। তার প্রথম ছবি দেখেই নড়েচড়ে বসেছিল বাঙালি। পরের ছবি আরও বড় হিট...ল অব অ্যাভারেজে তৃতীয় ছবি একটু কম চললেও টলিউডে এমন কোনও আড্ডা নেই যেখানে তাঁকে নিয়ে আলোচনা হয় না। এখন ব্যস্ত পরের ছবি ‘জাতিস্মর’য়ের গানের রেকর্ডিং নিয়ে। অসম্ভব ‘কবীর সুমন’ ভক্ত এই পরিচালক যদিও ইতিমধ্যেই ইন্ডাস্ট্রিতে শত্রু বাড়িয়ে ফেলেছেন প্রচুর।

কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় আর সৃজিত মুখোপাধ্যায়।
এই মুহূর্তে বদলে যাওয়া টলিউডের সব চেয়ে উজ্জ্বল তিন নক্ষত্র। নতুন ধারার গল্প হোক, নতুন সিনেমার ল্যাঙ্গোয়েজ হোক, দর্শকের কৌতূহলের বিচার হোক এই তিন জনই যে আগামী কয়েক বছর বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন তা নিয়ে প্রায় নিশ্চিত টলিউড।

আমরা রিস্ক নিয়েছি সব চেয়ে বেশি
এটা অনস্বীকার্য একটা সময়ের পর ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি থেকে অনেকটাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল বাঙালি দর্শক। এমন সময়ে বেঙ্গালুরুর চাকরি ছেড়ে কলকাতায় ফিরে আসেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। পরপর দু’টি ছবি, ‘অটোগ্রাফ’ আর ‘বাইশে শ্রাবণ’ বানিয়ে চমকে দেন আপামর বাঙালিকে। “সৃজিতের সব চেয়ে বড় কনট্রিবিউশন হচ্ছে ও আবার শহুরে বাঙালিকে হলে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। ইয়াং ছেলেমেয়েরা ওর ছবির ল্যাঙ্গোয়েজের সঙ্গে আইডেন্টিফাই করল নতুন করে,” বলছিলেন তাঁর সবক’টা ছবির প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা।
ইকনমিক্সের ছাত্র সৃজিত অবশ্য মনে করেন তাঁদের তিন জনকে নিয়ে যে এখন এত ভরসা টলিউডের, তার অন্য একটি দিকও আছে। “আপনি যদি আমাদের তিন জনের ট্র্যাক রেকর্ড দেখেন, দেখবেন, আমরা কিন্তু রিস্ক নিয়েছি সব চেয়ে বেশি। সেটা কমলদার ‘মেঘে ঢাকা তারা’ হোক, বা ফোলি আর্টিস্ট নিয়ে কৌশিকদার ‘শব্দ’ হোক কী আমার ‘অটোগ্রাফ’, ‘বাইশে শ্রাবণ’ আর ‘হেমলক সোসাইটি’ হোক। এই সব ক’টা ছবি ভীষণ রিস্কি। কিন্তু সেই রিস্কটা আমরা নিতে পেরেছিলাম বলেই হয়তো ইট হ্যাজ মেড অল দ্য ডিফারেন্স,” বলছিলেন সৃজিত।
তবে তাঁদের ঘিরে এই যে এক্সপেক্টেশন, সেটা সম্বন্ধেও সচেতন সৃজিত। “দেখুন আমি গল্প বলার তাগিদে এসেছি ইন্ডাস্ট্রিতে। যখন শুনি আমাদের তিন জনের দিকে এত লোক তাকিয়ে আছেন, তখন একটা দায়িত্ববোধ তো এসেই যায়। ভয়ও করে। হ্যাঁ, এই মুহূর্তে যেহেতু আমরা প্রলিফিক, তাই আমাদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু মৈনাক, টোনিদা, অনীক দত্ত, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সবাই কিন্তু আমরা একসঙ্গে মিলে ভাল কাজ করতে চাইছি। সেটাই বোধহয় গুরুত্বপূর্ণ,” বলছেন সৃজিত।
কখনও কি এটা ভেবে দেখেছেন টলিগঞ্জে ‘পপুলারিটি’ ভোট হলে তিনি কোনও মতেই জিতবেন না? প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলেন সৃজিত। “ভোটে জিতব কি না আমি জানি না, কিন্তু আমার কিছু ঘনিষ্ট বন্ধু আছে। তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক এতটাই নিবিড় যে সেটাই আমার কাছে ম্যাটার করে। আর কিছু না,” বলেন সৃজিত।

কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়

সৃজিত মুখোপাধ্যায়
কমলদার অ্যাসেট হোমওয়ার্ক
দায়িত্ব যে বেড়ে গিয়েছে মানছেন কমলেশ্বরও। বাইপাসের ধারের হাসপাতালের বেডে শোয়া অবস্থাতেই বললেন, “এক্সপেক্টেশন বেড়ে যাচ্ছে, দায়িত্ব বেড়ে যাচ্ছে। ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে ছবি বানালাম, এত বড় একজন পরিচালক, দর্শক কী ভাবে গ্রহণ করবেন, সেটার একটা প্রেশার তো ছিলই। যখন দেখছি মানুষের ভাল লাগছে, একটা সেন্স অফ রিলিফ হচ্ছে।”
কমলেশ্বর কিন্তু ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ছেড়ে এখনও মজে আচেন বিভুতিভূষণের ‘চাঁদের পাহাড়’ নিয়ে। এই মুহূর্তে তিনিই পরিচালনা করছেন বাংলার সব চেয়ে ব্যয়বহুল ছবি, পনেরো কোটি টাকা বাজেটের ‘চাঁদের পাহাড়’।
“কমলদার সব চেয়ে বড় গুণ হল মানুষটা বড্ড ভাল, শিক্ষিত ধীরে ধীরে কথা বলেন, একটা অদ্ভুত গ্রেস আছে ভদ্রলোকের। ‘মেঘে ঢাকা তারা’ যে ভাল বলছে দর্শক, তার অনেকটাই কমলদার হার্ড ওয়ার্কের জন্য।” বলছেন ছবিতে ঋত্বিক ঘটকের চরিত্রে অভিনয় করা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। কমলেশ্বরের হার্ড ওয়ার্ক নিয়ে অবশ্য এখন চর্চা চারিদিকে। জয়েন্টের মেডিক্যাল র্যাঙ্ক ৮০ হওয়া পরিচালক, ‘মেঘে ঢাকা তারা’ বানানোর আগে ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন প্রায় দেড় বছর। “‘চাঁদের পাহাড়’ বানানোর আগেই আফ্রিকার লোকেশন ফাইনালাইজ করতেই গিয়েছিলেন তিন বার। কমলদার বিগেস্ট স্ট্রেংথ হচ্ছে ওর হোমওয়ার্ক। এত মেটিকিউলাস প্ল্যানিং, এত অ্যাটেনশন টু ডিটেল সত্যি দেখা যায় না আজকাল,” বলছেন তাঁর এক সহকারীও।

‘বাইশে শ্রাবণ’
তিন জনের ঘরানা আলাদা
এই তিন জনের ওপর যে এখন আলাদা ফোকাস টলিউডে, তা নিয়ে একমত প্রযোজক মহলও।
“আমি এই মুহূর্তে স্পেসিফাই করতে চাই না কে কী হবে। তবে এই প্রজন্মের পরিচালকদের মধ্যে যদি কেউ সত্যজিৎ, মৃণাল, আর ঋত্বিক ঘটক হতে পারে, তা হলে এই তিন পরিচালকই পারে,” সাফ জানাচ্ছেন ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতা। “এঁদের তিন জনের মধ্যে সেই পোটেনশিয়াল আছে। আজকে এঁদের ছবি রিলিজ করার আগে দর্শকমনেও একটা কৌতূহল হয়। আর সব চেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার, তিন জনের ঘরানাটা আলাদা,” বলছেন শ্রীকান্ত। শুধু তাই নয়, এঁদের উপর কতটা ভরসা করছে টলিউড, তা বোঝা যায় এঁদের ওপর কত টাকা লগ্নি করা হয়েছে তা দিয়েও। “অন্তত পঁচিশ কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে এই তিন পরিচালকের উপর এই মুহূর্তে। তাতেই বুঝতে পারবেন এঁদের ব্র্যান্ড ভ্যালুটা কোথায়,” জানাচ্ছেন শ্রীকান্ত।
ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যুর পরে যে শূন্যস্থানটা তৈরি হয়েছে সেই জায়গাটাও এঁদের মধ্যেই কেউ নেবেন, এটাও মনে করছে টলিউড। “ঋতুপর্ণ ঘোষের জায়গা যদি কেউ নিতে পারে, সেটা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। সৃজিত, কমলেশ্বরও ব্রিলিয়ান্ট। কিন্তু ঋতুদার স্টাইলের সঙ্গে সব চেয়ে বেশি মিল কৌশিকদার,” সে দিন এক পার্টিতে বলছিলেন প্রযোজক রানা সরকার।

‘মেঘে ঢাকা তারা’

‘শব্দ’
কৌশিকদার ছবির চরিত্রদের রেফারেন্স পয়েন্ট নেই
তাঁকে নিয়ে যে এ রকম মাতামাতি হচ্ছে, টলিউডের অনেকেই যে ভাবে ভরসা করছে তাঁর ভাবনার আর ছবির উপর, তা অবশ্য নিজের স্টাইলেই উড়িয়ে দিচ্ছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। “এ সব নিয়ে ভাবলে তো আমার থট-প্রসেসটা বিঘ্নিত হবে। আমি চাই আমার নিজস্ব স্টাইলে ভাল
ছবি করতে। ধোনি ভাল হেলিকপ্টার শট মারে বলে আমাকেও যে মারতে হবে, সেটা আমি বিশ্বাস করি না। আমার কভার ড্রাইভটা স্ট্রং থাকলে আমি সেটাই খেলব। ওয়েট করব ড্রাইভ মারার বল পাওয়ার,” বলেন কৌশিক।
তিনি হয়তো ড্রাইভ মারার বলের জন্য ওয়েট করছেন। কিন্তু টলিউডের অধিকাংশের ধারণা আজকের পরিচালকদের মধ্যে সব চেয়ে ‘অরিজিনাল থিঙ্কার’ তিনি। “কৌশিকদার মাস্তানি হচ্ছে ওঁর সিনেমার চরিত্রগুলি বড্ড ইউনিক। তা ‘শব্দ’-এর তারক হোক কী ‘ল্যাপটপ’-এর চরিত্রগুলি বা ‘আর একটি প্রেমের গল্প’য়ের চপল ভাদুড়ি। এগুলোর রেফারেন্স পয়েন্ট সহজে পাবেন না আপনি। এত অরিজিনাল ভাবনা হয়তো আজ কারও নেই টালিগঞ্জে,” বলছিলেন শ্রীকান্ত।
‘শব্দ’র পর যে হইচই হচ্ছে, সেটা নিয়েও আর ভাবতে চান না কৌশিক। “‘শব্দ’ থেকে যাবে যত দিন বাংলা ছবি থাকবে। কিন্তু সেটা নিয়ে আমি আর ভাবতে চাই না। এটুকুই বলতে পারি, দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছে ‘শব্দ’র পর। আর আজকে হয়তো আমাদের তিন জনকে নিয়ে কথা হচ্ছে। কালকেই কিন্তু নামগুলো চেঞ্জ হয়ে যেতে পারে। সুতরাং অত ভাবছি না। শুধু ভাল কাজ করে যেতে চাই,” বলছেন তিনি।
অনেকের ধারণা, এই তিন জনের টিম অনায়াসেই ঢুকে যেতে পারেন পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীও। সেই ক্ষমতা তাঁর আছে। কিন্তু তিন জনের এই টিমে অনিরুদ্ধের ঢোকা না ঢোকা অনেকটাই নিভজ্ঞর করবে তাঁর পরের ছবির ওপর।
কিন্তু আপাতত, দুই মুখোপাধ্যায় আর এক গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়েই স্বপ্ন দেখছে টলিউড।
আগামী কয়েক বছরে কেমন স্টান্স নেন সৃজিত, কেমন ফলো থ্রু করেন কৌশিক, কেমন স্কোয়ার কাট মারেন কমলেশ্বর এখন সেটাই দেখার।
ইন্ডাস্ট্রির মতে

জোর
খামতি
কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় ছবি বানানোর আগে বিস্তর
পড়াশোনা আর হোমওয়ার্ক
ডিটেলের প্রতি এত মনোযোগ দিতে
গিয়ে স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততা নষ্ট হওয়া
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় অরিজিনাল আইডিয়া। সব সময় নতুন
নতুন মৌলিক গল্প বলে দর্শককে চমকে দেওয়া
বছরে বেশি সংখ্যক ছবি বানানো
বাঙালি দর্শককে আবার হলমুখো করা।
তরুণ প্রজন্মের বাঙালিদের সঙ্গে কানেক্ট করা
এখনও অবধি সম্মানজনক ফিল্ম
ফেস্টিভ্যালে ছবি না নিয়ে যেতে পারা

এই সমাজে যে আপনাদের মতো মানুষদের বড় দরকার!
ডা. কুণাল সরকার
যাঁর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়
‘মেঘে ঢাকা তারা’র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এখন অনেকটা সুস্থ। আনফরচুনেটলি ওঁর প্রবলেম বৃদ্ধি পেয়েছিল ওঁর স্মোকিংয়ের কারণে। একজন ক্রিয়েটিভ মানুষের স্ট্রেস দশটা-পাঁচটা অফিস করা মানুষের থেকে সবসময়ই আলাদা। হয়তো রিলিজের আগে ছবি কেমন চলবে, দর্শক গ্রহণ করবেন কি না, এই নিয়ে বেশি স্ট্রেস করেছিলেন। একটাই কথা ওঁকে ছাড়াও বাকি সবাইকে বলব, স্মোকিংটা কখনওই স্ট্রেস রিলিভার নয় এটা মনে রাখবেন। আর কিছু দিন আগে, আমরা একজন ক্রিয়েটিভ মানুষ, ঋতুপর্ণ ঘোষকে হারিয়েছি। সেটা অবশ্য অন্য কারণে। ডাক্তার হিসেবে অন্য ক্রিয়েটিভ মানুষদের শুধু বলব, আপনারা একটু সাবধানে থাকুন। জানি, আপনাদের স্ট্রেস বেশি। কিন্তু এই সমাজে যে আপনাদের মতো মানুষদের বড় দরকার!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.