|
|
|
|
তদন্ত প্রসঙ্গেই প্রশ্ন ধৃতের আইনজীবীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
প্রায় ৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে এখনও পর্যন্ত কেন শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্কালীন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে না তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তুললেন ধৃত বাস্তুকার মৃগাঙ্কমৌলি সরকারের আইনজীবী। সোমবার শিলিগুড়ি আদালতে মৃগাঙ্কবাবুকে তোলা হলে তার পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে এ কথা জানান আইনজীবী পার্থ চৌধুরী। আদালতে তিনি জানান, পুলিশ প্রকৃত দোষীদের আড়াল করতে চাইছে। মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি তৈরির কাজে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মৃগাঙ্কবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ ঠিকাদারকে টাকা দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করে টাকা দিয়েছেন এসজেডিএ’র তত্কালীন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক। অথচ পুলিশ তদন্ত করলেও এখনও পর্যন্ত এক বারের জন্যও এসজেডিএ’র ওই প্রাক্তন আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেননি। এসজেডিএ’র প্রাক্তন ওই আধিকারিক মূল অভিযুক্ত বলে দাবি করেন পার্থবাবু। অথচ পুলিশ তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে বলে এ দিন এজলাসে অভিযোগ তোলেন তিনি।
পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “তদন্ত চলছে। পুলিশ সব দিকই খতিয়ে দেখছে।” এ দিন মৃগাঙ্কবাবুকে জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবী। তা খারিজ করে তাকে ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্তি মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সন্তোষ পাঠক।
যে সময়ে ওই প্রকল্পের টাকা ঠিকাদার সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে, সেই সময় এসজেডিএ’র মুখ্য কার্য নির্বাহী বাস্তুকার ছিলেন গোদালাকিরণ কুমার। বর্তমানে তিনি মালদহের জেলাশাসক। তিনি এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি।
মহানন্দা অ্যাকশনপ্ল্যানে নিকাশি তৈরির কাজ (এসটিপি-২ এবং এসটিপি-৩), বাগডোগরা, মালবাজার এবং ময়নাগুড়িতে তিনটি শ্মশানে বৈদ্যুতিকচুল্লি বসানোর কাজে প্রায় ৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এসজেডিএ’র দুই বাস্তুকার মৃগাঙ্কমৌলি সরকার, সপ্তর্ষি পাল এবং অভিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রধাননগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শরত্ দ্বিবেদী। মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি প্রকল্পে মৃগাঙ্কবাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। শরত্বসু রোডে পুলিশ তার একটি বিলাস বহুল ফ্ল্যাট, গাড়ির হসিদ পায়। বিশেষজ্ঞরা পুলিশকে জানিয়েছে বিলাসবহুল সামগ্রী দিয়ে সাজানো ওই ফ্ল্যাট, গ্যারেজ এবং গাড়ি মিলিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। মৃগাঙ্কবাবু যে পদে এসজেডিএতে চাকরি করেন এবং যে টাকা বেতন পান তাতে ওই বিপুল টাকা খরচ করা তার পক্ষে সম্ভব ন। ওই টাকা তিনি কোথায় পেলেন তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে।
পার্থবাবু আদালতে জানিয়েছেন ওই গাড়ি এবং ফ্ল্যাটটি ২০১০-২০১১ সালে কেনা। যে প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে তা অনেক পরে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ফ্ল্যাট আগে কেনা হলেও বিলাসবহুল সামগ্রী দিয়ে তা সাজানোর কাজ চলছে। তা ছাড়া মৃগাঙ্কবাবুর ওই ফ্ল্যাট কেনার সঙ্গে কারা যুক্ত, কারা ঘর সাজানোর কাজ করেছেন সে সব বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পুলিশের কাছে রয়েছে। সময় মতো তা আদালতে পেশ করা হবে। |
|
|
|
|
|