|
|
|
|
কংগ্রেস আক্রান্ত, নালিশ মানসের |
ভোটের আগে খুনের রাজনীতি করছে বামেরা: পার্থ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার |
পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে বিরোধী বামেরা খুন-জখমের রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ দিন শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের মান্তাদরির দক্ষিণ মিলনপল্লিতে সংঘর্ষে জখম তৃণমূল কর্মী অনন্ত সরকারকে দেখতে যান পার্থবাবু। পার্থবাবু বলেন, “খুন জখমের রাজনীতি করে ওরা ৪০ বছর ক্ষমতায় ছিল। এখন তাদের সভায় ভিড় হয় না। কিছু হতাশাগ্রস্ত, বাতিল নেতা তাই ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রাজনীতি করতে চাইছেন। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে। সমাজবিরোধীদের কাণ্ডারী করে তারা জেলায় জেলায় ঘুরছেন। ওরা হায়নার মতো। রক্তের স্বাদ চায় তাই রক্তস্নাত করার চেষ্টা করে চলেছে। ওই হিংসার রাজনীতিকে ফিরতে দেওয়া হবে না।” |
আহত তৃণমূল কর্মীকে
দেখছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। |
জেলা কংগ্রেস সভাপতি
মোহন
বসুকে দেখছেন মানস ভুঁইয়া। |
|
কিন্তু তৃণমূলের বিরুদ্ধেও সন্ত্রাসের অভিযোগ রয়েছে। তা নিয়ে পার্থবাবুর প্রতিক্রিয়া, “ওই ধরনের ঘটনা যারাই করছে নিন্দা করছি। বিজেপি হোক, তৃণমূল হোক অস্থিরতার রাজনীতি করার চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না।”
এ দিন শিলিগুড়িতে কংগ্রেসের বিধায়ক তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানস ভুইঁয়া বলেন, “রাজ্যে আমরা পরিবর্তন চেয়েছিলাম। কিন্তু যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই পরিবর্তন কি আমরা চেয়েছিলাম? পুলিশের কাজকর্ম মুখ্যমন্ত্রী দেখছেন। তিনি বলছেন সব ঠিক আছে। অথচ পঞ্চায়েত ভোট করতে নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তা চাইছেন।” তিনি জানান, ইতিমধ্যেই যে বিপুল পরিমাণ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার জয়ী হয়েছেন, তাতে এ বার রাজ্য সোনার মেডেল পাবে। মানসবাবুর অভিযোগ, “এর পরেও সব জেনেবুঝে তথ্য বিকৃতি করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিবৃতি দিচ্ছেন মন্ত্রীরা। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলব দলের নেতাদের কথা না শুনে নিরপেক্ষ লোক, প্রশাসনের লোকদের পাঠিয়ে পরিস্থিতি দেখুন।” পার্থবাবু এ দিন দাবি করেন, পঞ্চায়েত ভোটের পরেই কংগ্রেসের সাইনবোর্ড নিশ্চিহ্ন হবে।
মান্তাদরিতে বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজনৈতিক উত্তাপ রয়েছে। তৃণমূলের কর্মী জখম হয়েছেন। জখম হয়েছেন কংগ্রেসের কর্মীরা। ১৩ জুন রাজগঞ্জের মান্তাদরি এলাকায় কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রার্থী কালীশঙ্কর সেনকে হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ পেয়ে দেখতে গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু, ব্লক সভাপতি দেবব্রত নাথরা। তাঁদের উপর তৃণমূলের লোক হামলা চালায় বলে অভিযোগ। মোহনবাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার বাঁ চোখে আঘাত রয়েছে। এ দিন মোহনবাবুকে শিলিগুড়িতে চোখের চিকিত্সকের কাছে আনা হলে সেখানে তাঁকে দেখতে যান কংগ্রেসের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া।
সেখান থেকে তিনি আলিপুদুয়ারে যান। সেখানে তাদের নেতা সূর্যমোহন দেবনাথকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। মোহনবাবুর উপর হামলার ঘটনায় বুধবার জেলায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ ডাকে কংগ্রেস। সেই মতো জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকা শিলিগুড়ি পুর এলাকার সংযোজিত ওয়ার্ডগুলিতেও বন্ধ পালনের ডাক দিয়েছেন তারা। মানসবাবু জানান, তাঁর বিধানসভা এলাকাতেও কংগ্রেস কর্মীরা আক্রান্ত। তারা সহ্য করছেন। তাই বলে কেউ দুর্বল ভাবলে ভুল করবেন। তারা খুনজখমের রাজনীতির বিরুদ্ধে। মোহনবাবুর উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তরা অধিকাংশই গ্রেফতার না হওয়ায় মানসবাবু বলেন, “মোহনবাবুর উপর হামলার ঘটনার তীব্রনিন্দা করছি। মোহনবাবু যাওয়ার আগে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপারকে জানিয়েছিলেন। ওই এলাকা তার অধীনে নয় তিনি তা না জানিয়ে বিভ্রান্ত করেছেন। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের মধ্যে ওই এলাকা। শুনে ছিলাম কমিশনার নাকি ‘বাঘ’। তিনি যে বাঘ নয় বেড়াল তা স্পষ্ট। উনি শাসকদলের চাকর কি না জানতে চাই।” মানসবাবু জানিয়েছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।
|
—নিজস্ব চিত্র। |
|
|
|
|
|