ভর্তি প্রক্রিয়া আগেই পিছিয়ে ছিল। সোমবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন নেওয়া শুরু হলেও দিনভর নাকাল হলেন পড়ুয়ারা। আবেদনকারীদের অভিযোগ, এ দিন দুপুর ১২টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটটি খোলাই যায়নি। দুপুর আড়াইটের পর আবেদনপত্রের কিছু জায়গা পূরণ করা গেলেও অনেকেই সম্পূর্ণ আবেদনপত্র ‘সাবমিট’ করতে পারেননি।
যদিও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারের দাবি, “ওয়েবসাইটে কোনও সমস্যা নেই। প্রথম পাঁচ মিনিটেই ৬৪ জন আবেদন করেছেন। প্রথম দু’ঘণ্টায় প্রায় আড়াই হাজার পড়ুয়া আবেদন ‘সাবমিট’ করেছেন। পড়ুয়াদের অযথা আতঙ্কিত না হতেই বলব।” বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজ সমূহের পরিদর্শক দেবকুমার পাঁজাও জানিয়েছেন, দিনের শেষে প্রায় ৮ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। উপাচার্য আরও জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় চার জেলায় নোডাল সেন্টার-সহ ৬৬টি ভর্তির আবেদন সংক্রান্ত কেন্দ্র খুলেছে। দু’টি কেন্দ্র খোলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়েও। কেন্দ্রগুলিতে ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় সহায়তা মিলবে। |
কাফেতে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র। |
২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনলাইন ব্যবস্থা চালু করেছেন। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী গত ১০ জুন অনলাইনে আবেদন জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। অনিবার্য কারণে সোমবার থেকে তা শুরু হয়েছে। আগামী আট দিন আবেদন নেওয়া হবে। কিন্তু এ দিন প্রক্রিয়া শুরু হতেই নানা প্রান্ত থেকেই অভিযোগ আসতে শুরু করে। বোলপুরের ছাত্র আতাউল্লাহ মোল্লা, রাজু মুন্ডা, অভিভাবক অরুণ মাইতিদের অভিযোগ, “বেলা ১২টার পর প্রায় বিকাল সাড়ে ৩টে পর্যন্ত বহু বার চেষ্টা করেও সম্পূর্ণ আবেদন জমা করতে পারিনি।” স্থানীয় সাইবার কাফের মালিক পরিমল ঘোষ, বলাই চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “সম্ভবত একসঙ্গে অনেকেই ওই সাইটটি খোলার চেষ্টা করায় সাইটটির অসম্ভব ‘স্লো’ ছিল।” এসএফআইয়ের বীরভূম জেলা সম্পাদক শতদল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সমস্যার কথা আশঙ্কা করে তিন দিন আগেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। অনলাইনে ভর্তি-ব্যবস্থার আমরা বিরোধী নই। কিন্তু তা তো সুষ্ঠু ভাবে করতে হবে! আমরা এর দ্রুত সমাধান চাইছি।” একই দাবি ছাত্রপরিষদের বীরভূম জেলা সভাপতি সুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়েরও।
পড়ুয়াদের একাংশের আরও অভিযোগ, সব জায়গায় ইন্টারনেটের সুবিধা না থাকায় শহরে এসে অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে অসুবিধায় পড়ছেন প্রত্যন্ত এলাকার কৃতী ছাত্রছাত্রীরা। শুধু তাই নয়, সাইবার কাফেতে অনলাইন আবেদন করতে এসে মোটা টাকা খসিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও খুলছে না সেই ওয়েবসাইট। এসএফআইয়ের দাবি, অনলাইনে আবেদন ও ভর্তির পাশাপাশি প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়াদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলিতেও আবেদনপত্র বিলি ও জমা নেওয়ার ব্যাবস্থা রাখুক। |