ইতালি-২ (পির্লো, বালোতেলি)
মেক্সিকো-১ (হার্নান্দেজ-পেনাল্টি) |
খেলা ভাঙার মাত্র মিনিট বারো আগে বিপক্ষ বক্সে বুটের জঙ্গলের ভেতর থেকে নিজস্ব ট্রেডমার্ক শটে গোল করে ইতালিকে জিতিয়েও কোচ সিজার প্রান্দেলির বকুনি খেতে হল মিলানের ‘ব্যাড বয়’ মারিও বালোতেলি-কে! ‘সুপার মারিও’-র সতীর্থ আন্দ্রে পির্লো আবার জাতীয় দলের জার্সিতে শততম ম্যাচে গোল করে শুধু ইতালির জাতীয় নায়কের সম্মান পাচ্ছেন, তাই নয়। ফুটবল মিডিয়ায় আলোচনা ম্যাচটা মেক্সিকোর বিরুদ্ধে খেললেও চৌত্রিশ বছরের প্লে-মেকার আসলে ব্রাজিলকেই বুঝিয়েছেন, স্কোলারির দলে ঠিক কীসের অভাব! |
রবিবার রাতে কনফেড কাপে ইতালির একেবারে ডিপ ডিফেন্স থেকে পির্লোর অর্কেস্ট্রার ব্যান্ডমাস্টারের মতো আজুরিদের খেলাটাকে নিয়ন্ত্রণ করা দেখে ফুটবলমহল বিস্মিত। বলা হচ্ছে, এটা আসলে ব্রাজিলেরই ‘পেটেন্ট’। কিন্তু দুভার্গ্যবশত স্কোলারির দলে অবলুপ্ত। উল্টে ব্রাজিলের মতো স্কিলফুল দলের যে ‘ডাবল পিভট’ ডিফেন্স লাইনের সামনে সম্পূর্ণ ধ্বংসাত্মক ফুটবলটা খেলছে, সেই দু’জন মিডফিল্ডারকে ‘গার্ড ডগ’ বলাই হয়তো ভাল। বিপক্ষের আক্রমণের গন্ধ শুঁকে প্রয়োজনে ট্যাকটিক্যাল ফাউল (মানে, বিপক্ষ ফুটবলারকে শার্ট খামচে ধরে বা ধাক্কা মেরে) করেও নিজেদের ডিফেন্সকে অক্ষত রাখছে যারা। পির্লোর ২৭ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া সোয়ার্ভিং ফ্রিকিক গোল গত রাতে তাঁর নিজের কাছে ‘আইসিং অন দ্য কেক!’ ইতালির মাত্র পঞ্চম ফুটবলার হিসেবে পির্লো একশো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন রবিবার। দিনো জফ, পাওলো মালদিনি, জিয়ানলুইগি বুঁফো, ফাবিও কানাভারো-র মতো কিংবদন্তিদের পর। “ম্যাচটা মারাকানার মতো ঐতিহ্যশালী ফুটবল স্টেডিয়ামে খেলতে পেরে আরও বিশেষ সুখের অনুভূতি হচ্ছে যেন। তার ওপর আবার এমন একটা গোল করলাম!” বলেছেন পির্লো। মারাকানার বাইরে অবশ্য এ দিনও বিরাট সংখ্যক মানুষ প্রতিবাদ জানায়, তাদের থেকে চাঁদা তুলে স্টেডিয়াম বানিয়ে তাদেরই ম্যাচের টিকিট সংগঠকেরা না দেওয়ার অভিযোগে। ইতালি ম্যাচের আগে যে বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশকে কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে। |
পির্লোর অনবদ্য গোলও কিছুক্ষণের মধ্যেই পেনাল্টি থেকে শোধ করে দিয়েছিলেন মেক্সিকোর ম্যান ইউ তারকা জেভিয়ার হার্নান্দেজ ওরফে চিচারিতো। তবে বালোতেলির থেকে মেক্সিকান গোলকিপার হোসে কোরোনা প্রথম কুড়ি মিনিটের মধ্যে তিনটে অব্যর্থ সেভ না করলে ইতালি অনেক আগেই জয় পকেটে পুরে ফেলতে পারত। বালোতেলি সে কারণেই হয়তো শেষ পর্যন্ত গোল পেয়ে মহানন্দে মাঠেই জার্সি খুলে ফেলেন। যা করে তিনি কিছু দিন আগেই চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে ইতালির প্রি-ওয়ার্ল্ড কাপ ম্যাচে লাল কার্ড দেখেছেন। আতঙ্কিত কোচ প্রান্দেলি তাই কনফেড কাপের প্রথম ম্যাচ থেকে পুরো তিন পয়েন্ট পেয়েও বলেছেন, “এ রকম বোকা বোকা কাজের জন্য কার্ড দেখে নিজেকে আর দলকে বিপদে ফেলার কোনও মানে নেই। মারিওর মাসল দেখতে আমরা কেউ চাই না। তার বদলে ওর থেকে আরও গোল দেখতে পেলে ইতালির মানুষ খুশি হবে।” |