বিশ্বনাথন আনন্দ ৪৩।
সচিন তেন্ডুলকর ৪০।
লিয়েন্ডার পেজ ৪০।
ভারতীয় দাবায় আনন্দ যা। ভারতীয় ক্রিকেটে তেন্ডুলকর যা। ভারতীয় টেনিসে পেজ-ও তাই।
তবু প্রথম দু’জনের ‘চালসে’ মানে চল্লিশে পা দেওয়া নিয়ে যা হইচই হয়েছে ভারতীয় ক্রীড়ামহলে, সোমবার লিয়েন্ডারের ৪০ নিয়ে তার ছিটেফোঁটা নেই। লন্ডনের উদ্দেশ্যে নিঃশব্দে রবিবার রাতে দেশ ছেড়েছেন ভারতের চিরশ্রেষ্ঠ ডাবলস প্লেয়ার। উইম্বলডনের আগের সপ্তাহে ইস্টবোর্নে ঘাসের কোর্টে শেষ প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট খেলতে।
এবং কী আশ্চর্য! সেখানেই যেন জন্মদিনের সেরা উপহারটা পেলেন লিয়েন্ডার!
গত জানুয়ারিতে অস্ট্রেলীয় ওপেনের পর ইস্টবোর্নেই তাঁর নিয়মিত পার্টনারকে ফিরে পাচ্ছেন লিয়েন্ডার। চেক তারকা রাদেক স্টেপানেক। |
যাঁকে নিয়ে খেলেই ২৩ বছরের পেশাদার ট্যুর জীবনে ডাবলস পার্টনার সংখ্যায় ‘সেঞ্চুরি’ করা লিয়েন্ডারের গত বছর কেরিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম পূর্ণ করা। অথচ ২০১২ অস্ট্রেলীয় ওপেন চ্যাম্পিয়ন জুটি এ বছর প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে যায়। সেটাই লিয়েন্ডার-রাদেক জুড়ির শেষ ম্যাচ ছিল। তার ঠিক আগেই ব্রিসবেনে রাদেকের পিঠের চোটে লিয়েন্ডারকে কোয়ার্টার ফাইনাল ওয়াকওভার দিতে হয়েছিল। মেলবোর্নে আবিষ্কৃত হয় রাদেকের শিরদাঁড়ায় অস্ত্রোপচার করার মতো গুরুতর চোট। রাদেকের সেই অস্ত্রোপচার এবং পরবর্তী রিহ্যাবের কয়েক মাস লিয়েন্ডার অস্ট্রিয়ার য়ুরগেন মেলজারকে নিয়ে ফরাসি ওপেন-সহ পাঁচটা টুর্নামেন্ট খেলে কোথাও সাফল্যের মুখ দেখেননি। চলতি মরসুমেই পেশাদার ট্যুরে ন’টা টুর্নামেন্টে লিয়েন্ডার মাত্র ১৪ ম্যাচ খেলে জয়-হারের হিসেব ৬-৮। ইস্টবোর্নে তৃতীয় বাছাই লিয়েন্ডার-রাদেক জুটিকে স্বভাবতই পরের সপ্তাহে উইম্বলডনেও দেখা যাবে বলে এ দিন জানিয়েছেন স্বয়ং পেজ।
সিনিয়র পেজ ছেলের জন্মদিনে তাঁর সঙ্গে এ দিন সন্ধে পর্যন্ত কথা বলার সুযোগ পাননি। “যত দূর জানি ওর আজ একটা ম্যাচট্যাচও বোধহয় আছে। তার পরে আরও রাতের দিকে নিশ্চয়ই ফোনে ওকে হ্যাপি বার্থ ডে’ বলব,” সোমবার সন্ধেয় ফেনে বললেন ডাক্তার ভেস পেজ। অলিম্পিয়ান পিতাকে শপথ করেছিলেন, বিশ্বের প্রথম টেনিস প্লেয়ার হিসেবে টানা ছ’টা অলিম্পিক খেলবেন। লন্ডনে গত বছর সেই শপথ রাখার পরেও লিয়েন্ডার এ দিন একটি টিভি চ্যানেলে বলেছেন, “রিওতে ২০১৬ অলিম্পিক খেলতেও চাই। সাতটা ডাবলস গ্র্যান্ড স্ল্যাম। কেরিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম। ছ’টা মিক্সড ডাবলস গ্র্যান্ড স্ল্যাম। অলিম্পিক পদক। একান্নটা এটিপি ডাবলস খেতাব। আমার ড্রইংরুমের ট্রফি শো-কেস ভর্তি। তবু আমার মধ্যে এখনও টেনিসের খিদে আছে। কারণ আমি এখনও নিজেকে আরও উন্নত দেখতে চাই। বয়স বরাবর আমার কাছে একটা সংখ্যা মাত্র। ফিটনেসের ক্ষেত্রেও আমি যদি উন্নতির ধারা বজায় রাখতে পারি, তা হলে সাত নম্বর অলিম্পিক না খেলার কোনও কারণ দেখছি না।”
|
৪০তম জন্মদিনের প্রতিজ্ঞা |
• পার্টি করতে হলে একেবারে নিজের টিমকে নিয়ে। কোচ রিক লিচ। গত ২২ বছরের ফিটনেস ট্রেনার ডেভ হের্মান। গত ২৩ বছরের যোগ শিক্ষক-কাম-ম্যাসিওর সঞ্জয় সিংহ। ব্যক্তিগত সচিব গীতিকা-কে নিয়ে।
• কেক খাওয়ার সুযোগ হলে অবশ্যই মেয়ে আইয়ানার তৈরি চকোলেট কেক।
• মহেশ ভূপতির ব্রেনচাইল্ড আইটিপিএলে খেলার সুযোগ পেলে খেলবেন। তবে এখন পর্যন্ত খেলার আমন্ত্রণ পাননি।
• আইটিপিএ-র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্লেয়ার-অফিশিয়ালদের মধ্যে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে ভারতীয় টেনিসের উন্নতির চেষ্টা করা।
• অবসরের চিন্তাকে দূরে সরিয়ে যত বছর খেলে আনন্দ মিলবে, তত দিন খেলে যাওয়া। |
|