|
|
|
|
পাম্প দেখভালে কর্মী নেই, জলকষ্ট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
জলের পাম্প রয়েছে। তবে তা দেখভালে কর্মী না থাকায় মাঝেমধ্যে কয়েকটি এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। গরমে এই সঙ্কট দেখা দিয়েছে খড়্গপুরে।
রেলশহরের সবক’টি পাম্পের দেখভালে যাতে একজন করে কর্মী নিয়োগ করা হয়, সেই দাবি আগেই উঠেছিল। পরিস্থিতি দেখে এ বার সেই ব্যবস্থা করছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান তুষার চৌধুরী বলেন, “শহরের সবক’টি পাম্প দেখভালে কর্মী নেই। কাউন্সিলররা কাউকে দিয়ে পাম্প চালিয়ে দেন। এ ভাবে বেশিদিন চলতে পারে না। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যাও হয়। আমরা প্রতিটি পাম্পের জন্য একজন করে কর্মী নিয়োগ করছি। অস্থায়ী ভাবেই কর্মী নিয়োগ হবে।” কাল, বুধবার পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।
প্রতিটি পাম্পের দেখভালে ন্যূনতম একজন কর্মী থাকা উচিত বলে মনে করেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা অনিতবরণ মণ্ডলও। তাঁর কথায়, “বিষয়টি আমিই একবার মিটিংয়ে তুলেছিলাম। জলের পাম্পগুলোর দেখভালে কর্মী না থাকলে তো সমস্যা। সময়ে পাম্প না চললে জল সরবরাহ ব্যাহত হয়। বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েন।” পুরসভা সূত্রে খবর, গত আড়াই বছরে শহরে ৫৫টি সাব মার্সিবল পাম্প তৈরি হয়েছে। ৩৫টির দেখভালে কোনও কর্মী নেই। একটি বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলের ও একটি সাংসদ তহবিলের বরাদ্দ অর্থে তৈরি হয়েছে। বাকি ৫৩টি পুরসভা তৈরি করেছে। অর্থ বরাদ্দ করেছে সরকার। তবে ৩৫টি পাম্প চলছে কী করে? পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, “কাউন্সিলররা কাউকে দিয়ে পাম্প চালিয়ে দেন। ফলে, কখনও কখনও পাম্প চালাতে দেরিও হয়। যিনি পাম্প চালান, তিনি হয়তো সেই সময় অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। দেরিতে পাম্প চালালে দেরিতে জল আসে। সমস্যা হয়।”
পুরসভা সূত্রে খবর, দৈনিক ১৩০ টাকা মজুরির ভিত্তিতে পাম্প দেখভালের জন্য অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করার কথা ভেবেছে পুরসভা। বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। এর ফলে, একদিকে যেমন জল সরবরাহে সমস্যা এড়ানো যাবে, কর্মসংস্থানও হবে। অস্থায়ী ভাবে হলেও ৩৫ জন কাজ পাবেন। এই গ্রীষ্মেও শহরের কিছু এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তবে শহরের পাম্পগুলো চালিয়ে সেই সমস্যার দ্রুত সমাধান করা গিয়েছে।
প্রায় কুড়ি বছর আগে রেলশহরে বড় জল প্রকল্পের কাজ হয়েছিল। তারপর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বোরিং হয়েছে। গভীর নলকূপ তৈরি হয়েছে। পাম্প বসেছে। তবে বড় প্রকল্পের কাজ হয়নি। পরিস্থিতি দেখে শহরে ফের নতুন জল প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। এ জন্য প্রথম পর্যায়ে ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়। তবে প্রকল্পের কাজ সে ভাবে এগোচ্ছে না- বলেই অভিযোগ। গোড়ায় প্রায় ১৪ কোটি টাকার পাইপই কেনা হয়। খড়গপুর শহর সব দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। বহু ভাষাভাষি মানুষের বসবাস। নতুন বসতি তৈরি হচ্ছে। জনসংখ্যা বাড়ছে। ফলে জলের চাহিদাও বাড়ছে। রেলশহরের জনসংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার। এই পরিস্থিতিতে নতুন জল প্রকল্পের কাজ সময় মতো না- হলে আগামী দিনে শহরে জলের সমস্যা ভয়াবহ হবে বলেই আশঙ্কা করছেন শহরবাসী। ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান অবশ্য বলেন, “নতুন জল প্রকল্পের কাজ ঠিকঠাক ভাবেই এগোচ্ছে। সমস্যা নেই। কাজের উপর নজরও রাখা হয়েছে।” তাঁর আরও বক্তব্য, “জল অপচয় বন্ধ করতে হবে। না হলে সমস্যা এড়ানো যাবে না। পুরসভা বাড়িতে বাড়িতে যে নলবাহী পানীয় জল সরবরাহ করে সেই নলের মুখে পাইপ লাগিয়ে পাম্প মেশিনের সাহায্যে অনেকে সেই জল পাম্পের মাধ্যমে জলাধারে তোলেন। এ জন্যই সর্বত্র পর্যাপ্ত পানীয় জল পৌঁছয় না।” তাঁর দাবি, “এ বার সে ভাবে জলের সমস্যা হয়নি। মাঝে একটি পাম্প বিকল হয়ে যায়। একটি ট্রান্সফরমারে আবার যান্ত্রিক ত্রুটিও ধরা পড়ে। এরফলে, কিছু সমস্যা হয়।”
জানা গিয়েছে, ১১টি বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্যই বুধবার বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে পাম্প দেখভালের কর্মী অর্থাৎ পাম্প অপারেটর নিয়োগের বিষয়টি। পুর- কর্তৃপক্ষের আশা, আলোচনার প্রেক্ষিতে মিটিংয়েই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। |
|
|
|
|
|