দুর্ঘটনার প্রতিবাদে ২৪টি বাসে ভাঙচুর, তুলকালাম হাওড়ায়
থ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল হাওড়া। ভাঙচুর করা হল প্রায় ২৪টি বাস ও ৪টি ট্যাক্সি। আক্রান্ত হলেন এক ট্যাক্সিচালক। তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হল। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে জখম হলেন এক মহিলাযাত্রী। আতঙ্কিত যাত্রীরা বাস থেকে নেমে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। বন্ধ হয়ে যায় রাস্তার পাশের অধিকাংশ দোকান। বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচলও। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীদের দলটি ট্রাফিক পুলিশের সামনেই প্রায় ২০ মিনিট ধরে ভাঙচুর, মারধর চালালেও পুলিশের ভূমিকা ছিল নীরব দর্শকের মতো। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভাঙচুরের অপরাধে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাসের দিকে ইট ছুড়ছে উত্তেজিত জনতা।
সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বঙ্গবাসী সিনেমার কাছে মল্লিকফটক এলাকার জিটি রোডে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ৫৯ নম্বর রুটের বকুলতলা-ধমর্তলা রুটের একটি ধর্মতলামুখী বাস বঙ্গবাসী সিনেমার কাছে এক সাইকেল আরোহীকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। ওই ব্যক্তি রাস্তায় পড়ে গেলে বাসের সামনের চাকা তাঁর পায়ের উপরে উঠে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় নিমাই শতপথী (৫০) নামে ওই প্রৌঢ়কে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন এলাকার লোকজন ও কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকর্মীরা।
এই ঘটনার পরেই একদল যুবক আচমকা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে প্রথমে ৫৯ নম্বর রুটের ওই বাসটি ভাঙচুর করে। এর পরে বঙ্গবাসী থেকে সন্ধ্যাবাজার পর্যন্ত জিটি রোডের উপরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়া সবক’টি বাস ও ট্যাক্সিতে নির্বিচারে ভাঙচুর চলে। বাসে উঠে তার ছিঁড়ে, যন্ত্রাংশ লুঠপাট করে ক্ষুব্ধ জনতা। এ দিন ছিল মঙ্গলাহাটের প্রথম দিন। হাওড়া ময়দান এলাকায় লোকও ছিল প্রচুর। ফলে মুহূর্তের মধ্যে গোটা এলাকার পরিস্থিতি থমথমে হয়ে ওঠে। নামানো হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র‌্যাফ।

ভাঙচুরের পরে রাস্তায় পড়ে আছে কাচ। সোমবার।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গোটা রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ইটের ভাঙা টুকরো ও কাচ। অচল বাসগুলিকে রেকার দিয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শী মলয় চক্রবর্তী নামে এক বাসযাত্রী বলেন, “বাসে বসে ছিলাম। বিক্ষোভকারীরা বাস লক্ষ করেই ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। আতঙ্কিত যাত্রীরা কে বাস থেকে আগে নামবেন, তা নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এতে অনেকেই অল্পবিস্তর আহত হন।”
এর মধ্যে রামতলা-রাজাবাজার রুটের একটি বাসের মধ্যে ছোড়া ইট গিয়ে পড়ে এক মহিলা যাত্রীর মাথায়। তাঁর মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। বাসের অন্য যাত্রীর তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। মধুমিতা রায় নামে ওই মহিলাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। আক্রান্ত যাত্রীদের অভিযোগ, ভাঙচুরের ঘটনা চলাকালীন রাস্তায় অনেক ট্রাফিক পুলিশের কর্মী ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা তাঁদের সামনেই ভাঙচুর চালায়। তা সত্ত্বেও পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল বলে অভিযোগ।
হাওড়ার ডিসি (সদর) নিশাত পারভেজ বলেন, “পুলিশ থাকা সত্ত্বেও কেন এতগুলো বাস ভাঙচুর হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভাঙচুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪ জন গ্রেফতার হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।”

—নিজস্ব চিত্র



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.