সম্পাদকীয় ২...
সময় হয় নাই
ন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া হতাশ হইবেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাঁহার অনতিপ্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতটিকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করিয়া সুদের হার অপরিবর্তিত রাখিল। ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তে সরকারি মহল অসন্তুষ্ট হইবে, অনুমান করা চলে— দিল্লির ধারণা, অর্থনীতির স্বাস্থ্যোদ্ধারের চাবিকাঠি ব্যাঙ্কের শিথিলতর আর্থিক নীতির মধ্যেই নিহিত আছে। এই দফায় ব্যাঙ্কের আর্থিক নীতি পর্যালোচনার কিছু পূর্বেই জানা গিয়াছিল যে মূল্যস্ফীতির হার গত চার বৎসরের সর্বনিম্ন স্তরে নামিয়াছে। এপ্রিলে এই হার ছিল ৪.৯ শতাংশ, মে মাসে তাহা কমিয়া ৪.৭ শতাংশে দাঁড়াইয়াছে। খাদ্যপণ্য বাদে অন্যান্য শিল্পোৎপাদন-জাত পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার— যাহাকে ‘কোর ইনফ্লেশন’ বলা হইয়া থাকে, তাহা ২.৪ শতাংশে নামিয়াছে। অতএব, মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালাদের আবদারের জোর এই যাত্রায় কিঞ্চিৎ বেশিই ছিল— মূল্যস্ফীতিই যদি নিয়ন্ত্রণে আসিয়া যায়, তবে আর বৃদ্ধির হারের দিকে নজর ফিরাইতে সমস্যা কী? রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর তাঁহাদের হতাশ করিয়া বলিয়াছেন, তাঁহারা বৃদ্ধি-মূল্যস্ফীতির পারস্পরিক চলনের দিকে নজর রাখিয়াছেন, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কথাও তাঁহাদের বিবেচনায় আছে। মূল্যস্ফীতির হার যদি সুস্থায়ী ভাবে কমিতে থাকে, একমাত্র তখনই বৃদ্ধির দিকে নজর রাখিয়া আর্থিক নীতি নির্ধারণের কথা ভাবা যাইতে পারে।
আপাতদৃষ্টিতে ব্যাঙ্কের অবস্থান অযৌক্তিক রকম কঠোর। কিন্তু ভাঙিয়া দেখিলে, ইহাই যুক্তিগ্রাহ্য। কোর ইনফ্লেশন কমিয়াছে, পাইকারি মূল্যসূচকের নিরিখে মূল্যস্ফীতির হার কমিয়াছে ঠিকই, কিন্তু ক্রেতাপণ্য সূচকে মূল্যস্ফীতি অনেক ধীর গতিতে কমিতেছে। বস্তুত, মে মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার বাড়িয়াছে। তাহা ভিন্ন, শিল্পোৎপাদন-জাত পণ্যের খুচরা বিক্রয়ের ক্ষেত্রেও মূল্যস্ফীতির হার সন্তোষজনক স্তরের ঢের ঊর্ধ্বে। অর্থাৎ, ক্রেতার দৃষ্টিকোণ হইতে দেখিলে, বাজারে মূল্যস্ফীতির হার তেমন কমে নাই, এবং ভবিষ্যতে বাড়িবার আশঙ্কা বিলক্ষণ আছে। এই আশঙ্কাটি মূল্যস্ফীতির প্রকৃত হারকে ফের ঊর্ধ্বমুখী করিতে পারে। ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম কমিবার কথাটিকেও একই সঙ্গে মাথায় রাখা প্রয়োজন। টাকার দাম এই জুন মাসে সর্বকালের সর্বনিম্ন স্তরে আসিয়া ঠেকিয়াছে। অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক বাজারে সামান্য দোলাচলও টাকার দামকে আরও নিম্নমুখী করিতে পারে। দেশের উৎপাদনক্ষেত্রটিকে সচল রাখিতে হইলে কিছু পণ্য আমদানি না করিয়া ভারতের উপায় নাই। তাহাতে মূল্যস্ফীতি ফের মাথাচাড়া দিবে তো বটেই, বাণিজ্য খাতে ঘাটতির পরিমাণও লাগামছাড়া হইবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই কথাটির দিকে বিশেষ নজর দিয়াছে। ব্যাঙ্ক বলিয়াছে, আর্থিক বৃদ্ধির জন্য বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির উপর নির্ভর করিতে হইবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব নীতি যেমন তাহার উপর প্রভাব ফেলে, ভারত সরকারের নীতিও ফেলে। সম্প্রতি ভারতের ক্রেডিট রেটিং সামান্য বাড়িয়াছে। আন্তর্জাতিক মহলে এই দেশকে বিনিয়োগের উপযোগী হিসাবে উপস্থাপন করা নেতাদের কর্তব্য। তাঁহারা সেই কাজে মন দিন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.