অর্থনীতির হাল ফেরানোর ঝুঁকি এড়াতে স্থিতাবস্থাই বেছে নিলেন সুব্বারাও।
সোমবার ঋণনীতি ফিরে দেখতে গিয়ে সুদ কমানোর পথে হাঁটল না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যদিও সুদ কমানোর প্রবণতা ভবিষ্যতে বজায় থাকবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। স্বাভাবিক ভাবেই ঋণে সুদ কমবে না বলে হতাশ শিল্প ও ব্যাঙ্কিং মহল। হতাশ বাড়ি-গাড়িঋণ গ্রহীতারাও। তবে এই স্থিতাবস্থা কিছুটা প্রত্যাশিত ছিল শেয়ার বাজারের কাছে। তাই সুদ না-কমালেও শীর্ষ ব্যাঙ্ক সে ব্যাপারে আশা দেওয়ার প্রভাবেই এ দিন সেনসেক্স বেড়েছে ১৪৮ পয়েন্ট।
অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমও হতাশার সুরে বলেছেন, “সরকার তার মত বিভিন্ন পর্যায়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে জানিয়েছিল।
|
ডি সুব্বারাও |
তবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক যেহেতু স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেয়, তাই এই মুহূর্তে আমার বলার কিছু নেই।”
এর আগে অবশ্য তিন দফায় সুদ কমিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তবে এ যাত্রায় রেপো রেট (যে- হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে স্বল্প মেয়াদে ধার নেয়), রিভার্স রেপো রেট (যে-হারে শীর্ষ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের কাছ থেকে স্বল্প মেয়াদে ধার নেয়) এবং নগদ জমার অনুপাত বা ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও (সিআরআর) সবই অপরিবর্তিত রেখেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। অর্থাত্ রেপো রেট ৭.২৫%, সিআরআর ৪ শতাংশেই বহাল রইল। অনুকূল পরিস্থিতিতে সুদ কমানোর ‘সদিচ্ছা’ সত্ত্বেও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর সুব্বারাও জানান, আপাতত তাতে
বাদ সাধছে তিনটি কারণ:
• খাদ্যপণ্যের চড়া মূল্যবৃদ্ধি
• পড়তে থাকা টাকার দাম
• বিশ্ব বাজারের অনিশ্চয়তা
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার ঋণনীতির পর্যালোচনায় জানিয়েছে, শস্য ও শাক-সব্জির চড়া দাম সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির উপর এখনও চাপ সৃষ্টি করছে। ফলে ভবিষ্যতে তা আরও বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সুদ কমলে চহিদা বাড়ার হাত ধরে আরও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে মূল্যবৃদ্ধি। তবে রবিশস্যের ভাল উত্পাদন এবং ভাল বর্ষার হাত ধরে মূল্যবৃদ্ধি স্বস্তিজনক স্তরে নেমে আসতে পারে বলে আশা করছেন সুব্বারাও।
পাশাপাশি, টাকার দাম পড়তে থাকায় বাড়ছে আমদানির খরচ, তেল ও সোনা আমদানি যার অন্যতম। এর জেরে ফুলে-ফেঁপে ওঠা চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতি নিয়ে উদ্বিগ্ন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। প্রসঙ্গত, ডলারে টাকা এ দিনও ৩৬ পয়সা পড়েছে। ফলে দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৭.৮৭ টাকা। গত সপ্তাহেই টাকার দাম রেকর্ড পড়ায় ডলার ছুঁয়েছিল ৫৮.৯৮ টাকা।
বিশ্ব বাজারের অনিশ্চয়তার কারণে বিদেশি লগ্নিকারীরা ভারতের বাজার থেকে কিছুটা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সেই কারণেও এই সতর্ক পদক্ষেপ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। |