মেয়ের হাত ধরে টান,
বাধা দিয়ে মাথা ফাটল মায়ের
বাড়ির দরজাতেই স্কুল-ফেরত মেয়ের হাত ধরে টানাটানি করছিল দুই যুবক। কুপ্রস্তাবও দিচ্ছিল। মা বেরিয়ে এসে বাধা দিতে গেলে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেয় তারা। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে মার খান তিন প্রতিবেশীও।
সোমবার দুপুরে বর্ধমানের অন্ডালে কাজোড়া সর্ষডাঙার ওই ঘটনায় পুলিশ অবশ্য রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কাজোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীর মা মার খেয়ে বাড়ির দরজার সামনেই জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। এসিপি (পূর্ব) এস সিলভা মুরুগান বলেন, “থানায় শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে জোর তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।”
আসানসোল শিল্পাঞ্চলে প্রকাশ্য দিবালোকে স্কুলছাত্রীর উপরে হামলার ঘটনা অবশ্য এই প্রথম বার নয়।
মাসখানেক আগেই রানিগঞ্জে স্কুল থেকে ফেরার পথে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে রাস্তার ধারে ঝোপে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এই ধর্ষণের ঘটনার জেরে উত্তেজিত জনতা পুলিশের জিপ ও বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে। সেখান থেকে কিলোমিটার আটেকের মধ্যে আবার এই মেয়েদের নিগ্রহ করার ঘটনা ঘটল।
মেয়েটির বাড়ির লোকজন ও পড়শিরা পুলিশকে জানিয়েছেন, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে পাড়ারই দুই যুবক কাঞ্চন সিংহ এবং শম্ভু বাউরি নানা কটূক্তি করতে করতে তার পিছু নিয়েছিল। মেয়েটি দুই যুবকের হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রায় দৌড়ে বাড়ির দরজার কাছে চলে আসে। সেখানে পৌঁছে অভিযুক্ত দুই যুবক মেয়েটিকে ধরে টানাটানি করতে থাকে। মেয়ের চিৎকারে বেরিয়ে আসেন তার মা। তিনি ওই দুই যুবককে কিছু বলতে যেতেই তাঁর উপরে চড়াও ছেলে দু’টি। মার খেয়ে তিনি লুটিয়ে পড়েন।
মা-মেয়েকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন প্রতিবেশী দুখু রুইদাস, বুলু ধীবরেরা। ছেলে দু’টি তাঁদেরও মারধর করে বলে অভিযোগ। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে আরও লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এলে কাঞ্চন ও শম্ভু সেখান থেকে পালায়। মেয়েটির বাবা পেশায় মাছ বিক্রেতা। তিনি পরে অন্ডাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
রাত পর্যন্ত অভিযুক্তেরা ধরা না পড়লেও ইতিমধ্যে এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। রানিগঞ্জের ধর্ষণে তৃণমূলের নাম জড়িয়েছিল, এ বার জড়িয়েছে সিপিএমের নাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভু দিনমজুরি করে। কাঞ্চন কিছুই করে না। তৃণমূলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন মিত্রের অভিযোগ, দুই যুবকই সিপিএম-আশ্রিত দুষ্কৃতী। ছাত্রীর বাবা তৃণমূল সমর্থক। তাই তাঁকে ‘শিক্ষা’ দিতে এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াতে তারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।
স্থানীয় সিপিএম নেতা মলয় বসু রায় অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ওই দুই যুবকের সঙ্গে তাঁদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। ওরা কংগ্রেসের সমর্থক। সিপিএমের দামোদর অজয় জোনাল সম্পাদক তুফান মণ্ডল আবার বলেন, “ওই এলাকার বেশির ভাগ লোকজনই আমাদের দলের সমর্থক। যতটা শুনেছি, পারিবারিক বিবাদের জেরেই ওই গণ্ডগোল হয়েছে। তবে যা ঘটেছে তা খুবই খারাপ।
আমরা পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.