সকালের দিকে ইলশেগুঁড়ি, আর বেলা বাড়লেই দাবদাহ শুরু। গত কয়েকদিন ধরে, এমনই চলছে উত্তরবঙ্গে। রবিবার সকালেও বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হয়েছে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়িতে। এতে সকালের দিকে তাপমাত্রা কিছুটা কমে যায়। তবে বেলা দশটা বাজতেই শুরু হয়ে যায় চড়া রোদ। এদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শিলিগুড়িতে রোদের তাপ লক্ষ্য করা গিয়েছে। এ দিন বেলার দিকে উত্তর দিনাজপুরে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেও, দক্ষিণ দিনাজপুরে বৃষ্টি হয়নি। কোচবিহার, মালদহেও আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি হয়নি। |
গরমে ভরসা ছাতা। রাস্তায় গলা ভেজাতে রয়েছে আখের রসের পসরাও।
রবিবার জলপাইগুড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
যদিও কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, গোটা উত্তরবঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “ওড়িশা, বিহারের দিকে নিম্ন চাপ সৃষ্টি হওয়ায় দু একদিনের মধ্যেই উত্তরবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টি শুরু হবে। তাপমাত্রা কমবে।” টানা বৃষ্টি না হলেও, কয়েক দিন থেকে রবিবার উত্তরবঙ্গের সর্বত্রই তাপমাত্রা কিছুটা কম ছিল। গত সপ্তাহে উত্তরের ৬ জেলাতেই গড় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রির কাছাকাছি বা বেশি ছিল। এদিন উত্তরবঙ্গের গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রির কমই। দুই দিনাজপুরেই তাপমাত্রা বেশি ছিল বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকা তথা দার্জিলিং এবং লাগোয়া সিকিমের আবহাওয়া বেশ আরামদায়ক আছে। সমতলের দাবদাহ এড়াতে অনেকেই ছুটির দিনে দার্জিলিং, সিকিমে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন।
হঠাৎ বৃষ্টি এবং টানা গরমে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়িতে ভাইরাস বাহিত জ্বরের প্রকোপ শুরু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে পেটের রোগও। চড়া রোদে জীবন বিপর্যস্ত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। দাবদাহের জেরে প্রাথমিক স্কুল ও শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের কচিকাঁচারা কাহিল। দক্ষিণ দিনাজপুর প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক পঙ্কজ সরকার বলেন, “দুপুরের বদলে সকালে স্কুল করার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও নির্দেশ নেই।” স্কুল কর্তৃপক্ষের এই মনোভাবে ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। কয়েকটি শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকেও গরমের জন্য সকালে স্কুলের দাবি তোলা হয়েছে।
চলতি মাসেই উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢুকে পড়লেও, বঙ্গোপসাগরের ওপরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের কারণে মৌসুমী বায়ু থমকে যায়। সে কারণে চলতি মাসের শুরুতেই টানা বৃষ্টিপাত বলেও, গত সপ্তাহ থেকে প্রায় বৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে উত্তরবঙ্গ। সেই সঙ্গে শুরু হয় দাবদাহ। তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৩৯ ডিগ্রিতে। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে উত্তরবঙ্গের জনজীবন। আবহাওয়া দফতরের এক সূত্র জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে সরে যেতেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। |