দরিদ্রদের বিতরণের জন্য বরাদ্দ হওয়া চাল মিলল তৃণমূলের এক প্রার্থীর বাড়িতে। কংগ্রেসের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে বলরামপুরের নন্দুডি গ্রাম থেকে ওই চাল উদ্ধার হয়। মহকুমাশাসক (পুরুলিয়া পশ্চিম) নিমাইচাঁদ হালদার বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে নন্দুডি গ্রামে থেকে ৪০ কুইন্ট্যাল চাল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দরিদ্র মানুষজনের জন্য এককালীন সাহায্য হিসেবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পরিবার পিছু ১২ কিলোগ্রাম করে চাল দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, যা স্পেশ্যাল জিআর নামে পরিচিত। পঞ্চায়েতে থেকে এলাকার গরিবদের কুপন দেওয়া হয়। রেশন ডিলার বা পঞ্চায়েতের ঠিক করে দেওয়া জায়গা থেকে ওই কুপন দেখিয়ে গরিব মানুষের চাল পাওয়ার কথা। বলরামপুর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সুভাষ দাসের অভিযোগ, “দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ এই চালের একটা অংশ প্রকৃত প্রাপকদের হাতে পৌঁছয় না বলে আমরা আগেও অভিযোগ তুলেছি। প্রকৃত প্রাপকদের হাতে চাল দেওয়ার দাবিতে আমরা বন্ধও করেছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও নন্দুডি গ্রামে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীর বাড়িতে তৃণমূল পরিচালিত ঘাটবেড়া-কেরোয়া পঞ্চায়েত চাল মজুত করে রেখেছিল। হয় পাচারের উদ্দেশ্যে, নয়তো ভোটারদের প্রভাবিত করতে ওই চাল বিলি করা হত।”
সিপিএমের বলরামপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক গোবর্ধন মাঝি বলেন, “ওই চাল তো স্থানীয় রেশন ডিলারের দায়িত্বে থাকা কেরোয়া কৃষি সমবায় সমিতির গুদামে রাখা দরকার ছিল। তার বদলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির এক প্রার্থীর বাড়িতে কেন রাখা থাকবে? প্রশাসনের পুরো ঘটনা তদন্ত করা দরকার।” প্রশাসন অবশ্য বাজেয়াপ্ত করা চাল বলরামপুরে ফিরিয়ে এনে পরিবেশক সংস্থার গুদামে রেখেছে। কেরোয়া কৃষি সমবায় সমিতির এক কর্মকর্তা অভিজিৎ মাহাতো বলেন, “স্থানীয় পঞ্চায়েতের অনুমতি সাপেক্ষেই চাল ওই ব্যক্তির বাড়িতে ছিল বলে জানি।”
ওই প্রার্থী ও পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। তৃণমূলের বলরামপুর ব্লক সভাপতি সৃষ্টিধর মাহাতোর দাবি, “গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে গ্রামগুলি দূরে। তাই গরিব মানুষে সুবিধার জন্য পঞ্চায়েত থেকে বসতির কাছাকাছি কয়েকটি এলাকায় চাল মজুত করে রাখা হয়। পঞ্চায়েতের লিখিত অনুমতি সাপেক্ষেই নন্দুডি গ্রামে ওই ব্যক্তির বাড়িতে চাল রাখা হয়েছিল। পরে তিনি ভোটের প্রার্থী হন। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ায় আপাতত চাল বিলি বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু বিরোধীরা ঘৃণ্য রাজনৈতিক স্বার্থে মিথ্যা অভিযোগ করছে।” |