পঞ্চায়েত ভোটের মুখে সিমলাপাল ও ইঁদপুর ব্লকের দলীয় সভাপতিদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিল তৃণমূল। সেই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় ব্লকের অন্য নেতাদের হাতে। রবিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ। তিনি বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতেই দলীয় ভাবে সিমলাপালের ব্লক সভাপতি সনৎ দাসকে সরিয়ে অশোক ষন্নিগ্রহি ও ইঁদপুরের ব্লক সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তীকে সরিয়ে অসিত লায়েকের হাতে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল।”
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে জেলার ২২টি ব্লকের মধ্যে এই দু’টিতেই কেন এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে তৃণমূলের কর্মীমহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। অরূপবাবুর দাবি, “ইঁদপুরের ব্লক সভাপতি প্রদীপ এ বার জেলাপরিষদের প্রার্থী হয়েছেন। তাই ওখানে সংগঠনের দায়িত্ব অসিতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সিমলাপালেও সংগঠনের স্বার্থে দলীয় সিদ্ধন্তেই অশোককে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হল।” তবে, তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের প্রতীক বিলি করাকে কেন্দ্র করে সিমলাপাল ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ দানা বাঁধে দলেরই একাংশের মধ্যে। |
সিমলাপালের তৃণমূল নেতাদের একাংশের অভিযোগ, জেলায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগের দিন রাতে
(৯ জুন) বিষ্ণুপুরে তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব একটি বৈঠক করে সিমলাপাল গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের ১০৫টি ও পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি আসনের দলীয় প্রতীক সনৎবাবুর হাতে তুলে দেন। প্রতীকগুলি হাতে পাওয়ার পরে সনৎবাবু ঘা ঢাকা দেন বলে স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ। তাঁরা জানান, প্রতীক নিয়েই নিজের মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন সনৎবাবু। তৃণমূল কর্মীরা সনৎবাবুর খোঁজে একাধিকবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা না পেয়ে ফিরে আসেন। পরে তাঁরা জানতে পারেন, সনৎবাবু নিজেই প্রতীকগুলি নিয়ে ১০ জুন সরাসরি বিডিও অফিসে গিয়ে তা জমা দেন।
দলের একাংশের অভিযোগ, সনৎবাবু শুধু নিজের অনুগামী নেতা-কর্মীদের নামে দলীয় প্রতীক জমা দিয়েছেন। মনোনয়ন জমা করা দলের অন্য কর্মীদের বঞ্চনা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব রাজ্য নেতাদের কাছে অভিযোগও জানান। তবে নেতৃত্বের কাছে সনৎবাবু এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ দিন তিনি দাবি করেন, “দল আমাকে সরিয়ে দিয়েছে বলে জানি না। দলের প্রতীক নিয়ে আমি কোথাও পালিয়ে যাইনি। উল্টে সিমলাপালের একশ্রেণির তৃণমূল কর্মীরা যতগুলি টিকিট চেয়েছিল ততগুলি টিকিট তাঁদের দেওয়া হয়নি বলে তাঁরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।” ইঁদপুরের ব্লক সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তীও দাবি করেন, “আমি জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছি ঠিকই, সে জন্য ব্লকের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দল অন্য কাউকে দিয়েছে বলে জানি না।” |