কেটে গিয়েছে তিন বছর, কলেজ পায়নি বেলডাঙা
শিল্যানাস হয়েছিল বছর তিনেক আগে। এলাকায় সরকারি কলেজ হবে জেনে আশায় বুক বেধেছিলেন বেলডাঙার ভাবতার মানুষ। দিনমজুর থেকে শুরু করে আটপৌরে গৃহবধূ সকলেই কলেজ তৈরিতে জমি ও অর্থ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। এক বছরের মধ্যে স্থানীয়দের দানে একলপ্তে ১৯ বিঘা জমিও মেলে। ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি তৎকালীন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরী ওই কলেজের শিলান্যাস করেন। তারপর কেটে গিয়েছে তিন বছর। জমিতে কলেজ নির্মাণের চিহ্নমাত্র নেই। সরকারি শীতলতায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। প্রশ্ন উঠছে, বাম আমলে শিলান্যাস হয়েছিল বলেই কী বর্তমান শাসকদল কলেজ নির্মানের ব্যাপারে এগোচ্ছে না!
ভাঙা ফলক।—নিজস্ব চিত্র।
সংখ্যালঘু অধ্যূষিত ওই এলাকার আশপাশে কোনও কলেজ নেই। অন্তত কুড়ি কিলোমিটার দূরে রয়েছে বেলডাঙা ও বহরমপুর কলেজ। ফলে এলাকার মানুষ নতুন কলেজ তৈরির ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন। জেলা শাসকের নির্দেশে বেলডাঙা-১ ব্লকের বিডিও এলাকার মানুষের কাছে জমির জন্য আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনে সাড়াও মেলে। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে দুঃস্থ কৃষক থেকে সম্পন্ন ব্যবসায়ীর সম্মিলিত দানে মিলে ১৯ বিঘা জমি। স্থানীয় বাসিন্দা শিরিন বেগম গয়না বিক্রি করে ১০ লক্ষ টাকা দান করেন। শেখ মহম্মদ ইসমাইল, হাফিজুর রহমান মোল্লা, নাসিরউদ্দিন মোল্লারা নিজের জমিটুকুও দান করেন কলেজ তৈরিতে। স্থানীয় এক স্কুলের কেয়ারটেকার নাজমীরা বেওয়া সাংসারিক টানাটানি সত্ত্বেও এক মাসের বেতন দেন। কিন্তু কলেজ তৈরিতে সরকারি উদাসীনতায় বিরক্ত তাঁরা। কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, তিন ফসলি উর্বর জমি তিন বছর পড়ে আছে। রাস্তা-সংলগ্ন জমির দাম আকাশছোঁয়া। সেই জমি কলেজকে দেওয়া সত্ত্বেও কাজের কাজ কিছুই হল না।
কলেজ গড়তে তৈরি প্রস্তাবিত কমিটির সম্পাদক আনোয়ারুল হক বলেন, “দরিদ্র মানুষের দানের জমি, ভবন নির্মাণের জন্য অর্থ সবই আছে। কিন্তু কী কারণে কলেজ হল না তা বোধগম্য নয়।”
প্রস্তাবিত কলেজের জমিতে গিয়ে দেখা গেল, ভবনের শিলান্যাসের ফলক ভাঙা। কে ভাঙল এই ফলক? কলেজ কমিটির সদস্য মুক্তদির হুসেন বলেন, “সমাজবিরোধীরাই ভেঙেছে মনে হয়।” যদিও এলাকায় কান পাতলে অন্য কথাও শোনা যায়। কমিটির অন্য এক সদস্য বলেন, “জমি পড়ে রয়েছে। তবুও কলেজ তৈরির কাজ বিশ বাঁও জলে। এলাকাবাসীরা হয়ত কোনও আশার আলো না দেখেই ভেঙেছে ফলক।”
ঠিক কী কারণে কলেজ আটকে? বেলডাঙার বিধায়ক কংগ্রেসের সফিুজ্জামান বলেন, “আমি বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। উনি জানান, ওই সংক্রান্ত ফাইল মুখ্যমন্ত্রীর নিজে দেখছেন। সম্মতি মিললেই কাজ হবে।” তিনি আরও বলেন, “প্রস্তাবিত ভবনের জন্য পূর্ত দফতরের বাস্তুকাররা ওই জমি দেখে গেছেন। টেন্ডারও চলছে। কিন্তু কিছুই বাস্তবায়িত হচ্ছে না।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহম্মদ আলি বলেন, “মন্ত্রীসভার অনুমোদন ছাড়াই নির্বাচনী চমক দিতে ওই কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল বাম সরকার। তাই কাজ এগোয়নি।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের মন্তব্য, “যদি সমস্যা থেকেও থাকে, তাহলে দু’বছরেও কেন তার সমাধান হল না?” রাজনৈতিক চাপানউতোরে মধ্যে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না ভাবতার মানুষ।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.