প্রচারে শুধু মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের নির্দেশ তৃণমূলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
তিনি দলনেত্রী। তাই ফ্লেক্স বা কাটআউটে শুধু থাকবে তাঁরই ছবি। এ বার পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের মুখ হিসাবে শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাসকদল তৃণমূল। প্রচারে কোনও প্রার্থীই নিজের ছবি ব্যবহার করতে পারবেন না। এমনকী অন্য কোনও নেতার ছবিও ব্যবহার করা যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছাড়া থাকবে শুধু দলীয় প্রতীকঘাসের উপর জোড়াফুল। তার সঙ্গে থাকবে উন্নয়নের খতিয়ান। রাজ্য থেকে তৈরি করা যে সমস্ত ফ্লেক্স জেলায় এসেছে তা-ও তৈরি করা হয়েছে এই পদ্ধতিতেই। |
|
উড়ছে শুধু মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া পতাকা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
ব্লকে ব্লকে বৈঠক করে প্রার্থী ও ব্লক নেতৃত্বকে এই নির্দেশ কঠোর ভাবে পালন করার কথা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও কেউ নিজের বা নিজের পছন্দের নেতার ছবি ব্যবহার করলে দলীয় বিধিভঙ্গের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দলীয় নেতৃত্ব জানিয়েছেন। রবিবার কেশপুরে দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানে তৃণমূল নেতা আশিস চক্রবর্তী, ইমদাদুল ইসলামেরাও সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের কথায়, “প্রার্থীদের ছবির দরকার নেই। দলনেত্রীকে দেখে মানুষ ভোট দিয়েছিলেন। তাই দীর্ঘ ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে সরানো গিয়েছে। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই উন্নয়নের জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাহাড় থেকে জঙ্গলসর্বত্রই এখন শান্ত। এটাই মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে।” দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ অবশ্য বলেন, “এমন কোনও নির্দেশিকা আসেনি। তবে যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী সকলের নয়নের মণি, তাই তাঁর ছবি, দলীয় প্রতীক ও উন্নয়নের তালিকা দিয়েই আমরা ভোট-প্রচারে জোর দিচ্ছি।”
কেন এই সিদ্ধান্ত?
তৃণমূলের অন্দরের খবর, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যাতে প্রকাশ্যে না আসে, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। প্রচারে এই নিষেধাজ্ঞা না থাকলে যাঁরা শুভেন্দু অধিকারী গোষ্ঠী তাঁরা শুভেন্দু অধিকারীর ছবি কাটআউটে বা ফ্লেক্সে ব্যবহার করতে চাইবেন। আবার অন্য দিকে অনেকেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের ছবি ব্যবহার করতে চাইবেন। এই ছবিই তখন মেরুকরণ করে দেবে কোন এলাকায় কোন গোষ্ঠীর প্রার্থী রয়েছে বা কোন এলাকায় কোন গোষ্ঠীর প্রাধান্য বেশি। এক্ষেত্রে জটিলতাও তৈরি হতে পারে। মুকুল রায় অনুগামী প্রার্থী হলেও শুভেন্দুর কাটআউটে ভরে উঠতে পারে এলাকা! দলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে আবার একই এলাকায় দুই পক্ষ দুই গোষ্ঠীর নেতার কাটআউট বানিয়ে বা ফ্লেক্সে ছবি ছাপিয়ে প্রচার করতে পারেন। জনমানসে যার বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে ভোটারেরা বিভ্রান্তও হতে পারেন।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ তৃণমূল ভোটের বাজারে আর সেই ঝুঁকি নিতে চায় না। |
|