বিতর্কে হাওড়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার
মহিলাদের পোশাক বদলের ছবি তুলে ধৃত
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভিতরে মহিলাদের অজান্তেই তাঁদের পোশাক পরিবর্তনের ছবি তুলে রাখা হত মোবাইলে। সেই ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হত ইন্টারনেটেও। শেষ পর্যন্ত রবিবার সকালে এই কুকীর্তি ফাঁস হয়ে গেল। গোপনে মোবাইলে মহিলাদের এমন ছবি তোলার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল হাওড়া শিবপুর থানার ফজিরবাজারের ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারের কর্মী গৌরাঙ্গ দাসকে। এ দিকে, ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরে ওই সেন্টারে ভাঙচুর চালান স্থানীয় বাসিন্দারা। মারধর করা হয় অভিযুক্তকেও। ভাঙচুরের অভিযোগে সুভাষ দাস নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে শিবপুর থানা এলাকারই আশুতোষ বোস লেনের এক যুবক তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েছিলেন। শিরদাঁড়ার এক্সরে করাতে ওই যুবকের স্ত্রী পরীক্ষা-কেন্দ্রের ভিতরে ঢোকেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি বাইরে বেরিয়ে আসেন একটা মোবাইল হাতে নিয়ে। অভিযোগে ওই যুবক জানান, তাঁর স্ত্রী পরীক্ষা-কেন্দ্রের ‘চেঞ্জ রুমে’ পোশাক পরিবর্তন করতে গিয়ে লক্ষ করেন ঘরের দেওয়ালে একটি মোবাইল ঝোলানো রয়েছে। ফোনের ক্যামেরা তাঁর দিকেই তাক করা রয়েছে। সন্দেহ হওয়ায় ফোনটা হাতে নিয়ে তাঁর স্ত্রী দেখেন ক্যামেরাটি ভিডিও মোডে দিয়ে অন করা রয়েছে। এবং ওই ঘরের সব কিছুর ভিডিও ছবি উঠছে। সেখানে তাঁর ছবিও রয়েছে। এর পরেই ফোনটি নিয়ে বাইরে এসে স্বামীর হাতে দেন তিনি। ওই যুবকের দাবি, মোবাইলটির ভিডিও গ্যালারিতে গিয়ে তিনি তাজ্জব হয়ে যান। ভিডিও গ্যালারি ঘেঁটে তিনি দেখেন, শুধু তাঁর স্ত্রীরই নয়, বহু মহিলার পোশাক পরিবর্তনের অসংখ্য ভিডিও ছবি রয়েছে তাতে।
পুলিশ জানায়, এর পরেই মোবাইলটি কার, তা খোঁজ করেন ওই যুবক। জানা যায় মোবাইলটি ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারেরই এক কর্মী গৌরাঙ্গ দাসের। তাঁকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই গৌরাঙ্গ পালাতে চেষ্টা করে। তাকে ধরে ফেলেন ওই যুবক। ঘটনাটি ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আশপাশের বাসিন্দাদেরও জানান তিনি।
ঘটনাটি জানাজানি হতেই এলাকার বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। অভিযুক্তকে মারধর শুরু করেন তাঁরা। ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ার-টেবিলও ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পরে পুলিশ এসে গৌরাঙ্গকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, জেরায় গৌরাঙ্গ স্বীকার করেছে, বেশ কয়েক মাস ধরেই এই কাণ্ড ঘটাচ্ছিল সে। কোনও মহিলা ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরীক্ষা-কেন্দ্রের চেঞ্জ রুমে ঢোকার আগে সে মোবাইল অন করে ভিডিও মোডে রেখে দেওয়ালে ঝুলিয়ে দিয়ে বাইরে চলে আসত। পুলিশের দাবি, জেরায় জানা গিয়েছে, এই সব ছবি ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটেও দেওয়া হত। গৌরাঙ্গর মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার পিছনে কোনও চক্র কাজ করছে।
শুধু শিবপুরের ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই নয়, এ রকম বেশ কিছু ডায়াগনাস্টিক সেন্টারে এমন হয় বলে মনে করছে পুলিশ। এ দিকে, এই ঘটনার পরে ফজিরবাজারের ওই সেন্টারের মালিক ও অন্য কর্মীরা সেন্টারের শাটার বন্ধ করে চলে গিয়েছেন। তাঁদের খুঁজছে পুলিশ। হাওড়া কমিশনারেটের এক পদস্থ কর্তা জানান, এলাকার অন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলি সম্পর্কেও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেটের যে সাইটে গৌরাঙ্গ ছবি দিত, সেই সাইট সম্পর্কেও তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে। এর সঙ্গে কোনও আন্তর্জাতিক সাইবার ক্রাইম চক্র জড়িত কি না, সেই বিষয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.