ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্ত
জেলে বিচারাধীন বন্দির মৃত্যু, ক্ষোভ ছড়াল কাছাড়ে
পুলিশের মারধরে শিলচর জেলে এক বিচারাধীন বন্দির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। মৃতের পরিজনদের অভিযোগ, কাছাড় জেলার লক্ষ্মীপুর মহকুমার বাপন রায়কে (২৮) প্রথমে থানায় এবং তারপর জেলে বেধড়ক মারধর করা হয়।
বন্দিমৃত্যুর ওই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরই শুক্রবার জেল পরিদর্শনে যান শিলচর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট রমেন বরুয়া। জেলের সুপার, ওয়ার্ডেন এবং চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। জেলাশাসক গোকুলমোহন হাজারিকাও এ নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক জি এস পানেসরকে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত-রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
আজ বরাক মানবাধিকার রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নেহারুল আহমেদ মজুমদার জানিয়েছেন, তাঁরা এ নিয়ে মানবাধিকার কমিশনের কাছে যাবেন। বিচারাধীন বন্দির মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দারা। উপযুক্ত তদন্তের দাবি নিয়ে তাঁরা আন্দোলনের পথে এগচ্ছেন। আজ একটি জনসভাও করা হয়। ‘সংগ্রাম সমিতি’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলা হয়েছে।
স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে মঙ্গলবার বাপনকে গ্রেফতার করা হয়। ওইদিন লক্ষ্মীপুর থানার লক-আপে তাঁকে রাখা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে পরদিন ধৃতকে শিলচর জেলে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর বাবা বাদল রায় জেলে গিয়ে বাপনের সঙ্গে দেখা করেন। বাদলবাবু জানান, ওই সন্ধ্যায় জেল থেকে তাঁদের জানানো হয়, আচমকা অসুস্থ হওয়ায় বাপনকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছিল। মাঝরাস্তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
বাদলবাবুর অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে পুলিশ বেধড়ক মারধর করেছে। জেলে দেখা করার সময় বাপন তাঁকে জানিয়েছিলেন, জেলরক্ষীরা তাঁর কাছে টাকা চাইছে। কিন্তু তিনি তাতে আপত্তি জানান। বাদলবাবুর আশঙ্কা, সে কারণেই কারারক্ষীরা তাঁকে মারধর করে।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেল সুপার তরুণ তালুকদার। তাঁর দাবি, বাদলবাবু দেখা করে বেরনোর কিছুক্ষণ পরই বাপন আচমকা ছটফট করতে থাকে। জেলের চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করেন। দ্রুত ওই বিচারাধীন বন্দিকে হাসপাতালে পাঠাতে বলেন তিনি। তরুণবাবুর বক্তব্য, ওই জেলে শ’চারেক বন্দি রয়েছে। বাপনকে ঘটনার আগের দিনই ওই জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে মারপিটের কোনও সুযোগই কারও ছিল না।
জেলের চিকিৎসক অঞ্জন দে বলেন, “তাঁর রক্তচাপ হঠাৎই অনেক কমে গিয়েছে। দ্রুত মেডিক্যালে পাঠানোর পরামর্শ দিই। কী করে তাঁর মৃত্যু হল তা ময়না তদন্তের রিপোর্টেই বোঝা যাবে।” ওই চিকিৎসকের প্রাথমিক অনুমান, হৃদরোগ বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জন্য ওই যুবকের মৃত্যু ঘটতে পারে।
ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার বিচার চেয়ে মানবাধিকার কমিশনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাদলবাবু। পুলিশের বিরুদ্ধেও খুনের মামলা করতে চান তিনি। পুত্রবধূ এবং তাঁর অভিভাবকদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলছেন। বাদলবাবু বলেন, “আমার ২৮ বছর বয়সী ছেলে এ ভাবে আচমকা মারা যেতে পারে না। আট মাস আগে ছেলের বিয়ে দিয়েছিলাম। বৌমা একদিন রেগেমেগে বাপের বাড়ি চলে গেল। পরে, বাপনের বিরুদ্ধে বধূ-নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করে। ওঁরাই পুলিশকে টাকা দিয়ে বাপনকে গ্রেফতার করিয়ে পিটিয়ে খুন করার ছক তৈরি করেছিল। ছেলের হাত-পা-মাথায় প্রচুর কালশিটে দাগ দেখতে পেয়েছিলাম।” বাদলবাবুর দাবি, ও গুলো সবই বন্দুকের বাট এবং লাঠির আঘাতের দাগ। পুলিশ অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.