শুধু ফুটবল নয়, এলাকার অপরাধ রুখতে এ বার তরুণদেরও কাজে লাগাচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের শীর্ষকর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ আরও নিবিড় করতে হবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের সবক’টি ডিভিশনেই এই মর্মে ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনাচক্রে, গত কয়েক বছরে প্রতিটি থানা এলাকার যুবকদের পুজোর সময়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজে লাগানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে থেকে কয়েক জনকে যোগ্যতামানের নিরিখে ‘গ্রিন পুলিশ’ বা হোমগার্ডের চাকরিতেও নিয়োগ করা হচ্ছে বলে পুলিশকর্তারা জানান।
|
অপরাধ মোকাবিলায় তরুণদের কাজে লাগাতে নয়া উদ্যোগ পুলিশের।—নিজস্ব চিত্র। |
অপরাধ মোকাবিলায় কী ভাবে বেছে নেওয়া হবে তরুণদের? লালবাজারের এক শীর্ষকর্তা জানান, পাড়ার ছেলেদের নিয়ে কলকাতা পুলিশ ফুটবল প্রতিযোগিতা করে। আপাতত, ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদেরই এ কাজের জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে। রাতে রাস্তায় গাড়ি তল্লাশি করা-সহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা সম্পর্কে মূলত তাঁদের অবগত করানো হবে। এ ছাড়া, এলাকায় কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশের পাশাপাশি তাঁদের কাজে লাগানো হতে পারে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে এলাকায় সন্দেহজনক কিছু দেখলে তা পুলিশকে জানানোর কথাও বলা হয়েছে ওই তরুণদের।
শনিবার রাতে এই নতুন পদক্ষেপেরই একটি ছবি দেখা গেল বৌবাজার থানা এলাকার গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ মোড়ে। স্থানীয় যুবকদের মধ্যে থেকে বাছাই করা ২১ জনের একটি দলকে পুলিশের কাজকর্ম বোঝাতে হাজির ছিলেন ডিসি (সেন্ট্রাল) দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ, বৌবাজার থানার ওসি মনোজ দাস-সহ পদস্থ পুলিশ অফিসারেরা। শুধু অপরাধ নিয়ে সচেতন করাই নয়, গাড়ি থামিয়ে কী ভাবে তল্লাশি চলে তা-ও কার্যত হাতেকলমে ওই যুবকদের দেখান বৌবাজার থানার অফিসারেরা। পরে ডিসি (সেন্ট্রাল) বলেন, “ফুটবল খেলোয়াড়দের মধ্যে থেকে যোগ্যতা অনুসারে যুবকদের বাছাই করা হয়েছে। তাঁদেরকেই এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর ফলে পুলিশের অন্যান্য কাজেও তাঁদের লাগানো যাবে।” তিনি আরও জানান, ভাল কাজের নিরিখে এই যুবকদের পরবর্তী কালে গ্রিন পুলিশের চাকরি দেওয়া হতে পারে। কেমন লাগছে এই অভিজ্ঞতা? পুলিশের সঙ্গে এমন কাজে যুক্ত হতে পেরে খুশি ওই যুবকেরাও। তাঁদেরই এক জন রাহুল শর্মার কথায়, “পুলিশ অফিসারেরা বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলি মেনে চলব।” আর এক যুবক সুমিত মিশ্র বলেন, “ভবিষ্যতে পুলিশ হওয়ার ইচ্ছে আছে। তার আগেই এমন একটা সুযোগ পেয়ে যাব কখনও ভাবিনি। খুব ভাল লাগছে।”
|