বাজারের নজর আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দিকে
তিন দিন ধরে সুনামি চলার পর বাজারে স্বস্তি ফিরেছে শুক্রবার।
আগের তিন দিনে সেনসেক্স খুইয়েছিল ৬১৪ পয়েন্ট। শুক্রবার এক ধাক্কায় মুম্বই সূচক ওঠে ৩৫১ অঙ্ক। ১৮ হাজারের ঘরে পিছলে যাওয়া সূচক আবার ফিরে আসে ১৯ হাজারে। এপ্রিলে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হার নেমে আসা যদি পতনের অন্যতম কারণ হয়, তবে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি হ্রাসকে শুক্রবারের উত্থানের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
তবে মার্চে শিল্প বৃদ্ধির হার যেখানে ছিল ৩.৪%, সেখানে এপ্রিলে তা নেমে আসে মাত্র ২ শতাংশে। এই তথ্য জল ঢেলে দেয় জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির আশায়। শিল্পপণ্যের চাহিদা কমাই এর মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গাড়ি বিক্রিও কমেই চলেছে। বিশ্ব বাজারের পতনও মদত জুগিয়েছে সূচকের অধঃপতনে।
এমনই এক সঙ্কটজনক অবস্থায় আবার দেখা দিল আশার আলো। সুদ কমার সম্ভাবনা ফের উজ্জ্বল হয়ে ওঠায় তা স্টেরয়েডের কাজ করে সূচকের উপর। শিল্প বৃদ্ধির হার কমা এবং পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধির গতি নিম্নমুখী হওয়ায় বাজার ধরেই নিয়েছে, সুদ কমুক না কমুক সোমবার নগদ জমার অনুপাত বা সিআরআর কমছেই। সুদ কমার আশাও থাকছে। সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি মাত্র ৪.৭ শতাংশে নেমে আসায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের কাছ থেকে সোমবার প্রাপ্তির আশা জোরালো হয়। ফলে শুক্রবার ৯০ হাজার কোটি টাকার লোকসান ফেরত আসে লগ্নিকারীদের খাতায়।
সোমবার দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের আশার সঙ্গে যদি সুব্বারাওয়ের সিদ্ধান্ত মেলে, তবে সম্ভবত বাজারে ঊর্ধ্বচাপ কয়েক দিন থাকবে। আর যদি উল্টোটা হয়? তবে সেনসেক্সকে হয়তো বাসা বাঁধতে হবে ১৮ হাজারেই।
মানুষের অবশ্য জোরালো বিশ্বাস, সুদ কমার পক্ষে এ বার যথেষ্ট কারণ আছে। অর্থাৎ সুদ তথা সিআরআর কমার সম্ভাবনা বেশ প্রবল। অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার। সুদ কমলে অথবা টাকার জোগান বাড়লে বাজার হয়তো সাময়িক বাড়বে।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন না-হওয়া পর্যন্ত বড় লগ্নিকারীরা হয়তো জাল ফেলবেন না। সুদ যতই কমুক এবং শিল্পে যতই বৃদ্ধি আসুক, বাজার তখনই উঠবে, যখন বিদেশি লগ্নিকারীদের বড় আকারে ক্রেতার ভূমিকায় দেখা দেবে। এর জন্য দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ অর্থনৈতিক পরিবেশের প্রয়োজন। প্রয়োজন শক্তিশালী সরকার, স্পষ্ট আর্থিক পরিকল্পনা এবং একনাগাড়ে আর্থিক সংস্কারের। এ সব যে রাতারাতি ঘটবে না, তা বলার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ সূচক ২২ হাজারে পৌঁছে যাবে, এই দিবাস্বপ্ন এখনই না-দেখা ভাল।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যদি আজ আশা মতো সিদ্ধান্ত নেয়, তবে সরকার ঋণের উপর সুদ কমানোর জন্য বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করবে। ঋণে সুদ কমলে সুদ কমবে জমাতেও। ফলে একটু তেজী হতে পারে বন্ডের বাজার। টাকার জোগান বাড়লে বাজারে পণ্যের চাহিদা বাড়বে। চাহিদা বাড়লে উৎপাদন বাড়বে। পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, টাকার জোগান বাড়লে আবার মূল্যবৃদ্ধির হার বেড়ে উঠতে পারে। সরকারের হিসেব মতো সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি কমলেও খুচরো বাজারে তার তেমন প্রতিফলন নেই। এই অবস্থায় জমার উপর সুদ কমলে তা বড় চাপ সৃষ্টি করবে সুদনির্ভর অবসরপ্রাপ্ত মানুষের উপর। সমগ্র দেশের উন্নয়নের স্বার্থে অবশ্য ঋণের উপর সুদ কমা অত্যন্ত জরুরি।
ঊর্ধ্বমুখী ডলার নিয়েও অর্থনীতির ব্যথা এখন বেশ প্রবল। হঠাৎ ডলারের এতটা দাম বাড়ায় আমদানি-নির্ভর শিল্পের এখন নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা। ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যও একনাগাড়ে বিদেশি লগ্নি আসা প্রয়োজন। প্রয়োজন অপ্রয়োজনীয় জিনিসের আমদানি নিয়ন্ত্রণ। সোনা আমদানি নিয়ে এরই মধ্যে সরকার বিধিনিষেধ জারি করেছে। সরকারকে বহাল রাখতে হবে মূল্যমান নিয়ন্ত্রণের কাজও। শুধু অর্থের জোগান বাড়িয়ে-কমিয়ে নয়, দাম যাতে লাগামছাড়া না-হয়, তার জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির। এর জন্য দরকার আরও লগ্নি। সুদ কমলে তবেই লগ্নি বাড়বে। তাই সবার নজর এখন সুব্বারাওয়ের দিকে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.