এক তৃণমূল কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক কাজিয়া শুরু হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, বর্ধমানের নলা গ্রামে তাদের ওই কর্মীকে খুন করেছে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করলেও ঘটনাটি খুন না আত্মহত্যা, সে নিয়ে পুলিশ ধন্দে।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম বাবলু মোল্লা (৪৫)। নলা গ্রামের মুসলিমপাড়ার বাসিন্দা বাবুলকে রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ আমগাছে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। গ্রামের বাসিন্দারা খেত থেকে ফেরার পথে তাঁকে ওই ভাবে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে।
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “বাবলু মোল্লার দেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না মেলা পর্যন্ত ঘটনাটি খুন না আত্মহত্যার, তা বলা সম্ভব নয়। তবে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে সন্ন্যাসী মাঝি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ন্যাসীবাবু এলাকায় সিপিএম কর্মী হিসেবে পরিচিত। পুলিশের একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, এই তৃণমূল কর্মী আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে। |
এই মিছিল থেকেই গোলমাল শুরু, অভিযোগ তৃণমূলের।—নিজস্ব চিত্র। |
নলা গ্রামের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের নেতা নজরুল মণ্ডল বলেন, “বাবলু আমাদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আদিবাসী পাড়ায় তিনি আমাদের সংগঠনের দেখাশোনা করতেন।” তাঁর অভিযোগ, “রবিবার মোটরবাইক নিয়ে দলের মিছিল ছিল। তার জন্য নলা গ্রামে দলের পতাকা টাঙাতে আদিবাসী পাড়ায় গিয়েছিলেন বাবলু। তাঁকে সিপিএমের লোকেরা তাড়া করে। তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়াও হয়। গ্রামে মোটরবাইক মিছিল ঘুরে বেরিয়ে যায়। তার পরেই বাবলুর দেহ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। দেহটি দেখে আমাদের সন্দেহ হয়, বাবলুকে খুন করা হয়েছে।”
এ দিন দুপুরে বর্ধমান পুলিশ মর্গের সামনে হাজির হন তৃণমূলের জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি স্বপন দেবনাথ, জামালপুরের বিধায়ক উজ্বল প্রামাণিক ও বর্ধমান পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর খোকন দাস। স্বপনবাবুরও অভিযোগ, “আমাদের ওই কর্মীকে সিপিএমের লোকজনই খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে। তাঁর আত্মীয়-পরিজন ও গ্রামের মানুষের সঙ্গে দেখা করে আমি সে কথা জানতে পেরেছি।”
সিপিএমের তরফে অবশ্য এই ঘটনার সঙ্গে তাদের যোগের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। দলের বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলের দাবি, “তৃণমূলের এখন রজ্জুতেও সর্পভ্রম হচ্ছে। তাদের ওই কর্মী আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই খবর পেয়েছি। কিন্তু এলাকায় উত্তেজনা ছড়াতে তৃণমূল নেতারা এই ঘটনাকে খুন বলে দাবি করছেন।” |